নতুন বছরের শুরুতেই পুর নির্বাচন। তার আগে ঘাটাল মহকুমার অর্ন্তগত পাঁচটি পুরসভা এলাকায় দলের সাংগঠনিক অবস্থা সরেজমিনে দেখতে আজ, বৃহস্পতিবার ক্ষীরপাই আসছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। এ দিন বেলা দু’টোয় ক্ষীরপাই শহরের টাউন হলে মহকুমার প্রতিটি পুরসভার নেতৃত্ব, চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, ওয়ার্ড কমিটি-সহ ব্লক স্তরের নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করার কথা তাঁর। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “বৈঠকে পুরসভা-সহ দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।”
লোকসভা ভোটের পর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ গোটা রাজ্যেই রাজনৈতিক জমি ক্রমশ শক্ত হচ্ছে বিজেপির। এমন পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও তৃণমূলের নানা গোষ্ঠীর কোন্দলে দাঁড়ি পড়েনি। সেই কোন্দল রয়েছে একেবারে বুথ স্তর থেকে জেলা স্তর, সর্বত্রই। প্রায়ই এলাকা দখল নিয়ে দলের নানা গোষ্ঠীর গণ্ডগোল চরমে উঠেছে। বহু দলীয় কর্মী ও নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে তোলাবাজি-সহ একাধিক অভিযোগও রয়েছে। তৃণমূলের অন্দরের খবর, জেলা নেতৃত্ব এ সবে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারায় বহু জন প্রতিনিধিও ক্ষুব্ধ।
দলেরই এক সূত্রে খবর, ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই, জেলা সভাপতি দীনেন রায়, প্রদ্যোৎ ঘোষ-সহ একাধিক নেতৃত্ব পরিস্থতি সামলাতে বহুবার কথাবার্তা, নানা নিদান দিলেও কোন্দলে রাশ টানা যায়নি। বরং তলে তলে নিজেদের মাটি শক্ত করেছে বিজেপি। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, তা টের পেয়েই কোন্দলে লাগাম টেনে সব পক্ষকে সামলে সংগঠনকে আরও পোক্ত করতে শীর্ষ নেতৃত্ব পশ্চিম মেদিনীপুরে আসছেন। আগামী ২৪ নভেম্বরই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেদিনীপুরে সাংগঠনিক সভা রয়েছে। দলের অন্যতম শীর্ষনেতা মুকুল রায়ও বৃহস্পতিবার আসছেন। তবে, এ সবের পাশাপাশি সফরের অন্যতম ‘পাখির চোখ’ যে পুরভোট, তা স্পষ্ট করেছেন অনেকেই। ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলছেন, “পুরসভার ভোটের প্রস্তুতির পাশাপাশি দলের অভ্যন্তীরণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের আটটি পুর এলাকার মধ্যে ঘাটালেই রয়েছে পাঁচটি পুরসভা। এগুলি হল ঘাটাল, খড়ার, চন্দ্রকোনা, রামজীবনপুর এবং ক্ষীরপাই। এখন পাঁচটি পুরসভাই তৃণমূলের দখলে। দলীয় সূত্রের খবর, পাঁচটি পুরসভার কোনওটিই যাতে দলীয় কোন্দলের ফলে বিরোধীর হাতে চলে না যায়, তা ঠেকাতে আগেভাগেই তৎপর হতে চান রাজ্য নেতৃত্ব। দলের এক নেতার কথায়, “ইতিমধ্যেই মহকুমার দু’টি পুরসভায় বিজেপি ভাল সংগঠন তৈরি করেছে। সেই সব পুরসভার চেয়ারম্যান-সহ একাধিক কাউন্সিলর ও নেতৃত্বের প্রতিও সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। এর সবই কানে গিয়েছে দলনেত্রীর। এই পরিস্থিতিতে আগেভাগেই গড় রক্ষায় মাঠে নামতে চাইছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
সব মিলিয়ে, পুরভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হয়নি এখনও। কিন্তু, জমে উঠছে তাকে সামনে রেখে তৃণমূলের রাজনৈতিক তৎপরতা।