ভুলে ভরা রেশন কার্ড নিয়ে রাজ্য জুড়েই ক্ষোভ ছড়িয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতি দ্রুত কার্ডের ভুল-ত্রুটি সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছে খাদ্য দফতরও। জেলায় সব কার্ড বিলি হওয়ার পরেই সংশোধনের কাজ শুরু করা হবে বলে খাদ্য দফতর নির্দেশ দিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা খাদ্য নিয়ামক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘কার্ডের ভুলত্রুটি সংশোধনের নির্দেশ পেয়েছি। এ ব্যাপারে যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ করা হবে।”
গরিব মানুষ। কিন্তু খাদ্য সুরক্ষার তালিকায় ঠাঁই মেলেনি। তাই মেলেনি রেশন কার্ডও। কারও আবার কার্ড মিলেছে। কিন্তু পাড়ার রেশন দোকান নয়, ৩ কিলোমিটার দুরে অন্য এলাকার রেশন দোকানের তালিকায় নাম উঠেছে তাঁর। গণবন্টন ব্যবস্থার সুবিধে পেতে হলে কাজ ফেলে দীর্ঘপথ উজিয়ে তাঁকে যেতে হবে সেখানেই! কারও বা নামের বানান ভুল।
এ রকম ভুরি ভুরি ভুল রয়েছে খাদ্য সুরক্ষার তালিকায়। শাসক দলের নেতা-কর্মী থেকে পুরপ্রধান, বিধায়ক— সকলেই পড়ছেন ক্ষোভের মুখে। জাতীয়তাবাদী এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি কাঞ্চন খান বলেন, ‘‘মন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছিলাম, যাতে একজন গরিব মানুষও বাদ না যায়। মন্ত্রী তালিকা সংশোধন করে সকল গরিব মানুষদেরই খাদ্য সুরক্ষার আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন।’’
খাদ্য সুরক্ষার তালিকায় নাম নেই এমন লোকজন তো রীতিমতো আশঙ্কায় রয়েছে। মেদিনীপুর শহরের কেরানিতলার বাসিন্দা প্রতাপ বাগের কথায়, “নাম না ঢুকলে ভীষণ বিপদে পড়ে যাব। অন্যের দোকানে কাজ করে বহু কষ্টে সংসার চালাই। তার উপর বেশি দামে চাল কিনে খেতে হলে বাঁচব কী করে!” কার্ড পেলেও নিজের এলাকায় নাম নেই মোমিন মহল্লার বাসিন্দা মমতাজ বেগমের। তাঁর নাম রয়েছে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে বড়বাজারের রেশন দোকানে। তাঁর কথায়, “পাঁচ বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে সংসার চলে। পাড়ার দোকানেই রেশন তুলতে হত কষ্ট করে। এখন আবার তিন কিলোমিটার দূরে কী করে যাব ভেবে পাচ্ছি না।”
গ্রাহক থেকে ডিলার, সকলেই তাই চান দ্রুত ডিজিটাল কার্ডের ত্রুটি সংশোধন করা হোক। মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসুও চিঠি দিয়েছে ত্রুটি সংশোধনের আর্জি জানিয়েছেন। এবার জেলা খাদ্য দফতর জানাল, ভুল শোধরানোর জন্য চার ধরনের আবেদনপত্র তৈরি করছে দফতর। শীঘ্রই সেগুলি জেলাতে আসবে। তারপরেই সংশোধনের কাজ শুরু হবে।