নন্দীগ্রাম

রাস্তা চেয়ে রাস্তা কেটে অবরোধ

রাস্তা কেটে প্রতিবাদ নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনকে অন্য মাত্রা দিয়েছিল। এ বার রাস্তা সারানোর দাবিতে নন্দীগ্রামবাসী বেছে নিলেন একই পন্থা। সোমবার সকালে বেহাল রাস্তা মেরামতির দাবিতে নন্দীগ্রাম বাজার থেকে কেন্দেমারি ফেরিঘাটে যাওয়ার পাকা রাস্তা কেটে প্রতিবাদ জানান কেন্দেমারির কয়েকশো বাসিন্দা। অবরোধের জেরে থমকে যায় যান চলাচল। নন্দীগ্রাম থানার উদ্যোগে তড়িঘড়ি রাস্তা মেরামত করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৪ ০০:৪১
Share:

নন্দীগ্রাম বাজার থেকে কেন্দেমারি ফেরিঘাটে যাওয়ার রাস্তা। এখানেই রাস্তা কেটে চলে অবরোধ। দ্রুত ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। নন্দীগ্রাম থানার উদ্যোগে দ্রুত মেরামত করা হয় রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তা কেটে প্রতিবাদ নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনকে অন্য মাত্রা দিয়েছিল। এ বার রাস্তা সারানোর দাবিতে নন্দীগ্রামবাসী বেছে নিলেন একই পন্থা।

Advertisement

সোমবার সকালে বেহাল রাস্তা মেরামতির দাবিতে নন্দীগ্রাম বাজার থেকে কেন্দেমারি ফেরিঘাটে যাওয়ার পাকা রাস্তা কেটে প্রতিবাদ জানান কেন্দেমারির কয়েকশো বাসিন্দা। অবরোধের জেরে থমকে যায় যান চলাচল। নন্দীগ্রাম থানার উদ্যোগে তড়িঘড়ি রাস্তা মেরামত করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রাম থেকে হলদিয়া টাউনশিপ কিংবা হলদিয়া থেকে নন্দীগ্রামের বিভিন্নস্থানে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কেন্দেমারি খেয়াঘাটের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন নন্দীগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার মানুষ ট্রেকার, যন্ত্রচালিত ভ্যানরিক্সা, সাইকেলে কেন্দেমারি খেয়াঘাটের ফেরির মাধ্যমে হলদিয়া টাউনশিপের ঘাটে নামেন। সেখান থেকে যে যার মতো যান কাজে। একইভাবে হলদিয়ার অনেকেই কেন্দেমারি খেয়াঘাট হয়ে নন্দীগ্রামের বিভিন্ন স্থানে যান। ২০০৫ সাল নাগাদ নন্দীগ্রাম বাজার থেকে হাজরাকাটা বাজার হয়ে কেন্দেমারি খেয়াঘাট পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার রাস্তা প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনায় পাকা করা হয়েছিল। সেই সময় কেন্দেমারি গ্রামে খালের উপর একটি পাকা সেতু তৈরি হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই পাকা সেতুর দু’পাশের প্রায় ১০০ মিটার করে রাস্তা পাকার কাজ সম্পূর্ণ করা হয়নি। বাসিন্দাদের দাবি, মেরামতির বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতির কাছে দাবি জানানো হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই প্রশাসনের নজর কাড়তেই রাস্তা কেটে এই অবরোধ। এ দিন সকাল থেকে নন্দীগ্রাম বাজার থেকে কেন্দেমারি রাস্তা কেটে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। অবরোধের জেরে কেন্দেমারি খেয়াঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে যানবাহন আটকে যায়। খবর পেয়ে নন্দীগ্রামের পুলিশ যায়। পুলিশের উদ্যোগে কাটা রাস্তা তড়িঘড়ি করে স্থানীয় ইটভাটা থেকে আনা ইটের টুকরো ফেলে মেরামতি করা হয়। তখন অবশ্য গ্রামবাসীরা বাধা দেননি।

Advertisement

২০০৭ সালে জমিরক্ষা আন্দোলনের সময় পুলিশ-প্রশাসনের নন্দীগ্রামের ভিতরে ঢুকতে বাধা দেওয়ার জন্য গ্রামবাসীরা রাস্তা কেটে অবরোধের পথ বেছেছিলেন। কিন্তু স্রেফ বেহাল রাস্তা মেরামতির দাবি তুলে অবরোধের ঘটনায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য রাস্তা কেটে অবরোধের ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন। নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তাহের বলেন, “ওই রাস্তা গভীর রাতে কাটা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। কারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁদের খোঁজ করা হচ্ছে।” নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান অবশ্য বলেন, “নন্দীগ্রামের জাইরুর মোড় থেকে কেন্দেমারি খেয়াঘাট পর্যন্ত রাস্তা মেরামতির জন্য হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন