জমির দখল ঘিরে জমির মালিকদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়ালেন কলেজের পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার দুপুরে হলদিয়ার সুতাহাটার এই ঘটনায় জখম হয়েছেন চৈতন্যপুরের বিবেকানন্দ মিশন মহাবিদ্যালয়ের কয়েকজন পড়ুয়া এবং জমির মালিকদের একাংশ। তবে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। উভয় তরফ থেকেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থা ওই জমির মালিকদের থেকে ৪৬ ডেসিমেল জমি অধিগ্রহণ করে। বছরে এক টাকা লিজে সেই জমি দেওয়া হয় বিবেকানন্দ মিশন মহাবিদ্যালয়কে। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, এইচডিএ সেই জমি কলেজের নামে রেজিস্ট্রিও করে দিয়েছে। বিবেকানন্দ মিশন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মণিশংকর মাইতি জানান, “৪৬ ডেসিমেল জমির মধ্যে ২১ ডেসিমেল জমি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। বাকি ২৫ ডেসিমেল জমি যাদের ছিল তাঁরা সেই জমি দখল করে রেখেছিলেন। এ নিয়ে বারবার আলোচনা সত্ত্বেও সমস্যা মেটেনি।”
মঙ্গলবার ওই জমিতে ইপাঁচিল দিতে যান কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই সময় তাঁদের সঙ্গে গিয়েছিলেন কলেজের জনা কয়েক পড়ুয়া। তখন জমির মালিকদের সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। ক্রমশ তা গড়ায় হাতাহাতিতে। সেই সময় কয়েকজন পড়ুয়া জখম হন বলে অভিযোগ। সুতাহাটার বাজিতপুরের বাসিন্দা ওই জমির মালিক প্রবীর জানা বলেন, “২০০৬ সালে জমি অধিগ্রহণ দফতর আমাদের ২৬ ডেসিমেল জমি অধিগ্রহণের জন্য নোটিশ দিয়েছিল। কিন্তু কম দাম দিতে চাওয়ায় আমরা জমি দিতে চাইনি। তাছাড়াও আধা সরকারি কলেজের জন্য কী করে জমি অধিগ্রহণ করা যায়, প্রশ্ন তুলে আমরা কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও করেছি। সেই মামলাও চলছে।”
এ বিষয়ে হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থার বর্তমান চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য বলেন, “আমার সময়ে জমি অধিগ্রহণ হয়নি। তাই এ নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।” হলদিয়ার স্পেশাল ল্যান্ড অ্যাকুইজেশন অফিসার মৃগাঙ্কভূষণ মণ্ডলের কথায়, ‘ওই জমি অধিগ্রহণ হয়েছে কি না বা কি অবস্থায় রয়েছে তা কাগজপত্র না দেখে এখনই বলা যাবে না।” কিন্তু জমিতে পাঁচিল দিতে যাওয়ার সময় কলেজের পড়ুয়ারা কেন কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গেল? এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের জবাব, “এটা ওদের স্বতঃস্ফূর্ত সিদ্ধাম্ত।”