পুকুর খুঁড়তে গিয়ে হাড়গোড় পিংলায়, দাবি তৃণমূল কর্মীর

একশো দিনের কাজে পুকুর খুঁড়তে গিয়ে মিলল মাথার খুলি আর হাড়গোড়। শনিবার সকালে পিংলার জলচক গ্রামে এই হাড়গোড় পাওয়া যায়। তৃণমূলের দাবি, এই দেহাবশেষ ২০০১ সাল থেকে নিখোঁজ তিন দলীয় কর্মী মনোরঞ্জন গুছাইত, শশাঙ্ক দাস, প্রবোধ দাসের মধ্যে কোনও এক জনের। তিন জনকেই সিপিএমের লোকজন খুন করে দেহ লোপাট করেছিল বলে অভিযোগ। দেহ লোপাটের কাজে ছয় সিপিএম কর্মী জড়িত ছিল বলে এ দিন তৃণমূল লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৪ ০১:৩২
Share:

একশো দিনের কাজে পুকুর খুঁড়তে গিয়ে মিলল মাথার খুলি আর হাড়গোড়। শনিবার সকালে পিংলার জলচক গ্রামে এই হাড়গোড় পাওয়া যায়। তৃণমূলের দাবি, এই দেহাবশেষ ২০০১ সাল থেকে নিখোঁজ তিন দলীয় কর্মী মনোরঞ্জন গুছাইত, শশাঙ্ক দাস, প্রবোধ দাসের মধ্যে কোনও এক জনের। তিন জনকেই সিপিএমের লোকজন খুন করে দেহ লোপাট করেছিল বলে অভিযোগ। দেহ লোপাটের কাজে ছয় সিপিএম কর্মী জড়িত ছিল বলে এ দিন তৃণমূল লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

Advertisement

এ দিন উদ্ধার হওয়া হাড়গোড় ঠিক কার, তা নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষারও আবেদন জানিয়েছেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি গৌতম জানা। এসডিপিও (খড়্গপুর) অজিত সিংহ যাদব বলেন, “একটা খুলি-সহ বেশ কিছু হাড়গোড় পাওয়া গিয়েছে। আমরা তা ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠাবো। ডিএনএ পরীক্ষার আবেদনও খতিয়ে দেখা হবে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন জলচকে জানাদের পুকুর খনন চলছিল। সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ প্রথমে মাথার খুলি পাওয়া যায়। খবর পেয়ে আসে পুলিশ। পৌঁছন বিডিও অনিন্দিতা রায়চৌধুরী। ক্রমে মাটি খুঁড়ে আরও হাড়গোড় মেলে। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় মাটি খুঁড়ে হাড়গোড় উদ্ধার হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেহাবশেষ কোনও না কোনও নিখোঁজ তৃণমূল কর্মীর বলে দাবি ওঠে। ওই সময় পিংলার সীমানা এলাকা নারায়ণগড়ের মণিনাথপুরে হাড়গোড় উদ্ধারের পরে ধনেশ্বরপুরের নিখোঁজ তৃণমূল কর্মী প্রবোধ দাসের স্ত্রী দাবি করেছিলেন, ওই দেহাবশেষ তাঁর স্বামীর। ডিএনএ পরীক্ষাও হয়। তবে তা প্রবোধের বলে প্রমাণ মেলেনি। এ দিন হাড়গোড় উদ্ধারের পরে ফের তা প্রবোধ, মনোরঞ্জন বা শশাঙ্কের বলে দাবি উঠেছে।

Advertisement

কলেজ পড়ুয়া মনোরঞ্জনের বাড়ি মালিগ্রাম পঞ্চায়েতের কালেয়ারা গ্রামে। শশাঙ্কের বাড়ি জলচক-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীবাড়ি গ্রামে। এ দিন হাড়গোড় উদ্ধারের পরে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন শশাঙ্কের ছেলে বিদেশ। তিনি বলেন, “২০০১ সালের ২২ এপ্রিল সিপিএমের জনা পঁচিশেক লোক বাবাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। পরে জানতে পারি ওরা বাবাকে মেরে দেহ লোপাট করেছে। আমার ধারণা এটা বাবার কঙ্কাল।” ব্লক তৃণমূল সভাপতি গৌতমবাবুর কথায়, “এলাকা দখল করতে গিয়ে ২০০০-২০০১ সালে আমাদের অনেক কর্মীকে খুন করেছিল সিপিএম। সেই পর্বে খুন হওয়া মনোরঞ্জন গুছাইত, শশাঙ্ক দাস, প্রবোধ দাসের দেহ পাওয়া যায়নি। আমাদের ধারণা এই হাড়গোড় তাঁদের মধ্যে একজনের।” খুন করে দেহ লোপাটের অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হরেকৃষ্ণ সামন্ত বলেন, “ওই এলাকায় আমাদেরও অনেক কর্মী নিখোঁজ রয়েছেন। হাড়গোড় উদ্ধারের পর নানা দাবি করে তৃণমূল উত্তেজনা ছড়াচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন