জরকা জুনিয়ার বালিকা বিদ্যালয়

তিন মাস স্কুলে বন্ধ মিড-ডে মিল, ব্যহত পঠন-পাঠনও

তিন মাসেও কাটেনি অচলাবস্থা! আদালতের নির্দেশে চলতি বছরের অগস্ট মাসেই জরকা জুনিয়ার বালিকা বিদ্যালয়ের টিচার-ইন-চার্জ (টিআইসি)-এর পদ থেকে সরে গিয়েছেন পিয়ালি খান। পরিবর্তে স্কুল পরিদর্শকের অফিস থেকে চন্দ্রা বারুইকে টিচার-ইন-চার্জের দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। গত শুক্রবার পিয়ালিদেবী দায়িত্ব বোঝাতে গেলে তিনি নিতে রাজি হননি বলে অভিযোগ। দায়িত্ব বোঝাতে হলে শালবনির সহকারি স্কুল পরিদর্শক (এআই) তৃপ্তি ঘোষ পড়িয়াকে স্কুলে হাজির থাকতে হবে, এই দাবিতে বিক্ষোভও দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শালবনি শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৪৬
Share:

তিন মাসেও কাটেনি অচলাবস্থা!

Advertisement

আদালতের নির্দেশে চলতি বছরের অগস্ট মাসেই জরকা জুনিয়ার বালিকা বিদ্যালয়ের টিচার-ইন-চার্জ (টিআইসি)-এর পদ থেকে সরে গিয়েছেন পিয়ালি খান। পরিবর্তে স্কুল পরিদর্শকের অফিস থেকে চন্দ্রা বারুইকে টিচার-ইন-চার্জের দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। গত শুক্রবার পিয়ালিদেবী দায়িত্ব বোঝাতে গেলে তিনি নিতে রাজি হননি বলে অভিযোগ। দায়িত্ব বোঝাতে হলে শালবনির সহকারি স্কুল পরিদর্শক (এআই) তৃপ্তি ঘোষ পড়িয়াকে স্কুলে হাজির থাকতে হবে, এই দাবিতে বিক্ষোভও দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। বিষয়টি স্কুল পরিদর্শককে লিখিতভাবে জানিয়ে দায়িত্ব না দিয়েই ফিরে আসতে বাধ্য হন পিয়ালিদেবী। তাঁর কথায়, “এআইয়ের নির্দেশেই আমি চার্জ দিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু এআইয়ের উপস্থিতি ছাড়া চার্জ দেওয়া যাবে না বলে কয়েকজন অভিভাবক দাবি করেন। ফলে চার্জ না দিয়েই ফিরে এসেছি।” এআই তৃপ্তি ঘোষ পড়িয়া বলেন, “এই দাবি সঙ্গত নয় বলেই মনে করি। এক জন শিক্ষিকা অন্যজনের হাতে চার্জ দেবেন। তাঁরাই স্কুল চালাবেন। এ ক্ষেত্রে স্কুলে থাকার প্রয়োজনটা কোথায়? এ বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।”

টিচার-ইন-চার্জ না থাকায় বন্ধ স্কুলের মিড-ডে মিল। এমনকি স্কুলের বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষাও নেওয়া হয়নি। একাধিক উন্নয়নমূলক কাজও বন্ধ রয়েছে। অভিযোগ, শিক্ষিকা ও শিক্ষা দফতরের গাফিলতিতেই কোনও কাজ করা যায়নি। স্কুলের জন্য প্রায় ২.৮৮ একরের একটি জমিও দেখা হয়েছিল। গত বছরের মে মাসেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর ওই জমি চিহ্নিত করে দিয়েছিল। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে জানানো হয় যে, ওই জমিটি খাস। সেখানে স্কুল করা যেতে পারে। তা সত্ত্বেও কেন নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা যায়নি? পিয়ালিদেবীর কথায়, “ওই জমিতে স্কুল করা হবে কি না জানতে চেয়ে স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে লিখিত নির্দেশ চেয়েছিলাম। তা না পাওয়ায় কাজ করা যায়নি।”

Advertisement

যদিও স্কুল শিক্ষা দফতরের দাবি, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর যখন স্কুল করা যাবে বলে ছাড়পত্র দিয়েই দিয়েছে, সেক্ষেত্রে আবার স্কুল শিক্ষা দফতরের লিখিত নির্দেশের প্রয়োজন কোথায়? স্কুলের নতুন ভবন তৈরি না হওয়ায় তৈরি করা যায়নি শৌচাগারও। তারই মাঝে টিআইসি-র পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পিয়ালিদেবী। আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুরও করে। পরিবর্তে স্কুলে যোগ দেওয়া তাঁর পরের শিক্ষিকাকে টিআইসি করার নির্দেশ দেয় আদালত। অগস্ট মাসে আদালতের নির্দেশের পরে সাড়ে তিন মাস সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও পরবর্তী টিচার-ইন-চার্জ দায়িত্ব না নেওয়ায় অচলাবস্থা অব্যাহত।

পিয়ালিদেবী বিজ্ঞানের শিক্ষিকা। তিনি টিআইসি-র পদ ছেড়ে দেওয়ায় কয়েক জন মদ্যপ অবস্থায় এসে তাঁকে হুমকি দেয় বলে থানায় লিখিত অভিযোগও করেন তিনি। স্কুলে যাওয়াও বন্ধ করে দেন। ফলে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষাও নেওয়া হয়নি। সব মিলিয়ে ডামাডোল চলছেই। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত স্কুলের সমস্যা মেটানোর দাবিতে সোচ্চার হয়েছে ছাত্রী পরমা বেওরা, রিঙ্কু চৌরা বা অভিভাবক অশ্বিনী চালক, সুখেন দিগারেরা। তাঁদের কথায়, “দ্রুত স্কুলে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ ফেরাতে হবে।” এআই অবশ্য দ্রুত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন