রায়নগরে সিপিএমের জন জাঠায় সূর্যকান্ত মিশ্র। নিজস্ব চিত্র।
খাগড়াগড় বিস্ফোরণে এনআইএ তদন্ত শুরু করতে মোদী সরকার সাতদিন সময় নেওয়ায় তথ্য প্রমাণ লোপাটের সুযোগ হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। রবিবার কৃষক জাঠার শেষ দিনে নিজের খাসতালুক নারায়ণগড়ে এসেছিলেন স্থানীয় বিধায়ক সূর্যকান্তবাবু। দাঁতনের খাকুড়দাতেও এ দিন সভা করেন তিনি। সর্বত্রই কৃষক-মজুরদের বঞ্চনা থেকে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ, নানা প্রসঙ্গে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের সমালোচনা করেন সূর্যকান্তবাবু।
পশ্চিমবঙ্গের ৩৮ হাজার গ্রামে এই জাঠা কর্মসূচি সূচনা হয়েছিল গত ১৫ অক্টোবর। জাঠার শেষ দিনে বিভিন্ন এলাকায় নানা কর্মসূচি রেখেছিল সিপিএম। খড়্গপুর মহকুমার ডেবরা থেকে বালিচক পদযাত্রা হয়। খড়্গপুর-১ ব্লকের মাতকাতপুরেও সভার আয়োজন ছিল। কেশিয়াড়িতে হয়েছে মিছিল। নারায়ণগড়ে সভায় ছিলেন সূর্যকান্তবাবু। জাঠার সঙ্গে হেঁটে নারায়ণগড় বাজারের সভায় পৌঁছন তিনি। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের এলাকায় ফেরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “গ্রামে ফিরে যাঁরা সমস্যায় আছেন তাঁদের কথা শুনবেন। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর মতো আমরা সবজান্তা নই।”
বিজেপি ও তৃণমূল সরকারের নীতি নিয়ে সমালোচনায় মুখর হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। দেশের নতুন সরকারের ‘পক্ষাঘাত হয়েছে’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। একশো দিনের কাজে কেন মজুরি বকেয়া পরে রয়েছে, সেই প্রশ্নও তোলেন সূর্যবাবু। মুখ্যমন্ত্রীর সিঙ্গাপুর সফর ও প্রধানমন্ত্রীর জাপান-আমেরিকা সফরকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “শিল্প বন্ধ হচ্ছে। বেকার তৈরি হচ্ছে। কেন্দ্রের শিল্পও বন্ধ হচ্ছে। দুর্গাপুরে হিন্দুস্তান কেবলস্ বন্ধ হল। প্রাথমিকে হাজার হাজার পদ খালি।”
রাজ্যের বুকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ নিয়েও সরব হয়েছেন এই সিপিএম নেতা। সূর্যকান্তবাবু বলেন, “মাওবাদীদের কাঁধে ভর করে সরকারে এসেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। আর এখন বিদেশি সন্ত্রাসবাদী, যাদের বাংলাদেশি হাসিনা সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, তারা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে তৃণমূলের যোগ স্পষ্ট।” খাগড়াগড়-কাণ্ড প্রসঙ্গে তাঁর আরও বক্তব্য, “আমরা ঘটনার পরেই এনআইএ-র দাবি তুলেছিলাম। আর মোদী সরকার সাত দিন সময় নিলেন। সাত দিন কি পক্ষাঘাত হয়েছিল? এই সময়ের মধ্যে প্রমাণ লোপাটের সুযোগ পেয়ে গেল। পশ্চিমবঙ্গের সরকারের উপর বিশ্বাস রাখা যায় না।”
বিপজ্জনক এই পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে শ্রমজীবী মানুষের পাশে একমাত্র লালঝান্ডাই রয়েছে এ দিন বলে দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।