প্যারোলে ছাড়া পেয়ে উধাও বন্দি

খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি প্যারোলে ছাড়া পেয়ে বাড়ি গিয়েছিল। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও পুরুলিয়ার বলরামপুরের বাসিন্দা সেই বন্দি আর জেলে ফেরেনি। এই নিয়ে হুলুস্থুল পড়ে গিয়েছে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। রতন সিং সর্দার নামে ওই বন্দির নামে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোও হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:০৬
Share:

খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি প্যারোলে ছাড়া পেয়ে বাড়ি গিয়েছিল। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও পুরুলিয়ার বলরামপুরের বাসিন্দা সেই বন্দি আর জেলে ফেরেনি। এই নিয়ে হুলুস্থুল পড়ে গিয়েছে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। রতন সিং সর্দার নামে ওই বন্দির নামে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোও হয়েছে। এ বার তার নামে ‘লুক আউট’ নোটিসও জারি করা হচ্ছে বলে জেল সূত্রে খবর। কারা দফতরের ডিআইজি (মেদিনীপুর) বিপ্লব দাস বলেন, “প্যারোলে ছাড়া পাওয়া এক আবাসিক সংশোধনাগারে ফেরেনি। পুরো বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

Advertisement

জানা গিয়েছে, বলরামপুর থানার বাঁধরি গ্রামের বাসিন্দা ওই বন্দি আগেও প্যারালে ছাড়া পেয়েছিলেন। মেয়াদ ফুরনোর পর তিনি সংশোধনাগারে ফিরে এসেছিলেন। তবে এ বার আর ফেরেননি। চারদিনের জন্য ওই বন্দি প্যারোলে ছাড়া পান (২০-২৩ ডিসেম্বর)। সেই মতো তাঁকে ছাড়া হয়। তাঁকে পরিজনেরা নিতে এসেছিলেন। ফেরার কথা ছিল ২৪ ডিসেম্বর। কিন্তু ওই দিন তিনি ফেরেননি। এরপরেই নড়েচড়ে বসেন জেল কর্তৃপক্ষ। রতন একটি খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ রয়েছে। কয়েক বছর ধরে সে মেদিনীপুর সংশোধনাগারে রয়েছে।

প্রাথমিক ভাবে কিছু জায়গায় খোঁজখবর করার পর বলরামপুর থানায় ওই বন্দির নামে লিখিত অভিযোগ জানান জেল কর্তৃপক্ষ। এরপর খোঁজ শুরু করে পুলিশ। অবশ্য কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েও এখনও পর্যন্ত কোথাও তাঁর খোঁজ মেলেনি। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁধরি গ্রামে রতনের খোঁজে তার বাড়িতেও পুলিশ যায়। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ির লোকজন তাদের জানিয়েছেন, রতন জেলে ফেরার জন্য নির্দিষ্ট দিনেই বাড়ি থেকে বের হয়। তারপর কী হয়েছে তাঁরাও জানেন না। সেখানে তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু শুক্রবার পর্যন্ত তার কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। আগেও বেশ কয়েকবার বিতর্কে জড়িয়েছে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। মাঝেমধ্যেই নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অতীতে এই জেল থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়েছে। পাওয়া গিয়েছে মোবাইল ফোনও। বছর দুয়েক আগে রাজ্য গোয়েন্দা দফতর এ নিয়ে কারা দফতরকে সতর্কও করেছিল। জানানো হয়েছিল, জেলের এক কর্মীর মদতেই বন্দিদের কাছে মোবাইল, টাকা, মাদকদ্রব্য, গোপন চিঠি পৌঁছে যাচ্ছে। বন্দিদের একাংশের সঙ্গে জেলের কয়েকজন আধিকারিক-কর্মীর সুসম্পর্ক রয়েছে বলেও অভিযোগ। প্যারোলে ছাড়া পাওয়া কোনও বন্দি উধাও হয়ে গিয়েছেন, এমন ঘটনা এই প্রথম। জেলের এক সূত্রের তেমনই দাবি। জেলের এক কর্তার কথায়, “কেউ যদি প্যারোলে ছাড়া পাওয়ার পর আর না ফিরে আসে, আমরা কী করতে পারি! বলরামপুর থানায় এফআইআর করা হয়েছে। ওই আবাসিকের নামে ‘লুক আউট’ নোটিসও জারি করা হচ্ছে।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন