জলমগ্ন কাঁথিতে এ বার সঙ্কট পানীয় জলের

একনাগাড়ে চলা বৃষ্টি থেমেছে। তাই আপাতত কিছুটা স্বস্তিতে পূর্ব মেদিনীপুরের জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। তবে কয়েকটি এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়ে প্রায় সাড়ে তিনি হাজার বাসিন্দা। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে রয়েছে পটাশপুর ২ ব্লকের ৩১টি মৌজা। ব্লকের আড়গোয়ালের ১৪টি, সাউথখণ্ডের ১০টি, মথুরার ৭টি মৌজার রাস্তাঘাট ও কৃষিজমিরও ক্ষতি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি ও এগরা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৪ ০১:৪৫
Share:

জলমগ্ন পটাশপুর-২ ব্লকের এলাবাড় এলাকা। ছবি: কৌশিক মিশ্র

একনাগাড়ে চলা বৃষ্টি থেমেছে। তাই আপাতত কিছুটা স্বস্তিতে পূর্ব মেদিনীপুরের জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। তবে কয়েকটি এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়ে প্রায় সাড়ে তিনি হাজার বাসিন্দা।

Advertisement

গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে রয়েছে পটাশপুর ২ ব্লকের ৩১টি মৌজা। ব্লকের আড়গোয়ালের ১৪টি, সাউথখণ্ডের ১০টি, মথুরার ৭টি মৌজার রাস্তাঘাট ও কৃষিজমিরও ক্ষতি হয়েছে। তৃণমূল পরিচালিত আড়গোয়াল পঞ্চায়েত সদস্য নারায়ণ মণ্ডলের অভিযোগ, “পাঁউশি খাল সংস্কার না হওয়ায় অতিরিক্ত জল নদীতে যেতে পারছে না। ফলে জলমগ্ন হয়ে রয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। এলাকার প্রায় ১৫০০ হেক্টর কৃষিজমি জলের তলায়। প্রশাসন ও দলের সর্বস্তরে জানিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি।”

অভিযোগ স্বীকার করে পটাশপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চন্দন সাউ বলেন, “পাঁউশি খাল সংস্কারের কথা সেচ দফতর ও জেলা পরিষদকে একাধিকবার জানিয়েছি। তাছাড়া জব্দা এলাকায় পাঁউশি খালে একটি লকগেট অনেক উপরে থাকায় জমা জল বের করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি।” ব্লকের বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডু বলেন, “ওই খালটি সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। খালটি মজে যাওয়ায় জল বের করতে অসুবিধা হচ্ছে। তবে শনিবার থেকে ৪০ জন কর্মী জমা জল বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে।” সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার স্বপন পণ্ডিত বলেন, “খালটি সংস্কারের সরকারি অনুমতি আসেনি। আমরা সব কাগজপত্র জমা দিয়ে রেখেছি। অনুমতি এলেই কাজ হবে।” জমাজল বের করে দিতে সেচ দফতর ও বিডিওকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে এগরার মহকুমাশাসক অসীমকুমার বিশ্বাস জানান।

Advertisement

কাঁথি-৩ ব্লকে ত্রাণ শিবিরে চলছে খাবার পরিবেশন। ছবি: সোহম গুহ।

একনাগাড়ে চলা বৃষ্টি থামলেও পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে কাঁথি-৩ ব্লকে। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে রবিবার দুর্গতদের মাঝে ৩০ হাজার জলের পাউচ তুলে দেওয়া হয়েছে বলে বিডিও প্রদীপ্ত বিশ্বাস জানান। তিনি বলেন, “গোটা ব্লকে ৬৭টি ত্রাণ শিবির খুলে তাতে ৩৭৩০ জন নিরাশ্রয় মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। জলের পাউচ ছাড়াও ১৬ কুইন্টাল চিঁড়ে ও ৬ কুইন্টাল গুড় বিতরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন শিশুশিক্ষা কেন্দ্র ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের রান্না করা খাবারও পরিবেশন করা হচ্ছে।” গত কয়েকদিনের অতি বর্ষণে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঁথি-৩ ব্লক ব্লকের আটটি অঞ্চলের মধ্যে কানাইদিঘি, লাউদ,া মারিশদা, দুরমুঠ ও কুমির্দা অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বিঘের পর বিঘে চাষের জমি জলের তলায়। সব্জি সবজি চাষেরও ব্যাপক ক্ষতি হওয়া ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকশো বাড়িঘর। রবিবার জমা জল যাতে দ্রুত বের করা যায় তার জন্য ব্লক ও পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এলাকার অবরোধ হয়ে থাকা বিভিন্ন খাল ও নালা পরিষ্কার করা হয়েছে। কাঁথি-৩ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ বেজ জানান, রাখি বন্ধনের জন্য রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পাওয়া ১০ হাজার টাকা ব্লকের ত্রাণ তহবিলে তুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হরিণাপাশদলবাড় গ্রামের নওজোয়ান সংঘের পক্ষ থেকে ৩০ হাজার টাকা দুগর্ত মানুষদের ত্রাণের জন্য তুলে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন