চলছে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরির কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গের পর এ বার দক্ষিণেও পা বাড়াল জাইকা (জাপান ইন্টারন্যাশানাল কো-অপারেটিভ এজেন্সি)। জাপানের ওই লগ্নি সংস্থার সহযোগিতায় পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর-১ ব্লকের হিজলিতে একটি আধুনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলছে বন দফতর। প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই কেন্দ্র তৈরি হলে দফতরের কর্তা থেকে সাধারণ কর্মী সকলে বন সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত নানা বিষয়, অত্যাধুনিক নার্সারি তৈরি, বন আইন প্রভৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন বলে জানান ডিএফও (খড়্গপুর) অঞ্জন গুহ।
ইতিমধ্যেই বন দফতরের দার্জিলিং ডিভিশনের কার্শিয়াঙে জাইকার উদ্যোগে এমনই একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে।
জল-জঙ্গল ছাড়াও পঞ্চায়েতের এক্তিয়ারভূক্ত বিভিন্ন প্রকল্প--জল ধরো-জল ভরো, ভূমিক্ষয় রোধ, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বিভিন্ন কাজকর্ম বিষয়েও বনকর্মীদের প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকবে ওই কেন্দ্রে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যপ্রাণীদের আচরণ, স্বভাব বিভিন্ন মরসুমি ব্যবহার সম্পর্কেও সম্যক ধারণা দিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ওই কেন্দ্রে। এক বনকর্তা জানান, দক্ষিণবঙ্গে হাতির তাণ্ডব ক্রমেই বাড়ছে। প্রায়ই তারা হানা দিচ্ছে লোকালয়ে। হাতিকে কিভাবে নিজের পরিবেশের মধ্যেই আবদ্ধ রাখা যায় সেই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা থাকবে ওই কেন্দ্রে। কর্মীদের জানানো হবে, হাতি কী ধরনের গাছ-গাছালি পছন্দ করে। পাশাপাশি, ভূমিক্ষয় রোধের বিভিন্ন পদ্ধতি চেকড্যাম তৈরি, বড় বাঁধ নির্মাণ, বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগানোর মতো ব্যাপারেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ওই কেন্দ্রে।
জঙ্গলে চোরাশিকারিদের আনাগোনাও নতুন নয়। রয়েছে আরও নানান অপরাধমূলক কাজের বহর। তা রুখতে বন আইন সম্পর্কেও সতর্ক করতে বিশেষ প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকবে ওই কেন্দ্রে।
বন দফতর সূত্রের খবর, ওই কেন্দ্রে বন কর্মী-সহ বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিলে সেই বিষয়ে প্রচার ও গাছ লাগানোর পদ্ধতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে বোঝানোও সম্ভব হবে। আশা করা হচ্ছে, জল ধরো-জল ভরো প্রকল্পে আধুনিক উপায়ে বাঁধ, পুকুর, ডোবা ছাড়াও বাড়ির ছাদে বর্ষার জল সংরক্ষণ করার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিলেও জল সংরক্ষণে আরও কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।