একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবি জানাতে এসে পঞ্চায়েত অফিসে ভাঙচুর ও পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে এক নির্দল গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না ব্লকের শ্রীকণ্ঠা পঞ্চায়েত অফিসে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নির্দল পঞ্চায়েত সদস্য সহদেব মাইতি-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ময়না থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান। পুলিশ জানিয়েছে, পঞ্চায়েত অফিসে ভাঙচুর করার বিষয়ে এক পঞ্চায়েত সদস্য-সহ কয়েক জনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়না ব্লকের শ্রীকণ্ঠা গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বৃন্দাবনচক গ্রামের নির্দল পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছেন সহদেব মাইতি। বৃন্দাবনচক গ্রামে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে শ্রমিকদের কাজের পারিশ্রমিক বকেয়া রয়েছে। একশো দিনের কাজে নিযুক্ত সেই শ্রমিকদের নিয়ে সহদেববাবু বকেয়া টাকা চাওয়ার দাবি জানাতে এ দিন দুপুরে শ্রীকণ্ঠা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে আসেন। কিন্তু এ দিন পুরুনো একটি মামলার কাজে পঞ্চায়েত প্রধান সরস্বতী বাইচার ও উপ-প্রধান মদনমোহন ভৌমিক তমলুকে আসায় পঞ্চায়েতে ছিলেন না। পঞ্চায়েত অফিসে এসে প্রধান, উপ-প্রধানের খোঁজ করে না পাওয়ায় সহদেববাবু ও তাঁর সঙ্গে আসা প্রায় ৬০ জনের বেশি শ্রমিক সেখানে বিক্ষোভ শুরু করেন। অভিযোগ, এরপরই সহদেববাবুর নেতৃত্বে ওই লোকজন গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরে ঢুকে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে, গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত থাকা তাঁর ছিড়ে দেন।
ওই গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে আসা পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী নিতাই বাইচারকে ধরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে স্থানীয়েরা ছুটে এলে সহদেব ও তাঁর সঙ্গে আসা লোকজন চম্পট দেয়। পরে সন্ধ্যায় পঞ্চায়েত প্রধান ময়না থানায় গিয়ে সহদেববাবু-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত অফিসের আসবাব ভাঙচুরের অভিযোগ দায়ের করেন। নিতাইবাবুকে মারধরের অভিযোগও দায়ের করা হয়। পঞ্চায়েত প্রধান সরস্বতী বাইচার বলেন, “একশো দিনের কাজ করানোর ক্ষেত্রে সহদেববাবুর বিরুদ্ধে অনিয়ম করার অভিযোগ রয়েছে। এ দিন তাই পরিকল্পিত ভাবে একাংশ গ্রামবাসীকে নিয়ে এসে পঞ্চায়েত অফিসে ভাঙচুর করেছে।”
সহদেববাবু অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “শ্রমিকদের একশো দিনের কাজ করানোর প্রায় এক বছর পরও টাকা দেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে অনেকের সঙ্গে টাকার দাবি জানাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু প্রধান, উপ-প্রধান না থাকায় আমরা ফিরে আসি।” তিনি পঞ্চায়েত অফিসে ভাঙচুর ও প্রধানের স্বামীকে মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।