হলদিয়ায় দুর্গাচকের পুজোয় আলোর গেট।—নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাচক থেকে সিটি সেন্টার- বাহারি মণ্ডপ, চন্দননগরের আলোয় বিশ্বকর্মা আরাধনায় মাতল শিল্পশহর। শারদোত্সবের ঢাকে কাঠি পড়ার অপেক্ষা শেষের পথে। তার আগে বুধবার রকমারি বিশ্বকর্মার মণ্ডপ দেখতে রাতভর ঢল নামে দর্শণার্থীদের।
দুর্গাচকের ট্যাঙ্কার ওনার্স সংস্থার পুজোর আলোয় ফুটে উঠেছে আগ্রার তাজমহলের প্রতিকৃতি। পুজো মণ্ডপে লাগানো হয়েছে ২৮০ বাতির ঝাড়লন্ঠন। যা দেখতে মণ্ডপে উপচে পড়ছে ভিড়। ওই পুজোর উদ্যোক্তা তপন প্রধান জানান, এই ঝাড়লন্ঠনের ভাড়া ৫০ হাজার টাকা। তবে এই ঝাড় দেখে দর্শকদের নজর কাড়ায় ভাল লাগছে। এইচপিএল লিঙ্ক রোডের আলোর সুবিশাল আইফেল টাওয়ারও নজর কাড়ছে।
মণ্ডপে থিমের বৈচিত্রে একে অপরকে টেক্কা দিতে প্রস্তুত পুজো কমিটিগুলি। হুগলি মেট কোক ও টাটা পাওয়ার সংস্থার পুজো মণ্ডপ তৈরি হয়েছে ‘লোটাস টেম্পল’-এর আদলে। বৈচিত্রে পিছিয়ে নেই সিটি সেন্টারও। রেনুকা সুগার সংস্থার প্রতিমা ও মণ্ডপ তৈরি হয়েছে জগন্নাথ দেবের অনুকরণে। মণ্ডপের অবিনবত্বে দর্শকদের ভিড় হচ্ছে ভালই। হলদিয়ার সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ডের পুজো মণ্ডপ তৈরি হয়েছে আদিম যুগের গুহার আদলে। লতায় পাতায় ছাওয়া ওই মণ্ডপে এক অন্য রকম আবহ তৈরি হয়েছে। ইন্ডিয়ান ওয়েল-এর ‘মেনটেন্স ওয়ার্কার’-দের মণ্ডপ যেন আস্ত দেব ভূমি কৈলাস। মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপের প্রবেশ পথ, পারিপার্শ্বিক সজ্জা দর্শকদের মন কাড়ছে। এই কাল্পনিক দেব ভূমিকে কেন্দ্র করে বসেছে মেলা।
হলদিয়া টাউনশিপের সিপিটি কো-অপারেটিভ এর পুজায় এবার বালির প্রতিমা। চোদ্দোটি পুজোর উদ্বোধন করেন তমলুকের সাংসদ তথা হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার শুভেন্দুবাবু বলেন, “প্রতি বছর জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হলদিয়ার শ্রমিকেরা এই ক’টা দিনের দিকে তাকিয়ে থাকেন। সামাজিক ভাবে কিছু ভাল কাজ করার তাগিদ থেকেই হলদিয়ার শ্রমিক -ঠিকাদারেরা পুজোয় সক্রিয় ভূমিকা নেন।” বিভিন্ন পুজো কমিটি শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। মঙ্গলবার হলদিয়া বন্দর শ্রমিক ভবনে শুভেন্দুবাবু বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মৃত শ্রমিকদের পরিবার ও আহত শ্রমিকদের হাতে সাহায্য তুলে দেন। সাহায্য করা হয় এক ক্যানসার আক্রান্ত শ্রমিককেও। বুধবার ইন্ডিয়ান ওয়েল ঠিকাদার পুজো কমিটির উদ্যোগে এক হাজার শ্রমিকের হাতে রেনকোট তুলে দেওয়া হয়। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। একটি ভোজ্য তেল সংস্থার পুজোয় পুজো কমিটির পক্ষ থেকে দু’জন দু:স্থ মানুষের হাতে ভ্যান রিকশা তুলে দেওয়া হয়।