দুই কৃতীকে শুভেচ্ছা মমতার

একজনের চোখে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। অন্যজনের গবেষক। দু’জনই এ বার রাজ্যের সম্ভাব্য মেধা তালিকায় জায়গা পেয়েছে। দু’জনেরই প্রাপ্ত নম্বর এক, ৪৬৭। একজন নীমিষা কুঙর। অলিগঞ্জ গার্লস স্কুলের ছাত্রী। অন্য জন অরিত্রজিৎ গুপ্ত। কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র। ভাল রেজাল্ট হবে, জানত নীমিষা। কিন্তু এতটা ভাল হবে, বুঝতে পারেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৪ ০০:৩২
Share:

মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো শুভেচ্ছাপত্র হাতে নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় সম্ভাব্য দশম নীমিষা কুঙর ও অরিত্রজিতের মা মল্লিকাদেবী।

একজনের চোখে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। অন্যজনের গবেষক। দু’জনই এ বার রাজ্যের সম্ভাব্য মেধা তালিকায় জায়গা পেয়েছে। দু’জনেরই প্রাপ্ত নম্বর এক, ৪৬৭। একজন নীমিষা কুঙর। অলিগঞ্জ গার্লস স্কুলের ছাত্রী। অন্য জন অরিত্রজিৎ গুপ্ত। কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র। ভাল রেজাল্ট হবে, জানত নীমিষা। কিন্তু এতটা ভাল হবে, বুঝতে পারেনি। তার কথায়, “এতটা ভাল রেজাল্ট হবে আশা করিনি। ভেবেছিলাম সাড়ে চারশোর ওপর পাবো, এটুকুই। রাজ্যের সম্ভাব্য মেধা তালিকায় জায়গা পেয়ে ভালই লাগছে।” অরিত্রজিৎ অবশ্য আরও একটু বেশি নম্বর আশা করেছিল। তার কথায়, “পরীক্ষা ভাল হয়েছিল। আরও একটু বেশি নম্বর পাবো বলেই আশা করেছিলাম।”

Advertisement

দু’জনই ছোট থেকে মেধাবী। অরিত্রজিতের মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৫৬। আর নীমিষার ৬৩৯। নীমিষা মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে ডেবরার বালিচক গার্লস স্কুলে। তারপর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মেদিনীপুর শহরে আসা। ভর্তি হওয়া অলিগঞ্জ গার্লসে। শহরে ভাড়া বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করেছে সে। দুই বোনের মধ্যে নীমিষা বড়। ছোট বোন মনীষা নবম শ্রেণীর ছাত্রী। বাবা নীলকান্তবাবু সেনাবাহিনীতে ছিলেন। মা মল্লিকাদেবী গৃহবধূ। সবথেকে বেশি পছন্দের বিষয় পদ্যার্থবিদ্যা। এক সময় এই মেধাবী ছাত্রী মনে মনে ঠিক করেছিল, পদার্থবিদ্যা নিয়েই পড়াশোনা করবে। পরে অবশ্য বুঝতে পারে, বাবা-মায়ের ইচ্ছে সে যেন ডাক্তার হয়। এরপর থেকেই তার স্বপ্নে পাক খেতে শুরু করে ডাক্তারি। উচ্চমাধ্যমিকে তার বাংলায় প্রাপ্ত নম্বর ৮৬, ইংরেজীতে ৯৩, রসায়নবিদ্যায় ৯৫, পদার্থবিদ্যায় ৯৫, জীববিদ্যায় ৯৮। এক সময় গান শিখেছে। আঁকা শিখেছে। নীমিষা বলছিল, “সময় পেলে গল্পের বই পড়তেও ভাল লাগে।”

অরিত্রজিৎ বেঙ্গালুরুতে থাকায় তার মায়ের হাতে
শুভেচ্ছাপত্র তুলে দেন মেদিনীপুর সদর মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত।

Advertisement

শুক্রবার যখন উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশ হয়, তখন অবশ্য অরিত্রজিৎ মেদিনীপুরে ছিল না। ছিল ব্যাঙ্গালোরে। আইআইএসসি’র কাউন্সেলিংয়ে যোগ দিতে তার বেঙ্গালুরু যাওয়া। বাবা আশিসকুমার গুপ্ত ঝাড়গ্রামের বিএড কলেজের অধ্যক্ষ। মা মালা মজুমদার গুপ্ত হুমগড় গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান অরিত্রজিৎ। উচ্চমাধ্যমিকে তার বাংলায় প্রাপ্ত নম্বর ৮৪, ইংরেজীতে ৮৫, রসায়নবিদ্যায় ৯৫, পদার্থবিদ্যায় ৯৯, গণিতে ৯৯। এ দিন বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে এই কৃতী ছাত্র বলছিল, “আগামী দিনে গবেষণা করার ইচ্ছে রয়েছে।” পড়াশোনার পাশাপাশি সংস্কৃতি-চর্চাতেও আগ্রহ রয়েছে তার। অবসরে আবৃত্তি করে। ছবি আঁকে। গল্পের বইও পড়ে। অন্য দিকে, এ দিনই দুই কৃতীর পরিবারে পৌঁছে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছাপত্র। আমন্ত্রণ পেয়ে এদিন সন্ধ্যায় মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসকের দফতরে আসে নীমিষা। সঙ্গে ছিলেন নীলকান্তবাবু। আসেন অরিত্রজিতের মা মালাদেবীও। মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত নীমিষা এবং মালাদেবীর হাতে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাপত্র তুলে দেন। সঙ্গে ছিল পুষ্পস্তবক এবং মিষ্টির প্যাকেট।

ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন