খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম

নিম্নচাপের ভ্রুকুটি, বাতিল কর্মীদের ছুটি

ঝাড়খণ্ডে়র জলধার থেকে জল ছাড়ায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন অংশে বন্যার ভ্রুকুটি দেখা দিয়েছিল। তবে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় আপাতত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে প্রশাসন। তবে ভবিষ্যতেও একই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখা হয়েছে। জেলায় একটানা ভারী বৃষ্টি হয়নি। জলাধার থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণও অনেক কমেছে। ফলে, পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৫ ০১:২৯
Share:

গাছ পড়ে অবরুদ্ধ রাস্তা। মেদিনীপুরে।

ঝাড়খণ্ডে়র জলধার থেকে জল ছাড়ায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন অংশে বন্যার ভ্রুকুটি দেখা দিয়েছিল। তবে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় আপাতত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে প্রশাসন। তবে ভবিষ্যতেও একই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখা হয়েছে। জেলায় একটানা ভারী বৃষ্টি হয়নি। জলাধার থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণও অনেক কমেছে। ফলে, পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে।”
দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের জেলা আধিকারিক সত্যব্রত হালদারও বলেন, “টানা ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ঝড়- বৃষ্টিতে বেশ কিছু এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে উদ্বেগের কিছু নেই। পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকে প্রয়োজনীয় ত্রাণ- সামগ্রীও পাঠানো হচ্ছে। ব্লক থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট এলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” অবশ্য বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্মচাপ থেকে আবহাওয়ার অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতি দেখে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট সমস্ত বিভাগকে নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা। সমস্ত আধিকারিক- কর্মীর ছুটি বাতিল করে ব্লকগুলো থেকে পরিস্থিতির উপর সতর্ক নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কন্ট্রোল রুম থেকে নজরদারি চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসনের একাংশ কর্তা মনে করছেন, সুবর্ণরেখার জলস্তর আগের থেকে কমেছে। তবে ফের একলপ্তে প্রচুর পরিমাণ জল ছাড়া হলে নদী তীরবর্তী এলাকায় পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আপাতত, গালুডি থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। মুকুটমণিপুর থেকেও জল ছাড়া হচ্ছে। ডিভিসি থেকে একলপ্তে প্রচুর জল ছাড়া হলে কংসাবতী, শিলাবতী নদী তীরবর্তী এলাকায় বন্যার ভ্রুকুটি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, “কম বৃষ্টির দরুন এ বার বিপদের হাত থেকে বাঁচা গিয়েছে।’’

Advertisement

এক সময় ঝাড়খণ্ডের গালুডি থেকে আড়াই লক্ষ কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু হয়। ফলে, সুবর্ণরেখার জল বেড়ে যায়। এখন অবশ্য গালুডি থেকে ৩১ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। অন্য দিকে, মুকুটমণিপুর থেকে ২৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেলে ঘূর্ণিঝড়ে সবংয়ের বুড়াল ও বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এলাকার বিধায়ক মানস ভুঁইয়া জেলাশাসককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান। একই আর্জি জানান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি।

বুধবার অমূল্যবাবু মেদিনীপুরে এসে দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের জেলা আধিকারিক সত্যব্রত হালদারের সঙ্গে দেখা করেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রিপল পাঠানোর অনুরোধ করেন। জেলাশাসকের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মেদিনীপুর- খড়্গপুরের মতো এলাকায় দিনে ১৫-২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হচ্ছে। ঘাটালে বৃষ্টি হয়েছে ১৭৩ মিলিমিটার। ডেবরা-কেশপুর-শালবনি-গড়বেতাতেও কমবেশি একই পরিস্থিতি। পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৯টি ব্লকের মধ্যে নয়াগ্রাম, কেশিয়াড়ি, গোপীবল্লভপুর-সহ ১৫টি ব্লকে কমবেশি বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে। অন্য দিকে, আটটি পুরসভার মধ্যে ঘাটাল এবং চন্দ্রকোনা, এই দুই পুরসভায় বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে। এখনও পর্যন্ত ৭১৯টি মাটির বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৩ হাজার ৫২৩টি মাটির বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলমগ্ন প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর জমি। জেলায় সবমিলিয়ে ১৩টি ত্রাণ শিবির খুলতে হয়েছিল। কেশিয়াড়িতে ৯টি, দাঁতন- ১ এ ২টি এবং গোপীবল্লভপুর- ১ এ ২টি। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ১৩টি ত্রাণ শিবিরই অবশ্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন