পুলিশের জুলুমবাজি থেকে নিষ্কৃতি পেতে পাইকারি হারে মুরগি মাংস ও ডিম বিক্রেতারা নতুন সংগঠন তৈরি করলেন। সংগঠনের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠন তৈরি করেই জানিয়ে দিলেন, পুলিশি জুলুমের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে এবার পথে নেমে আন্দোলন শুরু করবেন তাঁরা। প্রয়োজনে জেলা থেকে হাওড়া ও কলকাতায় মুরগির মাংস বা ডিম নিয়ে যাওয়াও বন্ধ করে দেবেন। সংগঠনের সম্পাদক প্রতাপ ঘোষ, সভাপতি কানাইলাল সাউয়েরা জানান, হাওড়া বা কলকাতায় এক ট্রাক মুরগি পাঠাতে পুলিশকেই তোলা দিতে হয় প্রায় তিন হাজার টাকা। এমনিতেই পোলট্রি উৎপাদনকারী বিভিন্ন সংস্থা নানা ভাবে সমস্যা তৈরি করে। তার উপর কোনও কারণ ছাড়া রাস্তার মাঝে, বিভিন্ন মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ টাকা দাবি করেন। কিছু ক্ষেত্রে টাকা চাওয়ার দাবি মাত্রা ছাড়ায়। যা দিতে গেলে ব্যবসায় ক্ষতি ছাড়া লাভের মুখ দেখা সম্ভব নয়। তাঁদের কথায়, “এই জন্যই সংগঠন তৈরি করতে বাধ্য হয়েছি। সংগঠনের পক্ষ থেকে এবার মুখ্যমন্ত্রীকেও বিষয়টি জানাব। তারপর রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা। তাতেও কাজ না হলে হাওড়া ও কলকাতাতে মুরগি বা ডিম নিয়ে যাওয়ায় বন্ধ করে দেব।”
মেদিনীপুর শহরের একটি হোটেলে এ দিন নতুন সংগঠনের বৈঠকও হয়। যেখানে রাজ্যের অন্য ১০-১২টি জেলার প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। অন্য জেলাতেও এই ধরনের সংগঠন তৈরির উপর জোর দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। প্রতাপবাবুর কথায়, “এই সমস্যা শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নয়, সারা রাজ্যের সমস্যা। তাই রাজ্য জুড়েই সংগঠনের বিস্তার করা হবে। রাজ্য জুড়েই আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও এই হয়রানি হয়নি এমন নয়। সম্প্রতি কোতয়ালি থানা এলাকার ধেড়ুয়ার কাছে একটি মুরগির গাড়ি আটকে টাকা দাবি করেছিল পুলিশ। তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরে জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের কাছে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা। তাঁর হস্তক্ষেপে সে যাত্রা রেহাই মিললেও এটা একেবারেই শেষ হয়ে গিয়েছে এমন নয়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এই জেলায় পুলিশের জুলুম কিছুটা কমলেও একেবারে কমেনি। আর অন্যান্য জায়গায় তো আগের মতোই রয়েছে। বরং উত্তরোত্তর তা বাড়ছে। তাই এবার সকলকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসতে তৎপর হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শুধু একটা জেলা নয়, সারা রাজ্য জুড়েই সংগঠন তৈরি করে পুলিশি জুলুমের বিরুদ্ধে আন্দোলনের তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন ট্রেডার্সরা।