নিকাশির সুষ্ঠু বন্দোবস্তের আশ্বাসে উঠেছিল অবস্থান। তবে আশ্বাস পূরণ না হওয়ার অভিযোগ তুলে ফের পঞ্চায়েত অফিসের গেট বন্ধ করে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হলেন গ্রামবাসী। সোমবার ডেবরা মলিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ থাকায় অফিসে ঢুকতে পারেননি প্রধান, উপপ্রধান এমনকী কর্মীরাও। এর আগে একই দাবিতে টানা আট দিন ধরে বন্ধ ছিল এই গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসটি। গত ২১ অগস্ট সমস্যা সমাধানের আশ্বাসে উঠেছিল অবস্থান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেবরা ব্লকের মলিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নিকাশির সমস্যা দীর্ঘদিনের। নদী থেকে নিচু ওই এলাকায় সুষ্ঠু নিকাশির বন্দোবস্ত না থাকায় প্রতি বর্ষায় চাষে ক্ষতির মুখে পড়েন চাষিরা। মলিহাটির গ্রামবাসীর দাবি, গোলগ্রাম অঞ্চলের পশ্চিম দিক অর্থাৎ বড়গেড়িয়া, কাঁটাগেড়িয়া, কুল্যা গ্রামের দিক থেকে বর্ষায় জল ঢোকে তাঁদের এলাকায়। নিয়ম অনুযায়ী, ওই অঞ্চলের ওপর থেকে নিচুর দিকে জল বয়ে ফের গোলগ্রাম অঞ্চলের পূর্ব দিকে চকপলমল, চকপ্রয়াগ, খাজুরি হয়ে ভসরার খালে গিয়ে পড়ে। অভিযোগ, গোলগ্রাম অঞ্চলের পূর্বদিকের ওই গ্রামগুলি হিউম পাইপের মুখ বন্ধ রাখায় জল আটকে যাচ্ছে মলিহাটি অঞ্চলেই। আবার হিউম পাইপের মুখ খুলে দিলে তাঁদের এলাকা জলে ভাসবে বলে পাল্টা দাবি করছেন গোলগ্রামের পূর্ব দিকের বাসিন্দারা।
এই পরিস্থিতিতে বর্ষার জলে দুর্ভোগে পড়েছেন মলিহাটি অঞ্চলের চকতাতার, মধুবনপুর, নরহরিপুর-সহ ১৭টি গ্রামের বাসিন্দারা। দাবি সত্ত্বেও সমস্যা না মেটায় বন্ধ থাকা হিউম পাইপ খুলে আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা। পরে পুলিশ-প্রশাসনের উদ্যোগে সমস্যা সমাধানের আশ্বাসে গত ২৫ অগস্ট অবরোধ ওঠে। সেই সময়ই বাসিন্দারা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, আশ্বাস অনুযায়ী কাজ না হলে ফের অবরোধ হবে। চকতাতারের শক্তি ঘোষ, সিজগেড়িয়ার দিবাকর মণ্ডলদের কথায়, “আশ্বাস দেওয়া সময়সীমা থেকে আরও একসপ্তাহ অপেক্ষা করেছি। কিন্তু কাজ হয়নি। তাই ফের লাগাতার আন্দোলন চলবে।” ডেবরার বিডিও জয়ন্ত দাস বলেন, “আশ্বাস মতো নতুন কিছু হিউম পাইপ বসানো হয়েছে। কিন্তু ওঁরা চাইছেন স্থায়ী সমাধান। এ জন্য সেচ দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু একই দাবিতে পঞ্চায়েত অফিস অচল করা অনুচিত।” খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “সমস্যার কারণে মলিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ করা ঠিক নয়। কীভাবে নিকাশির সমাধান সম্ভব করা যায়, তার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।”