স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও এক সহশিক্ষকের মধ্যে গণ্ডগোলের মীমাংসা করতে বৈঠক ডাকার জন্য স্কুল ছুটি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার হলদিয়ার মহিষাদলের গোপালপুর হাইস্কুলের ছুটি দেওয়ায় দশম শ্রেণির পূর্ব নির্ধারিত জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষাও স্থগিত হয়ে যায়। স্কুলে এসেও পরীক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরে যায়। এ দিন স্কুলের কয়েকটি শ্রেণিতে প্রথম ক্লাস হওয়ার পর দুপুর ১২টা নাগাদ স্কুলে ছুটির নোটিস দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার ওই স্কুলের ভিগোল শিক্ষক চন্দন দাস প্রধান শিক্ষক শিবাজি বেরার কাছে আয়কর সংক্রান্ত একটি ফর্ম চান। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। চন্দনবাবুর অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক তাঁকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। রাতেই চন্দনবাবু মহিষাদল থানায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পূরবী নন্দীর কাছেও তিনি অভিযোগ জানান। বুধবার বিশ্বকর্মা পুজোর কারণে স্কুল ছুটি ছিল। তাই বৃহস্পতিবার স্কুল খুলতেই তাঁদের মধ্যে সমস্যার মীমাংসা করতে স্কুল পরিচালন সমিতির বৈঠক বসে। বৈঠকের কারণে নোটিস দিয়ে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্কুল ছুটির খবর পেয়ে অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের নিতে স্কুলে ছুটে আসেন। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। চন্দন দাস বলেন, “প্রধান শিক্ষক শিবাজীবাবু আমাকে লাঠি দিয়ে মারেন। সেই ঘটনার মীমাংসা করতেই এই বৈঠক ডাকা হয়।”
কিন্তু স্কুল ছুটি দিয়ে ওই বৈঠক ডাকা হয়েছে কেন? চন্দনবাবু ওই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারননি। প্রধান শিক্ষক শিবাজিবাবু বলেন, “রাগারাগির কারণে এমন ঘটনা ঘটে গিয়েছে।” তবে স্কুল ছুটি দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক বলেন, “দুপুর দু’টো থেকে দশম শ্রেণির পরীক্ষা ছিল। কিন্তু দুপুর ১২টায় বৈঠক হওয়ায় স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।” ওই ঘটনার প্রসঙ্গে মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, “স্কুল ছুটি দেওয়ার মতো কোনও কারণ হয়নি।” জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পূরবী নন্দী বলেন, “ওই স্কুলের এক শিক্ষক আমার কাছে অভিযোগ করেছিলেন। ঘটনার তদন্তের আগেই এভাবে স্কুল ছুটি দিয়ে বৈঠক করার যুক্তি নেই।” কেন স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছে, তার কারণ জানতে চাওয়া হবে বলেও তিনি জানান।