বৈঠক শেষে অচলাবস্থা অবশেষে কাটার ইঙ্গিত মলিহাটি পঞ্চায়েতে

নিকাশি সমস্যার সমাধানে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত হিউম পাইপের মুখ খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন মহকুমাশাসক। অচলাবস্থা কাটাতে সোমবার ডেবরা ব্লক অফিসে মলিহাটি এবং গোলগ্রামের সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধান, উপ-প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেন মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতি, বিডিও জয়ন্ত দাস প্রমুখ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:২৫
Share:

নিকাশি সমস্যার সমাধানে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত হিউম পাইপের মুখ খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন মহকুমাশাসক। অচলাবস্থা কাটাতে সোমবার ডেবরা ব্লক অফিসে মলিহাটি এবং গোলগ্রামের সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধান, উপ-প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেন মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতি, বিডিও জয়ন্ত দাস প্রমুখ। গত ১৩ অগস্ট থেকে নিকাশি সমস্যার সমাধানের দাবিতে টানা আট দিন পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ করে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন মলিহাটির বাসিন্দারা। বিডিও’র আশ্বাসে তখন অবস্থান উঠে যায়। তবে তারপরেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ফের পঞ্চায়েত অফিসে অবস্থানে বসেন গ্রামবাসীরা। তাই এ দিন সমস্যা সমাধানে বৈঠক ডেকেছিলেন মহকুমাশাসক।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁসাই নদী সংলগ্ন এই মলিহাটি অঞ্চল নিচু হওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরেই নিকাশির সমস্যা জেরবার স্থানীয় বাসিন্দারা। মূলত ভবানীপুর, গোলগ্রাম-সহ বেশকিছু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নির্গত জল এই মলিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ওপর দিয়ে মাঝভাণ্ডার খাল থেকে ভসরার খাল হয়ে কাঁসাই নদীতে গিয়ে পড়ে। মলিহাটির বাসিন্দাদের দাবি, গোলগ্রাম অঞ্চলের পশ্চিম দিক অর্থাৎ বড়গেড়িয়া, কাঁটাগেড়িয়া, কুল্যা গ্রামের দিক থেকে তাঁদের অঞ্চলে বর্ষায় জল ঢুকছে। নিয়ম অনুযায়ী, নিচুর দিকে জল বয়ে ফের গোলগ্রাম অঞ্চলের পূর্বদিকে চকপলমল, চকপ্রয়াগ, খাজুরি হয়ে ভসরার খালে গিয়ে জল পড়ার কথা। অভিযোগ, গোলগ্রাম অঞ্চলের পূর্বদিকের ওই গ্রামগুলি হিউম পাইপের মুখ বন্ধ রাখায় মলিহাটি অঞ্চলেই জল আটকে যাচ্ছে। আবার বীরপুর মৌজার কাছে মাঝভাণ্ডার খাল বরাবর বাঁধ দিয়ে দেওয়ায় জলে সে দিক দিয়েও বের হতে পারছে না। এ দিকে গোলগ্রামের পূর্ব অংশের বাসিন্দাদেরও পাল্টা দাবি, হিউম পাইপ খুলে দিলে বা বাঁধ ভেঙে দিলে এলাকা ভেসে যাবে।

নিকাশি সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দেন মলিহাটির বাসিন্দারা। মলিহাটির বাসিন্দাদের লাগাতার আন্দোলনে পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ থাকায় সমস্যা তৈরি হয়। সমস্যা সমাধানে গোলগ্রাম ও মলিহাটির প্রধান, উপ-প্রধান ও সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নেয় মহকুমাশাসক। এ দিন দীর্ঘক্ষণ বৈঠক চলার পরে এই সমস্যা মেটাতে মাস্টার প্ল্যান গড়ার চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বাস দেন মহকুমাশাসক। তবে যে অংশে হিউম পাইপ বন্ধ হয়ে আছে সেগুলি খুলে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেন তিনি। মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “আমি ওই আটকে থাকা পাইপের মুখগুলি খুলে দিয়ে জল বের করতে হবে বলে জানিয়েছি। তাতে সকলে সম্মত হয়েছেন। তবে মাস্টার প্ল্যান করা যায় কি দেখতে, আমি পুজোর আগেই সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে ওই এলাকা পরিদর্শনে যাব বলে জানিয়েছি।” এই বৈঠকের পরে গোলগ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান প্রতিমা মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের অংশে সমস্যা খুব একটা ছিল না। যদি হিউম পাইপের মুখ খুলে দিলে সকলের উপকার হয়, সেটা দেখতে হবে। তবে গোলগ্রামের মানুষ যাতে অসুবিধায় না পড়েন সেটিও মাথায় রাখতে হবে।” যদিও এ দিনের বৈঠকের পরে অবস্থান আন্দোলনে থাকা জহর বারিক, রঞ্জিত পাল, সুশীলকুমার পাত্ররা বলেন, “জল বেরিয়ে গেলেই আমরা অবস্থান তুলে নেব। তার আগে নয়।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন