মুগবেড়িয়ায় একই সঙ্গে পূজিত হন কালী ও গৌরাঙ্গ

রামকৃষ্ণদেব বলতেন, কালী ও গৌরাঙ্গ এক। রামকৃষ্ণদেবের সেই ভাবনাকে পাথেয় করেই কাঁথির মুগবেড়িয়ার নন্দ পরিবারের শ্যামা মন্দিরে একই সঙ্গে গৌরাঙ্গ ও কালী পূজিত হয়ে আসছেন। কথিত আছে, শতাব্দী প্রাচীন এই মন্দিরে পুজোর সময় চারণ কবি মুকুন্দ দাস দেশাত্মবোধক গানের আসর বসিয়েছিলেন।

Advertisement

সুব্রত গুহ

মুগবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০১
Share:

নন্দ পরিবারের শ্যামা মন্দিরে কষ্টি পাথরের প্রতিমা।—নিজস্ব চিত্র।

রামকৃষ্ণদেব বলতেন, কালী ও গৌরাঙ্গ এক। রামকৃষ্ণদেবের সেই ভাবনাকে পাথেয় করেই কাঁথির মুগবেড়িয়ার নন্দ পরিবারের শ্যামা মন্দিরে একই সঙ্গে গৌরাঙ্গ ও কালী পূজিত হয়ে আসছেন। কথিত আছে, শতাব্দী প্রাচীন এই মন্দিরে পুজোর সময় চারণ কবি মুকুন্দ দাস দেশাত্মবোধক গানের আসর বসিয়েছিলেন। মুকুন্দ দাসের গান তখন লোকের মুখে মুখে ঘুরত। তাছাড়াও প্রায় দিন সন্ধ্যায় এই মন্দিরে লাঠি খেলার আখড়া বসত। এই ঐতিহ্যবাহী মন্দিরেই শ্যামা মায়ের সামনে চণ্ডীপাঠ করে গিয়েছেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। আজও দূর দূরান্তের বহু লোক এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন।

Advertisement

পুজোর সময় মাকে পঞ্চ ব্যাঞ্জন ও মিষ্টান্ন-সহ নিরামিষ ভোগ দেওয়া হয়। এখানে আমিষ ভোগের প্রচলন নেই। নন্দ পরিবারের সদস্য চৈতন্যময় নন্দ বলেন, “শতাব্দী প্রাচীন এই শ্যামা মন্দিরে কাশীধাম থেকে নৌকাপথে কষ্টিপাথরের মায়ের মূর্তি এনে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই সময় মন্দির প্রতিষ্ঠাতা গঙ্গাধর নন্দের ছেলে বিরজাচরণ নন্দের মায়ের মন্দিরে বলি প্রথা চালু করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু কথিত আছে, মন্দির প্রতিষ্ঠা করার আগের রাতে বিরজাচরণবাবু বলি চালু না করার জন্য মায়ের স্বপ্নাদেশ পান। সেই সময় থেকে মাকে নিরামিষ ভোগ দেওয়া হয়।”

মুগবেড়িয়া নন্দ পরিবারে শ্যামা পুজো শুরুর দিন সম্পর্কে সঠিকভাবে কিছু জানা যায় না। তবে এই পুজো প্রায় দু’শো বছরের বেশি পুরনো বলেই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। মন্দিরের সেবায়েত নন্দ পরিবারের সদস্য ব্রহ্মময় নন্দ বলেন, “অতীতে মাটির মন্দিরে খড়ের চালাঘরে মা’র মৃন্ময়ী মূর্তির পুজো হত। পঁচাশি বছর আগে ১৩৩৬ বঙ্গাব্দে নন্দ পরিবারের গঙ্গাধর নন্দ বতর্মান পাকা মন্দিরটি তৈরি করেন।” নৌকায় করে কাশীধামের দশাশ্বমেধ ঘাটের শিল্পীর তৈরি কষ্টি পাথরের কালী মূর্তি এনে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সারা বছর ধরে এই মন্দিরে একই সঙ্গে গোবিন্দ জিউও পূজিত হন। প্রতিদিন একইসঙ্গে শ্যামাসঙ্গীত ও কীর্তনে মুখরিত হয়ে ওঠে মন্দির প্রাঙ্গণ। এই মন্দিরে কালীপুজোকে ঘিরেই মেতে ওঠে মুগবেড়িয়ার আবালবৃদ্ধবণিতা।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন