মেঝেতে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হল হোমের এক আবাসিক কিশোরী। তার মাথায় আঘাত রয়েছে। ফুলমণি নামে বছর সতেরোর ওই কিশোরী কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। রবিবার তার এমআরআই করানো হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক প্রবীর সামন্ত বলেন, “এমআরআই করা হয়েছে। মেয়েটির শারীরিক অবস্থা আগের থেকে ভাল।” একই মত হোম সুপার শান্তা হালদারের।
হোম সূত্রে খবর, শনিবার বিকেলে আচমকাই মেঝেতে পড়ে যায় ফুলমণি। রান্নাঘরের পাশে মেঝের এক জায়গায় জল জমে ছিল। সেখানেই পা পিছলে পড়ে যায় সে। শনিবার হোমে স্বাস্থ্য-পরীক্ষা শিবির হচ্ছিল। আবাসিকদের স্বাস্থ্য- পরীক্ষা করছিলেন কয়েকজন চিকিত্সক। জখম কিশোরীকে উদ্ধার করে চিকিত্সকদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। মাথায় আঘাত রয়েছে দেখে চিকিত্সকেরা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। সেই মতো ফুলমণিকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। এখানে তার সিটি স্ক্যান হয়। শারিরীক অবস্থা খতিয়ে দেখে রাতেই এই আবাসিক কিশোরীকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এসএসকেএমে অবশ্য ভর্তি নেওয়া হয়নি। পরে তাকে এনআরএসে ভর্তি করা হয়। হোম সুপার শান্তাদেবীর কথায়, “আচমকাই ও মেঝেতে পড়ে জখম হয়।”
ওই কিশোরী ২০০৭ সাল থেকে মেদিনীপুরের হোমে রয়েছে। মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটিতে সরকার পরিচালিত এই ‘বিদ্যাসাগর বালিকা হোম’-এ প্রায় দু’শো জন আবাসিক রয়েছে। মূলত, আদালতের নির্দেশে তরুণীদের এখানে রাখা হয়। কয়েকজন অনাথিনীও আছে। মেদিনীপুরের এই হোমের পরিকাঠামো নিয়ে অবশ্য মাঝেমধ্যেই নানা প্রশ্ন ওঠে। নিরাপত্তার ফাঁক গলে ২০০৯ সালের নভেম্বরে দু’দফায় মোট ৯ জন তরুণী পালিয়ে গিয়েছিল। ২০১০ সালের মার্চে মোট ১৬ জন তরুণী পালিয়ে গিয়েছিল। পরে অবশ্য এদের কয়েকজন উদ্ধার হয়। আবাসিকেরা যে অব্যবস্থার প্রতিবাদ করে না তা নয়। তবে প্রতিবাদ করলে তাদের বকাবকি করা হয়। ভয়ে অনেকে কিছু বলতেই চায় না। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক হোমের এক কর্মীর কথায়, “হয়তো কিছু ক্ষেত্রে নজরদারির অভাব রয়েছে। তবে সার্বিক পরিকাঠামোর উন্নতি না হলে এই অভাব দূর করা অসম্ভব।” সূত্রের খবর, পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিশোরীকে উদ্ধার করে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হয়নি। কিছু পরে তাকে উদ্ধার করা হয়। অবশ্য হোম কর্তৃপক্ষ এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন।