তফসিলি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে থ্যালাসেমিয়ার বাহক রয়েছে কিনা জানতে রক্ত পরীক্ষায় উদ্যোগী হল সরকার। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। প্রথম ধাপে শুধু যারা ছাত্রাবাসে থাকে, তাদেরই রক্ত পরীক্ষা করা হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ আধিকারিক সৌমেন্দু বিশ্বাস বলেন, “দু’টি ছাত্রাবাসের কিছু ছাত্রের ইতিমধ্যেই রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ধীরে ধীরে জেলার সব তফসিলি ছাত্রাবাসেই এই কাজ হবে।’’
থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে স্বাস্থ্য দফতর প্রচার চালায়। বেসরকারি উদ্যোগেও অনেক সংস্থা এ ব্যাপারে প্রচার চালিয়ে যায়। শিবির করে রক্ত পরীক্ষাও করা হয়। এমনই একটি সংস্থা মেদিনীপুর থ্যালাসেমিয়া সোসাইটি। সোসাইটির সদস্য বাবলু চক্রবর্তী জানান, দুই জেলায় থ্যালাসেমিয়ার বাহকের হার ১৬ শতাংশ। আদিবাসীদের মধ্যে এর হার একটু বেশি। তাই তফসিলি পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কেন্দ্রে সরকারের নির্দেশেই রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর এই কাজটি করছে। এতে খুশি তফসিলি পড়ুয়ারাও। গোয়ালতোড়ের বাসিন্দা সুমিত্রা মাণ্ডি মেদিনীপুর বিএড কলেজের ছাত্রী। রসায়নে স্নাতক হওয়ার পর বিএড পড়ছেন। কিন্তু এখনও থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা হয়নি। মেদিনীপুর শহরের রাণি শিরোমণি ছাত্রাবাসের আবাসিক সুমিত্রা বলেন, “জানি এই পরীক্ষা জরুরি। কিন্তু কোথায় করব, কী ভাবে করব, জানি না। টাকাও তো লাগবে। এখন সরকার করে দেবে জেনে ভাল লাগছে।” একই ছাত্রাবাসে থাকা কমার্স কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী অর্পিতা বিশুই অবশ্য জানেন, তিনি থ্যালাসেমিয়া বাহক নন। কারণ, তাঁর কলেজে শিবির হয়েছিল। তাঁর কথায়, “আমাদের মতো পিছিয়ে পড়া সমাজে এই পদক্ষেপ জরুরি।”
পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪৫টি আশ্রম হস্টেল রয়েছে, যেখানে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির তফসিলি ছাত্রছাত্রীরা থাকে। ৬টি কেন্দ্রীয় ছাত্রাবাস রয়েছে। এছাড়াও কিছু স্কুলেও রয়েছে ছাত্রাবাস। সেখানে ২৫৫৫ জন তফসিলি ছাত্রছাত্রী থাকেন। এ বার তাদের প্রত্যেকেরই রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে কেউ থ্যালাসেমিয়ার বাহক কিনা।