জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ কর্মাধ্যক্ষের

জেলা কমিটির সভায় প্রকাশ্যে এল পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তৃণমূলেরই জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সূর্য অট্ট। জেলা সভাপতি দলীয় সভায় নিজের অনুগামী ছাড়া অন্যদের বলার সুযোগ দেন না, এই অভিযোগ এনে প্রবীণ নেতা অজিত মাইতির হাত থেকে রীতিমতো মাইক কেড়ে নিয়ে বক্তব্য রাখেন সূর্যবাবু। জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ তছরূপের অভিযোগও আনেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৫ ০০:৩২
Share:

জেলা কমিটির সভায় প্রকাশ্যে এল পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তৃণমূলেরই জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সূর্য অট্ট। জেলা সভাপতি দলীয় সভায় নিজের অনুগামী ছাড়া অন্যদের বলার সুযোগ দেন না, এই অভিযোগ এনে প্রবীণ নেতা অজিত মাইতির হাত থেকে রীতিমতো মাইক কেড়ে নিয়ে বক্তব্য রাখেন সূর্যবাবু। জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ তছরূপের অভিযোগও আনেন।

Advertisement

শনিবার মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলে তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকে দলের নেতা-মন্ত্রীদের সামনেই এই ঘটনা ঘটে। এ দিনের সভার আলোচ্যসূচিতে ছিল সদস্যপদ সংগ্রহ। বিভিন্ন স্তরের সদস্যের জন্য বিভিন্ন রকমের চাঁদা রয়েছে। সূর্যবাবু বলেন, “জেলাকে কেউ একটি টাকাও দেবেন না। কারণ, জেলা কমিটিকে টাকা দিলে তা আদৌ সুরক্ষিত থাকবে কিনা সংশয় রয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, “জেলা পার্টি অফিস তৈরির নামে কোটি কোটি টাকা তোলা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে। কিন্তু কোথায় পার্টি অফিস! যে টাকা তোলা হয়েছে জেলা সভাপতি তার কোনও হিসাবও দেননি। তাহলে সদস্যপদ সংগ্রহের অর্থও যে তছরূপ হবে না তা কে বলতে পারে।”

এরপরই সূর্যবাবুর থেকে মাইক নিয়ে নিতে যান প্রবীণ নেতা অজিত মাইতি, বিধায়ক দুলাল মুর্মুরা। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। শেষমেশ সূর্যবাবু মাইক ছাড়েন। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে ফের সভা শুরু হয়। তবে বেশিক্ষণ হয়নি।

Advertisement

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে সংগঠন চাঙ্গা করতে বুথ স্তর থেকে সম্মেলন শুরু করা, সদস্যপদ সংগ্রহ ও পুরসভা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতেই এ দিন তৃণমূল জেলা কমিটির এই সভা ডাকা হয়েছিল। বক্তব্য রাখছিলেন দলের কার্যকরী সভাপতি আশিস চক্রবর্তী, বিধায়ক দুলাল মুর্মু, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা, অজিত মাইতি প্রমুখ। বক্তব্য রাখার সুযোগ পাননি সূর্যবাবু। তারপরই চটে গিয়ে মাইক টেনে নিয়ে বলতে শুরু করেন তিনি। অভিযোগের সুরে বলেন, “কলকাতায় কোনও রোগী সুচিকিৎসা না পেলে তৃণমূল ভবনে ফোন করেন। কিছু না কিছু সাহায্য মেলে। কিন্তু জেলায় তা মেলে না। দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশি হয়রানির শিকার হলেও দলীয় নেতৃত্ব নীরব থাকেন। কোথায় থাকেন জেলা সভাপতি? বহু ক্ষেত্রে মিটিংয়ের পর্যন্ত খবর দেওয়া হয় না। দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নিতে হলে কোর কমিটির বৈঠক ডাকেন। আপনি কি তার থেকেও উপরে!”

সম্প্রতি খড়্গপুরেও যুব সভাপতি ও মহিলা সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা গিয়েছিল। এ দিন বৈঠকের পরে সূর্যবাবু বলেন, “যা সত্য তা-ই বলেছি। কেউ সততার প্রতীক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গায়ে কাদা লাগাতে গেলে মেনে নেব না।” তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব অবশ্য বৈঠকে গোলমালের কথা মানছেন না। জেলা সভাপতি দীনেনবাবুর দাবি, “এ রকম কিছুই হয়নি। সব অপপ্রচার।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন