জেলাশাসকের অফিসের সামনে বিজেপির বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তভার কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে বৃহস্পতিবার রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল বিজেপি। মেদিনীপুর শহরে বিজেপির এই বিক্ষোভ থেকে জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়-সহ ৭৪ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে অবশ্য সকলকেই ব্যক্তিগত বন্ডে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুপুরে মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে তাঁদের খাওয়ারও ব্যবস্থা করা হয় পুলিশের উদ্যোগে, যা সচরাচর দেখা যায় না।
এই ঘটনায় পুলিশের আচরণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি তুষারবাবু বলেন, “পুলিশ পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। আমরা মিছিল করে কালেক্টরেট মোড়ে গিয়েছিলাম। সেখান থেকেই পুলিশ আমাদের ধরে পুলিশ লাইনে নিয়ে যায়।” তাঁর মতে, “কালেক্টরেট মোড়ে আমাদের বক্তব্য রাখার কথা ছিল। সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কী ভাবে বাংলায় নাশকতার ছক কষছে তৃণমূল, তাই আমরা মানুষকে বলতাম। পুলিশ চায়নি এটা আমরা বলি।”
পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “বিক্ষোভ কর্মসূচির জন্য অনুমতি নেওয়া হয়নি। মেদিনীপুর শহরে কর্মসূচি হবে, অথচ পুলিশকে জানানো হবে না? আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখা পুলিশের কাজ। পুলিশ সেটাই করেছে।” বিজেপির জেলা সভাপতি তুষারবাবুর অবশ্য দাবি, “এই কর্মসূচির জন্য কোতয়ালি থানায় গিয়ে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। পুলিশ অনুমতি দেয়নি। পরিস্থিতি দেখে আমরা পুলিশ সুপারের কাছে ই-মেলও পাঠিয়েছিলাম।”
এ দিন মেদিনীপুরে বিজেপির জেলা কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। নেতৃত্বে ছিলেন জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়, দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বাবলু বরম, ধীমান কোলে, দলের শহর সভাপতি অরূপ দাস, যুব মোর্চার জেলা সভাপতি শুভজিত্ রায় প্রমুখ। শহরের বিভিন্ন পথ ঘুরে মিছিল পৌঁছয় জেলাশাসকের দফতরের সামনে কালেক্টরেট মোড়ে। এখানে বিক্ষোভ কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল। আগেই সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। তুষারবাবু-সহ ৭৪ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ গাড়িতে করে এঁদের মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়। বেলা বারোটা থেকে সকলে পুলিশ লাইনে ছিলেন। দুপুরে সেখানেই সকলের খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, যেহেতু দুপুরে সকলে পুলিশ লাইনে ছিলেন, তাই খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বিকেল চারটে নাগাদ ব্যক্তিগত বন্ডে সকলকেই ছেড়ে দেওয়া হয়।