মাসের পয়লা তারিখে শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত মার্চ মাসের বেতন পাননি পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাথমিক শিক্ষকেরা। আগামী ১৫ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ। তার আগে বেতন পাবেন কি না, সেই নিয়েও রয়েছে সংশয়। তবে সমস্যা নিয়ে মুখ খোলেননি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান স্বপন মুর্মু।
পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ৪ হাজার ৭০০টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। আগে স্থায়ী শিক্ষক ছিলেন ১৪,৭০০ জন। পার্শ্বশিক্ষক ১৪০০ জন। সম্প্রতি নতুন ১৫০০ জন শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। সমস্যার বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ স্পষ্ট করে কিছু না বললেও সংসদের এক সূত্রে খবর, ১ এপ্রিল থেকে চলতি আর্থিক বছর শুরু হয়েছে। গত আর্থিক বছরের শেষ দিন ছিল ৩১ মার্চ। সাধারণত, সংসদের রিক্যুইজিশন ৩১ মার্চের মধ্যেই ট্রেজারিতে জমা পড়ার কথা। তাহলে বিল পাশ হয়। কিন্তু এই বছর তা হয়নি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের গড়িমসির ফলেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের একাংশের। এ নিয়ে সরব হয়েছে একাধিক শিক্ষক সংগঠনও। এবিপিটিএ’র জেলা সম্পাদক সত্যেন বেরা বলেন, “আমাকে কয়েকজন শিক্ষক সমস্যার কথা জানিয়েছেন। কয়েকজন জানতেও চেয়েছেন, কেন এখনও বেতন হল না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেতন মিলবে, এটাই শিক্ষকেরা প্রত্যাশা করেন।” পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক তপন চক্রবর্তী বলেন, “৩১ মার্চের মধ্যে ট্রেজারিতে বিল জমা পড়েনি। ফলে, বিল পাশও হয়নি। কর্তৃপক্ষ আগে থেকে তৎপর হলে এই পরিস্থিতি হত না।” সংসদ সূত্রে খবর, দ্রুত সমস্যা মেটানোর আর্জি জানিয়ে সোমবার দুপুরে সংসদ চেয়ারম্যান স্বপন মুর্মুর কাছে দরবারও করেন তপনবাবু।
দেদার শিক্ষক বদলির নির্দেশ দিয়ে গত মাসেই নানা মহলের প্রশ্নের মুখে পড়েন সংসদ কর্তৃপক্ষ। কারণ, ওই নির্দেশের ফলে বিভিন্ন স্কুলেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। ওই সব স্কুলে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতে অসামঞ্জস্য দেখা দেয়। এর রেশ কাটতে না- কাটতেই এ বার বেতন সমস্যায় জেরবার হতে হচ্ছে সংসদ কর্তৃপক্ষকে। যদিও সংসদ কর্তৃপক্ষের দাবি, তেমন কোনও সমস্যাই হয়নি। সামনের কয়েকদিনের মধ্যেই প্রাথমিক শিক্ষকেরা বেতন পেয়ে যাবেন। মার্চের বেতন পেতে ঠিক কতদিন লাগতে পারে, তা অবশ্য স্পষ্ট করে কিছু বলেনি সংসদ। সংসদের সচিব তথা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) কবিতা মাইতিও সমস্যার কথা ভেঙে বলতে চাননি। সমস্যা নিয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) কবিতাদেবীর জবাব, “তেমন সমস্যা হয়নি। মার্চের বেতন পেতে এমনিতেই একটু দেরি হয়।”