দাসপুরে পদযাত্রার পুরোভাগে কংগ্রেস প্রার্থী। —নিজস্ব চিত্র।
তারকা প্রার্থীর আগেই দাসপুরে জোর কদমে প্রচার শুরু করলেন কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়া।
সোমবার দাসপুরের সোনামুই থেকে গৌরা পর্যন্ত পদযাত্রা করেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মানসবাবু। এরপর সোনাখালিতে তিনি পদযাত্রা ও কর্মিসভা করেন। আগামী ১০ ও ১১ এপ্রিল টানা দু’দিন ধরে তৃণমূলের শক্তঘাঁটি বলে পরিচিত দাসপুরে প্রচার করবেন ঘাটাল কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী ওরফে দেব। তাই তৃণমূল প্রার্থীর আগেই প্রচারে ঝড় তুলে জনসংযোগের কাজটা এ দিন অনেকটাই সেরে নেন মানসবাবু। একাধিক বাজারে প্রচার ও কর্মিসভা সেরে মানসবাবু বলেন, “আমি ফের দাসপুরে আসব। পরের বার মোটরবাইকে করে প্রচার করব। প্রতিটি বাড়িতে যাতে পৌঁছতে পারি সেই চেষ্টাই করব।” দাসপুরে প্রচার সেরে এ দিন তিনি পাঁশকুড়া যান।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের অর্ন্তগত সাতটি বিধানসভা এলাকায় তিন দিন করে প্রচার করবেন মানসবাবু। জেলা কংগ্রেসের সহ সভাপতি জগন্নাথ গোস্বামী বলেন, “মানসবাবুর ইচ্ছা, এলাকার প্রতিটি বাড়িতে তিনি নিজে যাবেন। মানুষের কাছে গিয়ে ভোটারের পছন্দের প্রার্থীকেই ভোট দেওয়ার আর্জি জানাবেন। প্রচারে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সাফল্যের কথাও তুলে ধরা হবে।”
আগুনে রোদ উপেক্ষা করে সোমবার সকাল ন’টা নাগাদ সোনামুই বাজার থেকে কর্মীদের নিয়ে পদযাত্রা শুরু করেন মানসবাবু। ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়ক ধরে গৌড়ায় গিয়ে তিনি পদযাত্রা শেষ করেন। সেখান থেকে সোনাখালি বাজারে গিয়ে তিনি ফের পদযাত্রায় অংশ নেন। প্রচারে সাধারণ মানুষের কাছে কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্যের কথা তিনি তুলে ধরেন। মানসবাবুর কথায়, “এই ভোট পঞ্চায়েত বা বিধানসভার ভোট নয়। লোকসভা ভোট হল দেশ গঠনের ভোট। সারা দেশে প্রায় ৮২ কোটি ভোটার রয়েছেন। আর প্রতি এলাকায় কংগ্রেসের প্রতিনিধি রয়েছেন। তাই কংগ্রেসই হল শক্তিশালী দল, যে দলকে মানুষ চেনেন ও বোঝেন।”
প্রচারে এ দিন বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন মানসবাবু। সোনাখালিতে কর্মিসভা চলাকালীন এক দলীয় কর্মীর কাছ থেকে ফোন পেয়ে মানসবাবু অভিযোগ করেন, “পিংলায় বিডিওর কাছে থেকে বাইকে প্রচারের অনুমতি নিয়ে তৃণমূলের লোকজন রাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাঁরা বাজার ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে নীরবে সন্ত্রাসও চালাচ্ছে। বিডিওকে বিষয়টি দেখতে আর্জি জানিয়েছি। জেলাশাসককেও বিষয়টি জানিয়েছি। এরপরেও কাজ না হলে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”
কেন্দ্রে পৃথক ফ্রন্ট গড়া নিয়ে মানসবাবু বলেন, “তৃণমূলের ও বামফ্রন্টের পৃথক ফ্রন্ট গড়ার সাধ মিটে গিয়েছে। প্রকাশ কারাট কেন্দ্রে ফ্রন্ট গড়ে সরকার গড়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। এবার দু’টি ফ্রন্ট পড়ে রইল। একটি নরেন্দ্র মোদির ফ্রন্ট আর একটি কংগ্রেসের। তার মধ্যে কারা থাকবেন তা মানুষই বিচার করবেন।” তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল নেত্রীর এমন দশা, যে অণ্ণা হজারের কাছ থেকে ফাঁকা হাতে তাঁকে দিল্লি থেকে ফিরতে হয়েছে।”
কর্মিসভা শেষে এক সাংবাদিক মানসবাবুকে প্রশ্ন করেন- দেব জ্বরে আক্রান্ত গোটা লোকসভা এলাকা। বিপক্ষের তারকার প্রার্থী সম্পর্কে তাঁর মত কী? মানসবাবুর কৌশলী উত্তর, “অন্য দলের প্রার্থী নিয়ে আমি কিছু বলব না। তবে এই ভোট আবেগের ভোট নয়। আর জ্বর, কাঁপুনির এখন নানা ওষধ বেরিয়ে গিয়েছে। এজন্য ভাল ভাল চিকিৎসকও রয়েছেন। তাই এই সব নিয়ে আমি চিন্তিত নই।”