বন্ধুর মৃত্যুসংবাদে আত্মহত্যার চেষ্টা

পথ দুর্ঘটনায় বন্ধুর মৃত্যুর খবর শুনে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক যুবক। সোমবার পিংলার দুজিপুরে গাড়ির ধাক্কায় জখম হয়েছিলেন প্রশান্ত বর্মন (২৪) নামে এক যুবক। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু অলিভ দাস। গুরুতর জখম অবস্থায় প্রশান্তকে পিংলা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানান। বন্ধুর মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতাল ভবনের পাশেই মেডিক্যাল অফিসারদের বন্ধ কোয়ার্টারের দোতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন অলিভ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৪ ০১:১৫
Share:

মেদিনীপুরে বাম প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লিখন।—নিজস্ব চিত্র।

পথ দুর্ঘটনায় বন্ধুর মৃত্যুর খবর শুনে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক যুবক। সোমবার পিংলার দুজিপুরে গাড়ির ধাক্কায় জখম হয়েছিলেন প্রশান্ত বর্মন (২৪) নামে এক যুবক। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু অলিভ দাস। গুরুতর জখম অবস্থায় প্রশান্তকে পিংলা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানান। বন্ধুর মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতাল ভবনের পাশেই মেডিক্যাল অফিসারদের বন্ধ কোয়ার্টারের দোতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন অলিভ। গুরুতর জখম অবস্থায় অলিভ ব্লক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অলিভ ও প্রশান্ত দু’জনেই আলিপুরদুয়ারের সিলবাড়িহাটের বাসিন্দা। বছর তিনেক ধরেই কেরলে তাঁরা রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। শুক্রবার সেখান থেকেই আলিপুরদুয়ারের বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে প্রশান্ত বলেন, “কোট্টায়াম থেকে লোকাল ট্রেনে উঠেছিলাম। পরে চেন্নাই থেকে আবার ট্রেন ধরি। রাতে খাওয়ার পরই পাশে বসা কয়েকজন আমাদের নাকে কেমন গন্ধ দিল। তারপর আমরা ট্রেকারে উঠলাম।” কিন্তু তাঁদের কিছু খোওয়া গিয়েছে কি না তা বলতে পারেননি অলিভ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার সকাল দশটা নাগাদ পিংলার দুজিপুরে ট্রেকার থেকে নেমে ভারসাম্যহীন অবস্থায় হাঁটছিলেন প্রশান্ত ও অলিভ দাস। সেই সময়ই খড়্গপুরগামী একটি ম্যাটাডোরের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন প্রশান্ত। পরে দু’জনকেই স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে ভর্তি করেন পিংলা ব্লক হাসপাতালে। সেখানে মৃত্যু হয় প্রশান্তর। খবর শোনামাত্র হাসপাতাল ভবনের পাশেই মেডিক্যাল অফিসারদের কোয়ার্টারের দোতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন অলিভ। জখম ওই যুবককে ফের ভর্তি করা হয় ব্লক হাসপাতালেই। পরে সংজ্ঞা ফিরলেও তাঁর ঘোর কাটেনি।

Advertisement

অলিভ দাসের ভাই প্রশান্ত বলেন, “আড়াই মাস আগে বাড়ি থেকে কাজে গিয়েছিল ভাই। মনে হচ্ছে ট্রেনে ওদের কেউ কিছু করেছিল।” আর সোমবার বিকাল পর্যন্তও প্রশান্তর বাবা পরেশ বর্মন জানতেন না তাঁর ছেলে আর নেই। পিংলা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অঞ্জন রায় বলেন, “পথ দুর্ঘটনায় বন্ধুর মৃত্যুর খবর জানার পর এক যুবক আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। শুনেছি উন্মত্ত ওই যুবককে আটকে রাখা যাচ্ছিল না। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ওই যুবক মাদকাসক্ত ছিলেন। রিপোর্ট পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।”

তবে ঘটনাটি নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পুলিশ। মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে ট্রেনযাত্রীদের জিনিস লুঠের ঘটনা নতুন কিছু নয়। এই ঘটনায় ওই দুই যুবকের কি খোওয়া গিয়েছে তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কী করেই বা অসুস্থ ওই যুবক পাইপ বেয়ে ছাদে উঠলেন তা নিয়েও ধন্দে পুলিশ। খড়্গপুরের এসডিপিও অজিত সিংহ যাদব বলেন, “ওই দুই যুবক হঠাৎ খড়্গপুরে নামলেন কেন তা পরিষ্কার নয়। অলিভ সুস্থ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আর প্রশান্তর ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে হলে তদন্তের বিষয়ে এগোতে সুবিধা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন