অবরোধে সামিল পড়ুয়ারাও। খালশিউলির মেউদিপুর চকে।—নিজস্ব চিত্র।
এলাকার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। প্রশাসনিক মহলে বহুবার স্মারকলিপি দিয়েও সুরাহা হয়নি। অবিলম্বে একটি রাস্তা তৈরি ও অন্যটি সারানোর দাবিতে মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের খালশিউলি এলাকার মেউদিপুর চকে পথ অবরোধ করেন বাসিন্দারা।
এ দিন সকাল সাড়ে আটটায় মেউদিপুর চকে রাস্তার মাঝে বাঁশের ব্যারিকড করে অবরোধ শুরু করেন আবালবৃদ্ধবনিতা। স্থানীয় স্কুল পড়ুয়ারাও অবরোধে সামিল হয়। এর ফলে, খড়্গপুর-খালশিউলি রুটে বাস-লরি সহ নানা যানবাহন আটকে পড়ে। অবশেষে প্রায় দশ ঘন্টা পরে সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা নাগাদ অবরোধস্থলে যান ঝাড়গ্রামের বিডিও অনির্বাণ বসু। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা বিডিও-কে ঘেরাও করে রাখেন। রাস্তা দু’টির অবস্থা স্বচক্ষে দেখেন বিডিও। শেষ পর্যন্ত বিডিও অনির্বাণবাবু উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাক্রমে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ অবরোধ উঠে যায়।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, মেউদিপুর থেকে রাস্তাটি দু’দিকে দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে। একটি রাস্তা বাঁ দিকে ভিড়িংপুর হয়ে কংসাবতীর আমদই ঘাট অবধি গিয়েছে। আর অন্য রাস্তাটি মেউদিপুর থেকে ডানদিকে পাঁচরুলিয়া হয়ে খড়্গপুরের মালঞ্চ পর্যন্ত গিয়েছে। মেউদিপুর-ভিড়িংপুর সাড়ে চার কিলোমিটার রাস্তাটি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় পিচ করার জন্য বছর তিনেক আগে ৩ কোটি ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে রাস্তায় মাটি ফেলার কাজও শুরু হয়। কিন্তু পরে ঠিকাদার সংস্থাটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করতে পারে নি। জেলা পরিষদের তরফে শো-কজ করা হলে সংস্থাটি আদালতের দ্বারস্থ হয়। ফলে, বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন থাকায় অন্য ঠিকাদার নিয়োগ করে রাস্তাটি তৈরির কাজ শেষ করা যায় নি। মাটির ওই রাস্তাটির এখন বেহাল অবস্থা। বৃষ্টি হলে হাঁটাচলা করাই দায় হয়। অন্যদিকে, মেউদিপুর থেকে পাঁচরুলিয়া হয়ে মালঞ্চ পর্যন্ত সাত কিমি পিচ রাস্তাটি সংস্কারের জন্য পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর থেকে বছর দু’য়েক আগে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু সেভাবে সংস্কারই হয়নি বলে ভিযোগ। ওই রাস্তাটিরও খুবই খারাপ অবস্থা। খানাখন্দে ভরা ওই রাস্তায় পিচের লেশমাত্র নেই। অথচ মেউদিপুর থেকে ওই রাস্তাটি খড়্গপুরের মালঞ্চ এলাকায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে গিয়ে মিশেছে।
স্থানীয় পার্থ মণ্ডল, চঞ্চল মণ্ডল, রামকৃষ্ণ পট্টনায়ক, পদ্ম দোলাই, সায়নী সামন্ত-রা বলেন, “আইনি জটিলতা আমরা বুঝি না। অনেক দুর্ভোগ সহ্য করতে হচ্ছে। আমরা রাস্তা চাই।”