পূর্বে ফলন ভাল, পদ্মের দাম নিয়ে চিন্তায় চাষিরা

বাগান ভরেছে পদ্মের কুঁড়িতে। তবুও পুজোর আগে মনটা ভাল নেই ওঁদের। দুর্গাপুজোর অন্যতম উপচার পদ্ম ফুলের জোগান যে এ বার বেশি। তাই ফুলের সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে আশঙ্কায় চাষিরা। পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের ভোগপুর, সাগরবাড়, সিদ্ধা, দেড়িয়াচক ও হাওড়ার বাগনান, কুলগাছিয়া থেকে ফি বছর কয়েক লক্ষ পদ্মের জোগান আসে। আবহাওয়া অনুকূল হওয়ায় পদ্মের উৎপাদনও ভালই।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৪৯
Share:

পদ্মের পসরা। নিজস্ব চিত্র

বাগান ভরেছে পদ্মের কুঁড়িতে। তবুও পুজোর আগে মনটা ভাল নেই ওঁদের। দুর্গাপুজোর অন্যতম উপচার পদ্ম ফুলের জোগান যে এ বার বেশি। তাই ফুলের সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে আশঙ্কায় চাষিরা।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের ভোগপুর, সাগরবাড়, সিদ্ধা, দেড়িয়াচক ও হাওড়ার বাগনান, কুলগাছিয়া থেকে ফি বছর কয়েক লক্ষ পদ্মের জোগান আসে। আবহাওয়া অনুকূল হওয়ায় পদ্মের উৎপাদনও ভালই। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় রেললাইনের ধারে ঝিল, মেদিনীপুর ক্যানালের পাশের জলাশয়, পুকুর-জলাজমিতেও ফলানো পদ্মকুঁড়ি তুলে হিমঘরে ভরা শুরু হয়েছে। কলকাতার মল্লিকঘাট ফুলবাজারের পরেই রাজ্যের অন্যতম বৃহৎ ফুলবাজার কোলাঘাটে পদ্মের কেনাবেচা হয়। এখান থেকে মল্লিকঘাট বাজারে পদ্মফুল চলে যায়। সেখান থেকে পদ্ম যায় দেশের বিভিন্ন রাজ্য ও বিদেশে।

শিয়রে পুজো। মহাষ্টমীর দিনে ১০৮টি পদ্ম লাগে। বহুদিন ধরেই ব্যবসায়ীরা পদ্মকুঁড়ি হিমঘরে সংরক্ষণ করতে শুরু করেছেন। মহাষ্টমীর আগে পদ্ম থেকে বের করা হয়। মহালয়ার পর থেকেই পদ্মের দাম ক্রমশ চড়তে থাকে। তবে এ বার পদ্মের দাম অনেকটাই কম বলে জানাচ্ছেন চাষি-ব্যবসায়ীরা। ভোগপুর স্টেশনে ফুলের বাজারে আসা স্থানীয় নামালবাড় গ্রামের চাষি অনিল বর্মণ বলেন, এখন প্রতি একশো পদ্ম ৭০-১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর এই সময় প্রতি একশো পদ্মের দাম ছিল ১৫০-২০০ টাকা।” কোলাঘাট, বাগনান এলাকার অধিকাংশ পদ্মফুল চাষ হয়। রেললাইনের দু’পাশে থাকা ঝিল (জলাশয়)) লিজ নেওয়া নিয়ে পদ্মচাষিরা জানান, রেল দফতরের কাছ থেকে ঝিল লিজ নেওয়ার পর তাতে পদ্মচাষের জন্য বীজ লাগানো, পরিচর্যা, সার দেওয়া প্রভৃতির জন্য অনেক টাকা খরচ হয়। তাই পদ্মের ভাল দাম না পেলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

Advertisement

কোলাঘাটের সিদ্ধা এলাকার দক্ষিণ জিয়াদা গ্রামের প্রবীণ পদ্ম চাষি গোপাল ওঝা দেড় বিঘা নয়ানজুলিতে পদ্ম চাষ করেন। প্রায় ৪০ বছর ধরে পদ্মের চাষ করা গোপালবাবু বলেন, “গত বছর এবছরের থেকে প্রায় দু’সপ্তাহ দেরিতে পুজো পড়েছিল। ফলে সেই সময় বাজারে পদ্মের জোগান কম থাকায় দামও ছিল বেশি।” কোলাঘাট ফুলবাজারে ২৫ বছর ধরে পদ্মের ব্যবসা করছেন সুভাষ থান্দার। তিনিও বলেন, “গত বছর প্রতি একশো পদ্মের দাম দু’হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। এ বছর চিত্রটা উল্টো।”

তবে পদ্মের দাম কম থাকায় হাসি ফুটেছে পুজো উদ্যোক্তাদের মুখেও। তমলুক শহরের ইয়ুথ স্পোর্টিং ক্লাবের সম্পাদক কিশোর দাস বলেন, “আশা করছি, এ বার সেই অসুবিধায় পড়তে হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন