স্বাধীনতা সংগ্রামী কুমারচন্দ্র জানার ১২৫ তম জন্মবার্ষিকীতে পূর্ণাবয়ব মূর্তির উদ্বোধনে এসে শুভেন্দু অধিকারী বললেন, “মেদিনীপুরের মানুষ মাথানত, তোষামোদি করতে জানেন না। আমিও মাথা নত, তোষামোদি করিনি। করলে হয়তো আমার আরও পদপ্রাপ্তি হত।”
শুক্রবার সন্ধেয় হলদিয়ার গিরিশ মোড়ে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যের পরই জেলার রাজনৈতিক মহলে শোরগোল ওঠে। হঠাৎ কেন এমন কথা বলছেন শুভেন্দু? তা হলে কি মাস ছ’য়েক আগে যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষোভ এ দিন উগরে দিলেন শুভেন্দু। তমলুকের নেতা নিজেই সেই জল্পনায় জল ঢেলেছেন। অনুষ্ঠান শেষে তিনি বলেন, “স্বাধীনতা সংগ্রামী বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের কথা বলতে গিয়ে মাথা নত না করার কথা বলেছি। এর মধ্যে বিতর্ক খোঁজার কিছু নেই!”
গত বুধবারই শেষ হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দু’দিনের প্রশাসনিক সফর। সেই সফরে শুভেন্দুকে বরাবরই মমতার সঙ্গে দেখা গিয়েছে। গত বুধবার দিঘার সৈকতাবাস থেকে হেলিকপ্টারে হলদিয়ায় পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে কপ্টারে ছিলেন শুভেন্দুও। তবে সাংসদ তাঁর মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ায় যাবতীয় বিতর্কের অবসান হয়েছে।
শুভেন্দু এ দিন বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, “বীরেন্দ্রনাথ শাসমল কারও কাছে মাথা নত করেননি।” এ দিন গিরিশ মোড়ে স্বাধীনতা সংগ্রামী কুমারচন্দ্র জানা সোস্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত সভায় অন্যদের মধ্যে ছিলেন হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল-সহ অন্যেরা। শুভেন্দুবাবুর কাছে ওই সংস্থার পক্ষ থেকে মেচেদা-হলদিয়া ভায়া তমলুক রাস্তা কুমারচন্দ্র জানার নামে করার বিষয়ে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করা হয়।
শুভেন্দুু বলেন, “তাম্রলিপ্ত সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস থেকে শুরু করে মাতঙ্গিনী হাজরার মৃত্যু দিবসকে সরকার স্বীকৃতি দেয়নি। ওই দিনগুলিতে সরকারি ভাবে কাউকে ফুল বা মালা নিয়ে যেতে দেখা যায় না। সুশীল ধাড়াকে কিছু দিন দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। তাঁর মৃত্যুর দিনে প্রণব মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রাজ্যের প্রতিনিধি হিসাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এসেছিলেন। তবে বিডিও থেকে শুরু করে এসডিও, ডিএম-কে আসতে দেখিনি।” তাঁর কথায়, “স্থানীয় ভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্ম-মৃত্যু দিন থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিন পালন করি, সে ভাবে স্থানীয় স্তরে পালন করবো। অন্যের দয়ার জন্য অপেক্ষা করবো না।”