রাস্তার জমি নিয়ে মারধরের নালিশ, পিংলায়

জমি বিবাদে থমকে গিয়েছে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ। তার জেরে জমির মালিকের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বুথ সভাপতির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে পিংলা থানা এলাকার এই ঘটনায় স্থানীয় ধনেশ্বরপুরের ভাটবার গ্রামের বাসিন্দা জমির মালিক অরুণ মাইতি তিন জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৫ ০০:১৮
Share:

জমি বিবাদে থমকে গিয়েছে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ। তার জেরে জমির মালিকের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বুথ সভাপতির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে পিংলা থানা এলাকার এই ঘটনায় স্থানীয় ধনেশ্বরপুরের ভাটবার গ্রামের বাসিন্দা জমির মালিক অরুণ মাইতি তিন জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি কানাই বেরা, দলীয় কর্মী মুকুল মান্না ও সমর্থক পুলিন মান্না।

Advertisement

ওই এলাকায় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। তার জন্য রায়ত জমি ছাড়ার দাবি নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। অভিযোগ, জোর করে জমিতে মাটি কাটার যন্ত্র চালানোয় বাধা দিলে অরুণবাবু ও তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যাদেবীকে মারধর করা হয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

ধনেশ্বরপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভাটবারের মোরাম রাস্তা দীর্ঘদিন বেহাল ছিল। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় চহতপুর থেকে গোয়ালিয়া পর্যন্ত রাস্তা পাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পরিষদ। প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার রাস্তা পাকা ও সম্প্রসারণ করতে একটি ঠিকাদার সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ১৩ ফুটের মোরাম রাস্তা ২০ ফুট চওড়া করার কাজে সড়কের দু’ধারেই জমি প্রয়োজন। ভাটবাড়ের কাছে অরুণ মাইতির রাস্তার দু’দিকেই রায়ত জমি রয়েছে। তিনি সড়কের পশ্চিমে পুকুর পাড়ের জমি দিতে সম্মত হয়েছেন। কিন্তু এলাকার একাংশ বাসিন্দার বক্তব্য, পুকুর পাড়ের জমিতে সড়ক হলে সড়ক ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই অরুণ মাইতির পূর্ব দিকে বাস্তুজমি রাস্তার জন্য দেওয়ার দাবি উঠেছে। অরুণবাবু এই প্রস্তাবে রাজি নন। তা নিয়ে অশান্তির জেরে দিন চারেক হল রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার শ্রমিকরা ফের রাস্তা তৈরির কাজে হাত দেন। তৃণমূলের বুথ সভাপতি কানাই বেরা, মুকুল মান্না, পুলিশ মান্না-সহ দলের কয়েকজন কর্মী-সমর্থকও সেখানে আসেন। অরুণবাবুর অভিযোগ, মাটি কাটার মেশিন দিয়ে বাস্তুজমিতে থাকা গাছ কেটে ফেলার নির্দেশ দেন কানাই, মুকুলরা। গাছ কাটা শুরু হলে অরুণবাবু বাধা দেন। তখন কানাই তাঁর উপর চড়াও হয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ। পরে তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যাদেবী ও ভাগ্নে কার্তিক রাউতকেও মারধর করা হয়। এর পরেই ঠিকাদার সংস্থার তরফে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়।

অরুণবাবু এ দিন বলেন, “রাস্তার জন্য জমি দিতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু আমি চাই আমার পশ্চিম অংশের পুকুর পাড়ের জমি নেওয়া হোক। কিন্তু কানাই বেরারা ইচ্ছাকৃত আমার বাস্তুজমি নিয়ে রাস্তা করতে চাইছে। মনে হচ্ছে, ঠিকাদার সংস্থার থেকে টাকা নিয়ে ওঁরা আমাকে, স্ত্রী ও ভাগ্নেকে মারধর করেছে।” ওই ঠিকাদার সংস্থার সুপারভাইজার বীর্যেশ তিওয়ারি অবশ্য বলেন, “গ্রামবাসীদের গোলমালে আমরা আগেই কাজ বন্ধ করেছি। এ দিন এলাকার কিছু মানুষ জোর করে আমাদের শ্রমিকদের নিয়ে গিয়ে অরুণ মাইতির জমির গাছ কাটায় গোলমাল হয়েছে। তারপর আমি এলাকায় গিয়ে কাজ বন্ধ করেছি। বলেছি, সমস্যা মিটিয়ে নিলে কাজ হবে।” পিংলার তৃণমূল নেতা গৌতম জানা যদিও বলেন, “মারধরের অভিযোগ অসত্য। তবে উন্নয়নের স্বার্থে রাস্তার কাজে আমাদের বুথ সভাপতি কানাই বেরা জমি ছাড়ার দাবি জানিয়েছিলেন। সেই সময় অরুণবাবুর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হওয়ায় ঠেলাঠিলি হয়েছে। আমরা মীমাংসার মাধ্যমে কাজ চালু করার চেষ্টা করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন