কর্মীদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
ঠিকাকর্মীদের মধ্যে থেকে সুপারভাইজার নিয়োগ, বেতন বৃদ্ধির চুক্তি (সিওডি) করা-সহ একাধিক দাবিতে হলদিয়া বন্দরে পণ্য খালাসের কাজে যুক্ত কয়েকশো ঠিকা শ্রমিক বিক্ষোভ দেখালেন বৃহস্পতিবার। হলদিয়ার রানিচকে ‘ফাইভ স্টার শিপিং এজেন্সি’ নামে ওই ঠিকা সংস্থার অফিসে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। সংস্থার মালিক শেখ মজফ্ফরকে ঘিরেও চলে বিক্ষোভ। পরে তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে দাবিদাওয়া খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়।
ওই সংস্থার প্রায় এক হাজার কর্মী হলদিয়া বন্দরে পণ্য খালাসের কাজে যুক্ত। তার মধ্যে কয়েশো ঠিকাশ্রমিক এ দিন কাজে যোগ না দেওয়ায় পণ্য খালাসের কাজে কিছুটা প্রভাব পড়ে। মজফ্ফরের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা তাঁর সংস্থার জনা ছয়েক কর্মীকে চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি মেরেছে। তবে কারও আঘাতই গুরুতর নয়। বিক্ষোভকারীরা অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বিক্ষোভে সামিল হওয়া ঠিকাকর্মী স্বপন ওঝা, নীলকমল চক্রবর্তীদের অভিযোগ, তাঁদের পিএফ থেকে ইএসআই, গ্র্যাচুইটি কাটা হলেও গত তিন বছর তা জমা পড়ছে না। নানা অজুহাতে কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে। কর্মীদের মধ্যে থেকে পদোন্নতির মাধ্যমে সুপারভাইজার নিয়োগের কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। বাইরের ১০ জনকে সুপারভাইজার পদে নিয়োগ করা হয়েছে। গত ডিসেম্বরে বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত চুক্তি (চাটার্ড অফ ডিমান্ড) হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। সংস্থার ছাঁটাই হওয়া কর্মী ভবানীপুরের আকবর মল্লিক এ দিন বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য, “আমার মতো বেশ কয়েকজনকে অন্যায়ভাবে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
বিক্ষোভে কয়েকটি জাহাজে ও দুটি ওয়াগানে পণ্য খালাসের কাজে দেরি হয়েছে বলে জানান ওই ঠিকা সংস্থার মালিক শেখ মজফ্ফর। ঠিকাকর্মীদের দাবি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “মামলা চলায় আমরা পিএফের টাকা জমা দিতে পারিনি। ইএসআইয়ের টাকা নিয়মিত জমা দেওয়া হচ্ছে। আর সিওডি শীঘ্রই করা হবে।” আর সুপারভাইজার নিয়োগ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “বন্দরের আইএনটিটিইউসি-র শ্রমিক ইউনিয়নের কথামতো ১০ জন নতুন সুপার ভাইজার নিয়োগ করা হয়েছে। বরাবরই শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে কথা বলেই সুপারভাইজার নিয়োগ হয়। কর্মীরা আপত্তি তোলায় আপাতত ওই নিয়োগ স্থগিত করা হল। শ্রমিক ইউনিয়ন ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” আইএনটিটিইউসি নেতা শ্যামল আদকের বক্তব্য, “অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা অর্থের বিনিময়ে কাউকে কোনও দিনই কাজ দিইনি। যারা কাজ পেয়েছেন তাদের জিজ্ঞাসা করে দেখুন না।”