উড়ালপুলের সামনে সার দিয়ে দাঁড়ানো মোটরবাইক (বাঁ দিকে), উড়ালপুলের নীচে চলছে কেনাবেচা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
এ যেন রাস্তা জুড়ে শয়ে শয়ে মোটরবাইকের র্যাম্প! পুরসভা অনুমোদিত মোটরবাইকের স্ট্যান্ড রয়েছে। তা সত্ত্বেও নির্মীয়মান উড়ালপুলের সামনে রাস্তা জুড়ে সার সার অসংখ্য মোটরবাইক। উড়ালপুলের তলায় আবার বেআইনি ভাবে গজিয়ে উঠেছে অস্থায়ী দোকান-বাজার। তৃণমূলের ক্ষমতাসীন পুরসভা নির্বাক দর্শক। অরণ্যশহর ঝাড়গ্রামে নির্মীয়মান উড়ালপুল এলাকায় এটাই এখন নিত্য দিনের ছবি। বিরোধীদের অভিযোগ, পুর-প্রশাসনের অপদার্থতার কারণে আইন ভাঙাটাই রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে, ব্যস্ত সময়ে শহরের প্রধান বাজার এলাকায় হাঁটাচলা করা দায়।
২০১১ সালের অগস্ট মাস থেকে শহরের মেন রেল ক্রসিংয়ে প্রধান বাজার এলাকায় উড়ালপুল তৈরির কাজ চলছে। রাস্তার দু’পাশের স্থায়ী দোকানগুলিতে যাতায়াত করার জন্য উড়ালপুলের নিচে রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যেই নির্মীয়মান উড়ালপুলটির নিচের রাস্তা জবর দখল করে একের পর এক অস্থায়ী দোকান-বাজার বসে গিয়েছে। ব্যস্ত সময়ে উড়ালপুলের তলায় মাছের দোকান, সব্জি-ফুলের দোকান, সেলুন, ইলেকট্রিক সরঞ্জাম সারানোর দোকান বসে। এ জন্য উড়ালপুলের তলা দিয়ে দু’পাশের স্থায়ী দোকানগুলিতে যাতায়াত করাটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে, আন্ডারপাসের তলা দিয়ে লোকাল বোর্ড যাওয়ার রাস্তাটিতেও জবরদখল বাজার বসছে। এর পাশাপাশি, শিবমন্দির চকের কাছে উড়ালপুল সংলগ্ন রাস্তার উপরে এবং তলায় কার্যত অস্থায়ী বাইক-স্ট্যান্ড বানিয়ে ফেলেছেন দোকান-বাজারে কেনাকাটা করতে আসা পুরবাসীর একাংশ। শিব মন্দির চক এলাকায় পুরসভা অনুমোদিত একটি স্ট্যান্ড থাকলেও সেখানে মোটরবাইক ও সাইকেল রাখেন না অনেকেই। কারণ, সেখানে বাইক-সাইকেল রাখার জন্য টাকা দিতে হয়। উড়ালপুর সংলগ্ন রাস্তাটি তাই বিনামূল্যে মোটরবাইক রাখার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।
ঝাড়গ্রাম পুরসভার একমাত্র বিরোধী কাউন্সিলর বিজেপি-র জল্পনা মিদ্যা বলেন, “শহরের জনসংখ্যা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। ফলে, উড়ালপুল সংলগ্ন বাজার এলাকায় নানা সমস্যা হচ্ছে। উড়ালপুলটি চালু হওয়ার আগে সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন। কিন্তু এসব মোকাবিলা করার মতো কোনও সদিচ্ছাই পুর-কর্তৃপক্ষের নেই।” ঝাড়গ্রাম পুর-নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক তপন চক্রবর্তী বলেন, “পুরসভা অনুমোদিত মূল্যযুক্ত স্ট্যান্ড থাকা সত্ত্বেও নির্মীয়মান উড়ালপুল ও সংলগ্ন রাস্তা জবরদখল করে বাইক রাখা হচ্ছে। সব দেখেশুনেও হাত গুটিয়ে রয়েছে পুরসভা। আগের বাম পুরবোর্ডের থেকেও বর্তমান পুরবোর্ড আরও নিষ্ক্রিয়।” সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত ঝাড়গ্রাম পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন শিউলি সিংহ। তাঁর আশ্বাস, “সমস্যা মেটানোর জন্য চেষ্টা চলছে।” সেই চেষ্টা যে কী তা অবশ্য খোলসা করেন নি শিউলিদেবী।