মলিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত

বিডিওর হস্তক্ষেপই সার, উঠল না বিক্ষোভ-অবস্থান

নিকাশি সমস্যা নিয়ে জটিলতায় অবস্থান তুলতে গিয়েও পিছু হটলেন। ফলে অচলাবস্থা কাটল না মলিহাটি পঞ্চায়েত অফিসে। বুধবার একইভাবে মলিহাটি পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ করে অবস্থান-বিক্ষোভ সামিল থাকলেন গ্রামবাসী। দ্বিতীয় দফায় তিন দিন ধরে চলা অবস্থান মঞ্চে এসে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেও রফাসূত্র না মেলায় ফিরে গেলেন বিডিও জয়ন্ত দাস। এর আগে গত ১৩ অগস্ট থেকে টানা ৮দিন ধরে বিক্ষোভ চলার পরে নিকাশির সমাধানে বিডিও আশ্বাস দেওয়ায় উঠেছিল অবস্থান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৪৪
Share:

নিকাশি সমস্যা নিয়ে জটিলতায় অবস্থান তুলতে গিয়েও পিছু হটলেন। ফলে অচলাবস্থা কাটল না মলিহাটি পঞ্চায়েত অফিসে।

Advertisement

বুধবার একইভাবে মলিহাটি পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ করে অবস্থান-বিক্ষোভ সামিল থাকলেন গ্রামবাসী। দ্বিতীয় দফায় তিন দিন ধরে চলা অবস্থান মঞ্চে এসে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেও রফাসূত্র না মেলায় ফিরে গেলেন বিডিও জয়ন্ত দাস। এর আগে গত ১৩ অগস্ট থেকে টানা ৮দিন ধরে বিক্ষোভ চলার পরে নিকাশির সমাধানে বিডিও আশ্বাস দেওয়ায় উঠেছিল অবস্থান। তবে আশ্বাস পূরণ না হওয়ায় গত সোমবার থেকে ফের অবস্থান শুরু করেছেন মলিহাটির গ্রামবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁসাই নদী সংলগ্ন এই মলিহাটি অঞ্চল তুলনায় নিচু হওয়ায় কয়েক দশক ধরেই নিকাশির সমস্যা রয়েছে। মূলত ভবানীপুর, গোলগ্রাম-সহ বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নির্গত জল এই মলিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ওপর দিয়ে ভসরার খাল হয়ে কাঁসাই নদীতে গিয়ে পড়ে। মলিহাটির গ্রামবাসীর দাবি, গোলগ্রাম অঞ্চলের পশ্চিম দিক অর্থাৎ বড়গেড়িয়া, কাঁটাগেড়িয়া, কুল্যা গ্রামের দিক থেকে বর্ষায় জল ঢুকছে তাঁদের অঞ্চলে। নিয়ম অনুযায়ী, নিচুর দিকে জল বয়ে ফের গোলগ্রাম অঞ্চলের পূর্বদিকে চকপলমল, চকপ্রয়াগ, খাজুরি হয়ে ভসরার খালে গিয়ে পড়ে জল। কিন্তু অভিযোগ, গোলগ্রাম অঞ্চলের পূর্বদিকের ওই গ্রামগুলি হিউম পাইপের মুখ বন্ধ রাখায় জল আটকে যাচ্ছে মলিহাটি অঞ্চলেই। আবার বীরপুর মৌজার কাছে মাঝভাণ্ডার খাল বরাবর বাঁধ দিয়ে দেওয়ায় জলে সে দিক দিয়েও বেরতো পারছে না। এ দিকে নিচু এলাকার বাসিন্দাদেরও পাল্টা দাবি, হিউম পাইপ খুলে দিলে বা বাঁধ ভেঙে দিলে ভেসে যাবে তাঁদের এলাকাও।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে বহুবার পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, ব্লক প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসনে জানিয়েও সুফল মেলেনি। এ দিকে বর্ষা বাড়তেই জল জমে থাকায় সমস্যায় পড়ছেন মলিহাটির চাষিরা। তাই তাঁরা বাধ্য হয়েই আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছেন বলে তাঁদের দাবি। এ দিকে দীর্ঘদিন ধরে পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়ছেন পঞ্চায়েত অফিসে কাজে আসা সাধারণ মানুষ। এ দিন অবস্থান তুলতে এলাকা পরিদর্শনের পরে পুলিশ নিয়ে হাজির হন বিডিও। মাঝভাণ্ডার খালের একটি হিউম পাইপ বসিয়ে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে অবস্থান তুলে নেওয়া অনুরোধ জানান তিনি। কিন্তু আন্দোলনকারীদের তরফে সুশীলকুমার পাত্র, দিবাকর মণ্ডলেরা বলেন, “একটি হিউম পাইপ বসিয়ে সমস্যা মেটানো সম্ভব নয়। তাই আমরা সুষ্ঠু ও স্থায়ী নিকাশির দাবি নিয়ে অবস্থান চালিয়ে যাব।” আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণ করতে না পেরে এ দিন পিছু হটেন বিডিও। পরে বিডিও জয়ন্ত দাস বলেন, “এভাবে পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ করে রাখাটা আন্দোলনের সঠিক পথ নয়। তাই অবস্থান তুলতে আপাতত একটি হিউম পাইপ বসাব বলেছিলা।ম কিন্তু ওঁরা চাইছেন স্থায়ী বন্দোবস্ত। সেটি সেচ দফতরের বিষয়। তা নিয়ে কথাও চলছে। কিন্তু এখনই তো সেটি সম্ভব নয়।” বিষয়টি তিনি মহকুমাশাসককে জানিয়েছেন বলেও জানান। এ বিষয়ে মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “আমি আগামী ৮ সেপ্টেম্বর সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধানদের নিয়ে বৈঠক ডাকতে বলেছি। বিডিওকে আমি নিজে উপস্থিত থেকে সমাধানের চেষ্টা করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন