সাঁকরাইলে প্রকল্পের সূচনা। —নিজস্ব চিত্র।
জঙ্গলমহলে মুক্তিধারা প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা হল শুক্রবার। এ দিন বিকেলে পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইল ব্লকের কোদোপাল প্রকৃতি প্রাঙ্গণে প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন স্ব-সহায়ক গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দফতরের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। মন্ত্রী জানান, পিছিয়ে পড়া মহিলাদের স্বনিযুক্তির মাধ্যমে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে গত বছর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঝাড়গ্রাম ও বিনপুর-১ (লালগড়) এই দু’টি ব্লকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে মুক্তিধারা প্রকল্প রূপায়ণের কাজ শুরু হয়। এ বার ঝাড়গ্রাম মহকুমার বাকি ৬টি ব্লক-সহ মোট ৮টি ব্লকেই মুক্তিধারা প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা হচ্ছে।
গত বছর ঝাড়গ্রাম ও বিনপুর-১ (লালগড়) এই দু’টি ব্লকের ৪৭টি স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীভুক্ত মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর জেলা গ্রামীণ উন্নয়ন নিগম (ডিআরডিসি)-এর মাধ্যমে গোষ্ঠীগুলিকে স্বল্প সুদে ব্যাঙ্ক-ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থাও হয়। ওই টাকায় ধানচাষ, সব্জিচাষ, মুড়ি ভেজে, ছাগ-পালন করে কিংবা মুরগি-খামার করে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের আয়ের পথ সুগম করা হচ্ছে। মুক্তিধারা প্রকল্পের মাধ্যমে বিকল্প রুজির বন্দোবস্ত করা সম্ভব হচ্ছে বলে মন্ত্রীর দাবি। দ্বিতীয় পর্যায়ে এবার ৮টি ব্লকের ১৪০টি স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এর ফলে ১,৪০০ গ্রামীণ মহিলা উপকৃত হবেন। শান্তিরামবাবু বলেন, “স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীগুলি যাতে আগামী দিনে খুবই অল্প সুদে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেতে পারে সেজন্য ব্যাঙ্ক ঋণের সুদের উপর সরকারি ভর্তুকির পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।”
এ দিন অনুষ্ঠানস্থলে মহকুমার আটটি ব্লকের ১৪০টি স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর সদস্যাদের স্বনির্ভর ও স্বনিযুক্তি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মহিলা স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীগুলির হাতে প্রশিক্ষণের শংসাপত্র ও ভাতা তুলে দেন শান্তিরামবাবু। এ দিন যেখানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, সেই কোদোপাল ইকো প্রজেক্ট-এর ভূয়সী প্রশংসা করে শান্তিরামবাবু বলেন, বছর তিনেক আগে জনমানবহীন এই জায়গাটি ঝোপঝাড়ে পূর্ণ পরিত্যক্ত এলাকা ছিল। কিন্তু এখন দু’শো একর জমিতে ২২ রকমের সব্জি চাষ করছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। এলাকার ভোল বদলের পাশাপাশি, বিকল্প রুজির পথ তৈরি হয়েছে। এ দিন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, রাজ্যের স্ব-সহায়ক গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি বিভাগের সচিব আরিজ আফতাব, জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা প্রমুখ।