তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ, ভাঙচুর

তৃণমূলের গোষ্ঠী বিবাদের জেরে ফের উত্তপ্ত চন্দ্রকোনার কৃষ্ণপুর। মূলত এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাত থেকে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। দু’পক্ষের সাত জন অল্পবিস্তর জখম হন। তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরও চলে। পরিস্থিতি সামলাতে শুক্রবার ভোর থেকে এলাকায় নেমেছে র্যাফ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দ্রকোনা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৪ ০০:২৯
Share:

তৃণমূলের গোষ্ঠী বিবাদের জেরে ফের উত্তপ্ত চন্দ্রকোনার কৃষ্ণপুর। মূলত এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাত থেকে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। দু’পক্ষের সাত জন অল্পবিস্তর জখম হন। তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরও চলে। পরিস্থিতি সামলাতে শুক্রবার ভোর থেকে এলাকায় নেমেছে র্যাফ। চলছে পুলিশি টহলও। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “বড় ধরনের গোলমাল যাতে না ঘটে সে জন্য সতর্ক রয়েছে পুলিশ। এলাকায় পুলিশ পিকেট হয়েছে।”

Advertisement

রাজ্যে পালাবদলের আগে সিপিএমের গড় ছিল এই কৃষ্ণপুর। ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটের পর এলাকায় সিপিএম-তৃণমূল বিরোধ শুরু হয়। ক্রমে কৃষ্ণপুরে তৃণমূলের আধিপত্য গড়ে ওঠে। তারপর এলাকা মোটামুটি শান্তই ছিল। ইতিমধ্যে এলাকা দখল ঘিরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই বিরোধ মূলত দলের কৃষ্ণপুর অঞ্চল সভাপতি রাকেশ সরকারের অনুগামীদের সঙ্গে স্থানীয় নেতা আনসার মল্লিকের অনুগামীদের। রাকেশ ব্লক সভাপতি অমিতাভ কুশারীর এবং আনসার ব্লকের সাধারণ সম্পাদক হীরালাল ঘোষের ঘনিষ্ঠ।

তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একটা ঠান্ডা লড়াই চলছিল। তার আঁচ পেয়ে দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই-সহ তৃণমূলের জেলা নেতারা চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের নেতৃত্বের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। তাতে বিরোধ কিছুটা থিতিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত থেকে ফের দু’পক্ষের লড়াই শুরু হয়। দলীয় সূত্রের খবর, রাকেশ অনুগামীরা যে দলীয় কার্যালয়ে বসেন, সেখানে ভাঙচুর চালান আনসার ঘনিষ্ঠরা। তার জেরে লাঠি, লোহার রড হাতে দু’পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জনিয়ে পড়ে। সাত জন জখম হন। শুক্রবার ভোরে চন্দ্রকোনা থানার ওসি আশিস জৈনের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় যায়। তারপর নামানো হয় র্যাফ।

Advertisement

এই গোলমালে তিনি কোনওভাবে জড়িত নন বলে দাবি করেছেন আনসার। তাঁর বক্তব্য, “রাকেশের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ক্ষোভ রয়েছে। তার জেরেই ওই পার্টি অফিসে ভাঙচুর চলেছে।” রাকেশের সঙ্গে অবশ্য বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। শুক্রবার দিনভর তাঁর মোবাইল বন্ধ ছিল। দলেরই দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল যে হয়েছে, তা মানছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অমিতাভ কুশারীও। তিনি বলেন, “গণ্ডগোল যাতে না হয়, সে জন্য পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।” আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের বক্তব্য, “কৃষ্ণপুরে পার্টি অফিস ভাঙচুরের খবর পেয়েছিল। দল কোনও ভাবে গোষ্ঠী কোন্দল বরদাস্ত করবে না। এই ঘটনায় কারা জড়িত খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে তাদের বহিষ্কার করা হবে।”

শুক্রবার সকালে চন্দ্রকোনা শহরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে আবার পুরসভার কমিউনিটি হল তৈরি নিয়ে তৃণমূলের এক পক্ষের বাধায় অশান্তি তৈরি হয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, সতীবাজারে পুরসভার উদ্যোগে ওই কমিউনিটি হল তৈরিতে বাধা দেয় শহর তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অশোক পালধির অনুগামীরা। এতে এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অশোকবাবুর অবশ্য দাবি, “যাতে সঠিক গুণমানের জিনিস দিয়ে কমিউনিটি হল হয়, আমরা সেই দাবি জানাতে গিয়েছিলাম। কাজে বাধার অভিযোগ মিথ্যা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন