ছাঁটাই হওয়া ঠিকা শ্রমিকদের আন্দোলনের জেরে হলদিয়ার পাইপ তৈরির কারখানায় ফের বন্ধ হল উৎপাদন। ‘লালবাবা সিমলেস টিউবস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে ওই কারখানার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে সোমবার দুপুর থেকে। মঙ্গলবারও জট কাটেনি। সমস্যা সমাধানে কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং আন্দোলনকারী শ্রমিক, দু’পক্ষই হলদিয়ার উপশ্রম কমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছেন। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের তরফে সোমবারই উপ-শ্রম কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। আর মঙ্গলবার মালিকপক্ষের তরফে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, হয় সমস্যা মেটানো হোক, না হলে ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝোলানোর অনুমতি দেওয়া হোক। আজ, বুধবার দু’পক্ষের সঙ্গে আলাদা ভাবে বৈঠকে বসবেন উপ-শ্রম কমিশনার।
নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই সমস্যা চলছে হলদিয়ার এই কারখানায়। গত ১ জানুয়ারি থেকে ৩৮ জন ঠিকাশ্রমিককে ছাঁটাই করে মালিকপক্ষ। ঠিকাদার সংস্থাগুলি ফোন করে ওই ৩৮ জনকে সে দিন থেকেই কাজে আসতে নিষেধ করে। এর পরেই ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। কোনও শ্রমিক সংগঠনের পতাকা নিয়ে আন্দোলন না হলেও এতে আইএনটিটিইউসি-র সমর্থন ছিল। ফ্যাক্টরি ম্যানেজার বিনোদকুমার মিশ্র এ দিন জানান, মন্দার কারণে কারখানার কাজ কমে গিয়েছে। তাই ঠিকাদারদের নোটিস দিয়ে ৩৮ জন কর্মীকে ছাটাই করা হয়েছে। অভিযোগ, ছাঁটাই হওয়া কিছু কর্মীকে নিয়ে স্থানীয় কিছু লোকজন কারখানার গেট ঘেরাও করে বাকি কর্মীদের কারখানায় ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন। তাঁদের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। এর জেরে আগেও উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের মধ্যস্থতায় ফের কারখানার কাজ শুরু হয়েছিল।
বিনোদবাবুর অভিযোগ, “ফের সোমবার দুপুর থেকে আমাদের কর্মীদের কারখানায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ফলে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমরা এ দিন শ্রম দফতরে চিঠি দিয়ে পুরো ঘটনা জানিয়েছি। সমস্যার সমাধান না হলে কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব বলে জানিয়ে দিয়েছি।” আইএনটিটিইউসি-র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কার্যকরী সভাপতি শিবনাথ সরকার এ দিন বলেন, “অবস্থান প্রত্যাহার করার কথা বলেছি। আজ, বুধবার এ নিয়ে শ্রম দফরে আলোচনা হবে।” হলদিয়ার উপ-শ্রম কমিশনার মিহির সরকার জানিয়েছে, ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা তাঁদের দাবিদাওয়া জানিয়ে তাঁকে চিঠি দিয়েছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষও তাঁদের চিঠি দিয়েছেন। আজ, বুধবার দু’পক্ষের সঙ্গেই বৈঠক করবেন তিনি।
ওই কারখানায় তৃণমূল কংগ্রেসের দুটি শ্রমিক সংগঠন ছাড়াও অন্য কোনও সংগঠন নেই। আন্দোলনকারী শ্রমিকদের তরফে বিকাশচন্দ্র ঘোড়ই বলেন, “আমরা ছাঁটাই কর্মীদের পুনরায় নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করছি। যতদিন না তাঁদের কাজে বহাল করা হচ্ছে, আন্দোলন চলবে।”