প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা

পশ্চিমে রাস্তা সংস্কারে বরাদ্দ ১১ কোটি

প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি রাস্তাগুলি বেহাল হয়ে গিয়েছিল। এ বার সেই রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগী হল প্রশাসন। এ রকম ৬২টি রাস্তা সংস্কারের জন্য অর্থ চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৩১টি রাস্তা সংস্করের জন্য অর্থও বরাদ্দ করেছে সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, “৩১টি রাস্তার জন্য প্রায় ১১ কোটি টাকা এসেছে। দ্রুত রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:২০
Share:

প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি রাস্তাগুলি বেহাল হয়ে গিয়েছিল। এ বার সেই রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগী হল প্রশাসন। এ রকম ৬২টি রাস্তা সংস্কারের জন্য অর্থ চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৩১টি রাস্তা সংস্করের জন্য অর্থও বরাদ্দ করেছে সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, “৩১টি রাস্তার জন্য প্রায় ১১ কোটি টাকা এসেছে। দ্রুত রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।” দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার পার্থসারথী শীল বলেন, “রাস্তা সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ বার দ্রুত ওয়ার্ক অর্ডার দিয়ে দেওয়া হবে।”

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি রাস্তাগুলি প্রথম পাঁচ বছর রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব থাকে ঠিকাদারের উপরে। কিন্তু তারপরে রাস্তা খারাপ হলে? তার দায়িত্ব এসে বর্তায় রাজ্য সরকারের উপরেই। পাঁচ বছর পেরিয়ে যাওয়া বহু রাস্তা রয়েছে জেলায়। সেই সব রাস্তা ভারী যানবাহনের চাপে, বর্ষার বৃষ্টিতে খারাপ হয়ে গিয়েছে। এমন অনেক রাস্তা রয়েছে যেখানে পিচ বলে কিছু নেই। এবড়োখেবড়ো রাস্তায় চলা দুরূহ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষত, বৃষ্টি হলে রাস্তায় কোথায় খানাখন্দ তা বোঝার উপায় থাকে না। না জেনে বড় গর্তে পড়লে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থেকে যায়। এই পরিস্থিতিতে রাস্তাগুলি সংস্কার খুবই জরুরি। সংশ্লিষ্ট সব এলাকা থেকেই রাস্তা সংস্কারের জন্য দাবিও উঠেছিল।

পরিস্থিতি দেখে জেলা প্রশাসন খারাপ রাস্তার তালিকা তৈরি করে। খড়্গপুর-১ ব্লকের পড়াডিহা থেকে জঙ্গলকুড়চি, শঙ্করচক রেলগেট থেকে গোপালী রূপনারায়ণপুর, মেদিনীপুর সদর ব্লকের ফুলপাহাড়ি থেকে বেনাশুলি, নারায়ণগড় ব্লকের নারায়ণগড় থেকে বড়মাসান্তপুর সহ জেলার ৬১টি রাস্তার বিভিন্ন জায়গাতেই খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। সেই তালিকা তৈরি করে রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়। তারপরই প্রাথমিক ভাবে ৩১টি রাস্তা সংস্কারের টাকা পাঠিয়েছে সরকার। রাস্তাগুলি সংস্কারের জন্য ১২ কোটি ৪ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা প্রয়োজন বলে প্রশাসন জানিয়েছিল। যদিও প্রথম ধাপে প্রায় ১০ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা পেয়েছে জেলা। ওই টাকায় এ বার দ্রুত গতিতে কাজও শুরু করে দেওয়া হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

Advertisement

এ দিকে, ঠিকাদার না মেলায় বরাদ্দ পেলেও কাজ সে ভাবে এগোচ্ছিল না। তাই নতুন রাস্তা করতে সরকারি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পিছনের কয়েক’টি বছরে পড়ে থাকা রাস্তাগুলির কী হবে?

২০০৯ সালে বরাদ্দ পাওয়া রাস্তার মধ্যে ৭টি রাস্তার কাজ এখনও করা যায়নি। তার মধ্যে সবং ও পিংলা ব্লকের ২টি করে চারটি রাস্তা, ডেবরা, নারায়ণগড় ও বিনপুর-২ ব্লকের একটি করে রাস্তা রয়েছে। প্রায় ৪৭ কিলোমিটার রাস্তা। বর্তমানে সেই রাস্তাগুলি তৈরির জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ বার অবশ্য দু’টি রাস্তার জন্য ঠিকাদারও মিলেছে। সবংয়ের বলপাই থেকে ঝাপাড়া ও ডেবরার চণ্ডীপুরের মুসলিম পাড়া থেকে বুড়াগেড়িয়া। রাস্তা দু’টির কাজ শীঘ্রই শুরু হয়ে বলেও প্রশাসন জানিয়েছে। এ ছাড়াও ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে পাওয়া রাস্তার মধ্যেও ১৫টি রাস্তার কাজ করা যায়নি। যার মধ্যে দাঁতন-২ ব্লকের ২টি, দাসপুর-২ ব্লকের ৪টি, পিংলার ২টি, নারায়ণগড়ের ২টি ও ঝাড়গ্রাম, খড়্গপুর-২, মেদিনীপুর সদর, বিনপুর-২, চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের ১টি করে রাস্তা রয়েছে।

এক্ষেত্রেও চারটি রাস্তার কাজের জন্য ঠিকাদার মিলেছে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে বেলপাহাড়ি থেকে চাকাডোবা (৩.৩২ কিমি), গোকুলপুর থেকে শ্রীকৃষ্ণপুর (৫.২৪২ কিমি), ঝাড়গ্রাম থেকে মানিকপাড়া (১৫ কিমি), মকরামপুর থেকে কেশিয়াড়ি (১১.২৪২ কিমি)। দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, “রাস্তাগুলি যাতে তৈরি করা যায় সে জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। সব ক্ষেত্রে একশ শতাংশ সাফল্য মিলবেই এমন না-ও হতে পারে। যতগুলি ক্ষেত্রে সাফল্য মিলবে সেই এলাকার মানুষ উপকৃত হবেন। এই লক্ষ্যেই আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন