এ যেন টোপ দিয়ে শিকারিকেই জালে ফেলা!
মোটা টাকা লগ্নি করতে চান বলে একটি বেসরকারি বিমা সংস্থাকে জানিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের এগরার এক ব্যক্তি। সেই মতো ওই বিমা সংস্থার কলকাতা অফিস থেকে এগরায় পাঠানো হয় তাদের কর্মী এক যুবককে। কিন্তু কোনও লগ্নি পাওয়া তো দূরস্থান, উল্টে সেই যুবককেই অপহরণ করে মুক্তিপণ চাইল দুষ্কৃতীরা। আসলে লগ্নি করার কথা বলা ছিল নেহাতই ফাঁদ।
পুলিশ জানায়, বেসরকারি বিমা সংস্থার কর্মী ওই যুবকের নাম অরিত্র পাল। তাঁর বাড়ি আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকায়। অভিযোগ পাওয়ার পরে মামলা রুজু করে তদন্তে নামে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ ও লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখা। সোমবার রাতে অরিত্রের বাবাকে সঙ্গে নিয়ে কয়েক জন পুলিশ অফিসার ও কর্মী আত্মীয়ের ভেক ধরে এগরার এরেন্দা গ্রামে যান। অক্ষত অবস্থায় অরিত্রকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু অপহরণকারীদের এক জনকেও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করা যায়নি।
লালবাজারের তদন্তকারীদের একাংশ স্বীকার করেছেন, অপহরণকারীদের সঙ্গে রফার মাধ্যমেই অরিত্রকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে গোটা ঘটনায় গোয়েন্দারা কিছু অসঙ্গতিও পেয়েছেন এবং সে জন্য সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, অপহরণে জড়িত হিসেবে কয়েক জনের নাম উঠে এসেছে, তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এগরার একটি ঠিকানা, ইচ্ছুক লগ্নিকারীর নাম ও ফোন নম্বর দিয়ে শনিবার সকালে বিমা সংস্থাটি থেকে অরিত্রকে সেখানে যেতে বলা হয়। এগরায় পৌঁছে অরিত্র সেই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখানে ওই ব্যক্তি জানায়, অন্য এক জায়গায় গেলে সে টাকা দিতে পারবে। এর পরেই এগরা থেকে কিছুটা দূরে এরেন্দা বলে একটি গ্রামে নিয়ে যায় অরিত্রকে। অভিযোগ, সেখানেই ওই ব্যক্তি ও তার সঙ্গীরা মিলে অরিত্রকে আটকে রাখে। শনিবার সন্ধ্যায় অরিত্রের বাড়িতে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে বলে পুলিশকে জানানো হয়েছে।
এর পরেই অরিত্রের বাড়ির লোকজন আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ জানান। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার রাতে থানা ও গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারেরা অরিত্রের বাবাকে নিয়ে এগরা যান। অপহরণকারীদের ডেরা থেকে উদ্ধার হন অরিত্র।