রাস্তা সারানোর দাবিতে অবরোধে পড়ুয়ারা

রাস্তা সংস্কার হয়নি দীর্ঘদিন। বর্ষায় খন্দপথে চলাই দায়। তাই অবিলম্বে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি সবংয়ের বড়চারা থেকে খড়িকা যাওয়ার পথে বীরকোটা গ্রামে অবরোধ করেন স্থানীয় স্কুলের ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৪ ০০:১০
Share:

রাস্তা সংস্কার হয়নি দীর্ঘদিন।

Advertisement

বর্ষায় খন্দপথে চলাই দায়। তাই অবিলম্বে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি সবংয়ের বড়চারা থেকে খড়িকা যাওয়ার পথে বীরকোটা গ্রামে অবরোধ করেন স্থানীয় স্কুলের ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা। এ দিন সকাল ১১টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধ চলে। সবংয়ের বিডিও বিকাশ মজুমদারের আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায়।

অবরোধকারীদের অভিযোগ, বছর পাঁচেক আগে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের অধীনে সবংয়ের বড়চারা থেকে খড়িকা রাস্তাটি তৈরি হয়। গত দু’বছর ধরে সংস্কারের অভাবে ওই রাস্তা বেহাল। দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদও রাস্তা সংস্কারে কোনও উদ্যোগ নেয়নি। তাই রাস্তা সংস্কারের দাবিতে এ দিন পথ অবরোধ করা হয়।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সবংয়ের তেমাথানি থেকে বড়চারা হয়ে খড়িকা যাওয়ার এটিই একমাত্র রাস্তা। আগে এই ৯ কিলোমিটার সড়কটি পঞ্চায়েত সমিতির হাতে ছিল। তবে বছর পাঁচেক আগে জেলা পরিষদের মাধ্যমে দু’জন ঠিকাদারকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের অধীনে দু’দফায় এই রাস্তাটি পিচের করা হয়। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, পাঁচ বছর পর্যন্ত ওই রাস্তার দেখভালের দায়িত্ব নির্মাণকারী ঠিকাদার সংস্থার। বছর দু’য়েক আগে থেকেই রাস্তার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। সমগ্র রাস্তাটি খানাখন্দে ভরে যাওয়ায় ওই রাস্তার বড়চারা থেকে আদাসিমলা পর্যন্ত অংশের নির্মাণকারী ঠিকাদার সংস্থা ওই ৩ কিলোমিটার অংশে সংস্কার কাজ করে। তবে অন্য ঠিকাদার সংস্থা ওই রাস্তার আদাসিমলা থেকে খড়িকা পর্যন্ত অংশে প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজ করেনি। ফলে ওই অংশের রাস্তার অবস্থা খারাপ হতে থাকে। কিন্তু রাস্তার সংস্কার নিয়ে নির্বিকার প্রশাসন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একাধিকবার রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। দীর্ঘক্ষণ অবরোধ চলায় রাস্তায় যানজট তৈরি হয়। অবরোধে নাকাল হন নিত্যযাত্রীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। সবং পঞ্চায়েত সমিতি কংগ্রেসের দখলে। আর জেলা পরিষদের ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। সবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের অমল পণ্ডার অভিযোগ, “এই সড়ক প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে তৈরি হওয়ায় ওই রাস্তার দেখভালের দায়িত্ব জেলা পরিষদের। কিন্তু জেলা পরিষদ সেই কাজ করেনি।” যদিও সবং থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদের তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির পাল্টা অভিযোগ, “ঠিকাদার মেয়াদ শেষের আগেই পালিয়েছে। জেলা পরিষদ আগের ইউপিএ সরকারের থেকে টাকা পেলে তো কাজ করবে। ওই রাস্তাটি আগে তো পঞ্চায়েত সমিতির হাতে ছিল। তারা তো অন্তত মোরাম ও বোল্ডার দিয়ে রাস্তার খানাখন্দ ভরাট করতে পারত।”

শুধু এই রাস্তা নয়, সবং ও পিংলা জুড়ে বহু রাস্তার অবস্থাই বেহাল। সবং থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্য তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়া বলেন, “রাস্তাগুলি যেহেতু জেলা পরিষদের আওতায়, তাই জেলা পরিষদকেই ওই রাস্তাগুলির সংস্কার করতে হবে।” জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরির দাবি, সবং ও পিংলায় বহু রাস্তার কাজের অনুমোদন হয়েছে। ঠিকাদার চলে যাওয়ায় কয়েকটি রাস্তার সংস্কার কাজ থমকে রয়েছে। সেগুলিরও কাজ শুরু হবে। এ দিন অবরোধ চলাকালীন বিডিও’র নির্দেশে এলাকায় পৌঁছন ব্লকের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার শিবনারায়ণ জানা। তিনি বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। বিডিও আমার মাধ্যমে অবরোধকারীদের আশ্বাস দিয়েছেন। বেলা ২ টো নাগাদ অবরোধ উঠে যায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন