জিতেনকে পদ থেকে সরানোর দাবি দলেই

গণধর্ষণ করে খুনের হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত মেদিনীপুর পুরসভার তৃণমূলের উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসকে গ্রেফতারের দাবি সরব হয়েছে বিরোধীরা। এ বার তাঁকে উপ-পুরপ্রধানের পদ থেকে সরানোর দাবি উঠল দলের অন্দরেই। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উপ-পুরপ্রধানের কাজকর্ম নিয়ে আগে থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন দলের কয়েকজন কাউন্সিলর। তাঁদের অভিযোগ ছিল, উপ-পুরপ্রধান বেশিরভাগ দলীয় কাউন্সিলরের কথা শোনেন না। নিজের খুশিতে চলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৪ ০১:৪৬
Share:

গণধর্ষণ করে খুনের হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত মেদিনীপুর পুরসভার তৃণমূলের উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসকে গ্রেফতারের দাবি সরব হয়েছে বিরোধীরা। এ বার তাঁকে উপ-পুরপ্রধানের পদ থেকে সরানোর দাবি উঠল দলের অন্দরেই।

Advertisement

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উপ-পুরপ্রধানের কাজকর্ম নিয়ে আগে থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন দলের কয়েকজন কাউন্সিলর। তাঁদের অভিযোগ ছিল, উপ-পুরপ্রধান বেশিরভাগ দলীয় কাউন্সিলরের কথা শোনেন না। নিজের খুশিতে চলেন। বিষয়টি নিয়ে উপ-পুরপ্রধান-সহ সব কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করারও দাবি জানিয়েছিলেন দলীয় নেতৃত্বের কাছে। দলীয় নেতৃত্বের একাংশ এ নিয়ে আলোচনায় বসতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। ইতিমধ্যে জিতেনবাবুর বিরুদ্ধে জমি বিক্রি নিয়ে গোলমালের জেরে শরৎপল্লির এক বিধবা মহিলার তরুণী মেয়েকে ধর্ষণ করে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ফলে, এই পরিস্থিতিতে জিতেনবাবুর বিরুদ্ধে ওঠা পুরনো অভিযোগ নিয়ে আলোচনা আপাতত হচ্ছে না। তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “আমি প্রথম থেকেই বলছি, দল কোনও খারাপ কাজ বরদাস্ত করবে না। দলীয় তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই এ ব্যাপারে দল পদক্ষেপ করবে।” এ বিষয়ে পুরপ্রধান প্রণব বসুর সংক্ষিপ্ত জবাব, “দল বিষয়টি দেখছে।” তাঁকে উপ-পুরপ্রধান পদ থেকে সরানোর দাবি প্রসঙ্গে জিতেনবাবুর প্রতিক্রিয়া, “এই ঘটনা নিয়ে দলকে সবই জানিয়েছি। এর বেশি আর কিছু বলার নেই।”

জিতেন্দ্রনাথ দাসকে উপ-পুরপ্রধান করা নিয়ে প্রথম থেকেই দলীয় নেতৃত্বের একাংশ ও কয়েকজন কাউন্সিলরের আপত্তি ছিল। আপত্তির প্রধান কারণ হল, তিনি দলের জন্মলগ্ন থেকে ছিলেন না। গত বারই প্রথম নির্বাচনে দাঁড়িয়ে কাউন্সিলর হয়েছিলেন। কিন্তু এক দিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও অন্য দিকে পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে সখ্য এই দুইয়ের জেরে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী জিতেন্দ্রনাথ দাসকেই উপ-পুরপ্রধান করে। দলীয় সূত্রের খবর, উপ-পুরপ্রধান হওয়ার পরেই দ্রুত জিতেনবাবুর চালচলন বদলাতে থাকে। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি হিসেবেও তাঁর দাপট বাড়তে থাকে। আর পুলিশের উপর মহলের সঙ্গে দহরম-মহরমের জেরে তৃণমূলের জেলা নেতাদেরও তিনি খুব একটা গুরুত্ব দিতেন না বলে অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলেরই এক কাউন্সিলরের কথায়, “উপ-পুরপ্রধান যদি দলের কাউন্সিলরদের কথাই যদি না শোনেন তো সাধারণ মানুষের কথা শুনবেন কী করে? প্রকাশে উনি পুলিশের সঙ্গে সখ্যের কথা, নিজের প্রভাবের কথা বলে বেড়ান।”

Advertisement

শরৎপল্লি এলাকার ওই বিধবা মহিলার অভিযোগ, তাঁর জমি বিক্রির ক্ষেত্রে গোড়া থেকেই স্থানীয় এক দালালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন উপ-পুরপ্রধান। কিন্তু জমি বিক্রির অর্ধেক টাকা তিনি পেয়েছেন। বাকি টাকা চাইতে গেলে তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ-খুনের হুমকি দেন উপপুরপ্রধান। বাড়িতে দলবল নিয়ে এসে ভাঙচুরও চালান। প্রথমে পুলিশ ওই মহিলার অভিযোগ না নিলেও পরে নিয়েছে। তবে উপপুরপ্রধান-সহ সব অভিযুক্তই অধরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement