লন্ডভন্ড ঘর।—নিজস্ব চিত্র।
বন্দরের এক আধিকারিকের আবাসনে চুরির ঘটনা ঘটে গেল সোমবার সন্ধ্যায়। রান্নাঘরের জানলা ভেঙে ঢুকে গয়না, দামি জিনিসপত্র নিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। হলদিয়া বন্দরের টাউনশিপের ক্লাস্টার ৪-এর ওই আবাসন থেকে ৩০ গ্রাম সোনার গয়না, বেশ কিছু রুপোর গয়না, একটি ল্যাপটপ, ক্যামেরা, ঘড়ি-সহ নানা জিনিস চুরি গিয়েছে বলে থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছেন বন্দরের মেটিরিয়াল ম্যানেজমেন্টের ম্যানেজার পার্থসারথি ব্রহ্ম। হলদিয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে।
ওই আবাসনে প্রায় ১০ বছর ধরে রয়েছেন পার্থসারথিবাবু। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ তিনি ও তাঁর স্ত্রী শুভ্রাদেবী সংহতি ময়দানে হলদিয়া মেলা দেখতে গিয়েছিলেন। ছেলে রাজর্ষি গিয়েছিলেন বন্ধুর বাড়িতে। আর তাঁদের মেয়ে বেঙ্গালুরুতে পড়াশোনা করেন। ফাঁকা বাড়িতেই চুরির ঘটনাটি ঘটে। দুষ্কৃতীরা মূল দরজা ও পিছনের দরজার তালা ভাঙার চেষ্টা করেও পারেনি। শেষ পর্যন্ত রান্নাঘরের জানলার কাচ ও গ্রিল ভেঙে তারা ভেতরে ঢোকে। রাত পৌনে ন’টা নাগাদ মেলা থেকে ফিরে পার্থসারথিবাবুরা দেখেন, ডাইনিংয়ের আলমারি ভাঙা। জিনিসপত্র সব তছনছ। দোতলার দু’টি ঘরের দু’টি আলমারির তালাও ভাঙা। খোওয়া গিয়েছে গয়না, নগদ ১০ হাজার টাকা, ল্যাপটপ, ক্যামেরা, লকারের চাবি, ঘড়ি, একটি সাউন্ড সিস্টেম, দুই ছেলে-মেয়ের খেলাধুলা ও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জেতা ট্রফি। দোতলার একটি ঘরে রক্তের দাগও মেলে। অনুমান আলমারির তালা ভাঙতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের কারও হাত কেটে যায়।
বন্দরের টাউনশিপ এলাকা সীমানা প্রাচীরে ঘেরা। বিভিন্ন গেটে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন রয়েছে। তারপরেও এমন ঘটনা ঘটায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে। শুভ্রাদেবী বলেন, “মেলায় যাওয়ার সময় আমাদের আবাসনের সামনে তিনটি অপরিচিত ছেলেকে ঘোরাফেরা করতে দেখেছিলাম। এই ঘটনায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।” বন্দরের টাউনশিপের বাসিন্দা দেবিকা রায়েরও বক্তব্য, “আমার ছেলে-মেয়ে বাইরে পড়াশোনা করে। স্বামী অফিসে থাকেন। বেশিরভাগ সময় বাড়িতে একাই থাকি।” টাউনশিপের আর এক বাসিন্দা জয়িতা দাসের কথায়, “টাউনশিপ এলাকায় বহিরাগত লোকজন ঢুকলেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে না। আমরা আতঙ্কে রয়েছি।” টাউনশিপের গেটে থাকা এক নিরাপত্তাকর্মী বলেন, “রাতে কারা ঢুকছেন দেখা হয়।”
তারপরেও সোমবার সন্ধ্যায় দুষ্কৃতীরা কী করে টাউনশিপে ঢুকে পড়ল? পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।