শ্রমিকদের কাছে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন চাইলেন শুভেন্দু

ভোট প্রচারে শ্রমিকদের অভাব অভিযোগ শুনতে বিভিন্ন শিল্পসংস্থার কর্মী ও শ্রমিকদের মুখোমুখি হলেন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। ভোটে জিতলে হলদিয়া বন্দরের নাব্যতা ফিরিয়ে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের শ্রীবৃদ্ধি ঘটানোই তাঁর লক্ষ্য। বন্দর, শিল্প ও বাণিজ্য শহর হলদিয়াকে বিশ্বের মানচিত্রে তুলে ধরতে মঙ্গলবার হলদিয়ার ক’য়েকটি শিল্প সংস্থায় গিয়ে শ্রমিক কর্মচারীদের কাছে এমনই বার্তা দিলেন শুভেন্দুবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৪ ০১:৩৫
Share:

হলদিয়ার প্রচারে শুভেন্দু।

ভোট প্রচারে শ্রমিকদের অভাব অভিযোগ শুনতে বিভিন্ন শিল্পসংস্থার কর্মী ও শ্রমিকদের মুখোমুখি হলেন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী।

Advertisement

ভোটে জিতলে হলদিয়া বন্দরের নাব্যতা ফিরিয়ে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের শ্রীবৃদ্ধি ঘটানোই তাঁর লক্ষ্য। বন্দর, শিল্প ও বাণিজ্য শহর হলদিয়াকে বিশ্বের মানচিত্রে তুলে ধরতে মঙ্গলবার হলদিয়ার ক’য়েকটি শিল্প সংস্থায় গিয়ে শ্রমিক কর্মচারীদের কাছে এমনই বার্তা দিলেন শুভেন্দুবাবু। তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর আবেদন, “স্বত:স্ফূর্তভাবে আমার জন্য কাজ করুন। নন্দীগ্রামের মানুষ আমাকে ভরসা করে ঠকেননি। আপনারাও ঠকবেন না। তাই শ্রমিক, কর্মী ও আপনাদের পরিবারের সকলের আর্শীবাদ নিতে এসেছি।” এ দিন বিকেলে তিনি ‘মিৎসুবিশি’, ‘ইনোর কোল’, ‘হিন্দুস্থান কোল’, ‘মানাক্সিয়া’, ‘মডার্ন ইন্ডিয়া’ ও ‘রোহিত সেরোটেক’ সংস্থার কর্মী ও শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করেন। ওই শিল্পসংস্থাগুলির কর্মী ও শ্রমিকদের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিদের ক্ষোভ ও দাবিও শোনেন শুভেন্দুবাবু। উন্নয়ন প্রসঙ্গে শুভেন্দুবাবু বলেন, “আমি বা অন্য কোনও নেতা নয়। উন্নয়ন করবে তৃণমূল, মমতা বন্দোপাধ্যায়। হলদিয়া পুরভোটে আমি এই কথা বোঝাতে পারিনি। নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব রাখবেন না। এতে অন্য দলের লাভ হবে।”

তাঁর দাবি, “হলদিয়া পুরসভার সিপিএমের আরও দুই কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেবেন। আগামী অগস্টে সুতাহাটা পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে আসবে।”

Advertisement

শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে আমি একদিনও কর্মদিবস নষ্ট হতে দিইনি। শ্রমিক কর্মীদের কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়নি। আগে যেটা হত। শিল্প সংস্থা ও শ্রমিক কর্মীদের যৌথ স্বার্থ বজায় রেখে চলতে হবে।” মিতসুবিশি সংস্থার কয়েকজন শ্রমিকের দাবিসনদ নিয়ে ক্ষোভ প্রসঙ্গে শুভেন্দুবাবু বলেন, “আর্থিক মন্দা কাটিয়ে ওঠার জন্য আমি ওই সংস্থার পাশে দাঁড়িয়েছি। আমাদের সহযোগিতায় রাজ্য সরকার ওই সংস্থাকে ১২৫ শতাংশ ভ্যাট ফেরতের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। ৩১ মার্চের পর দাবিসনদ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসব।” সভাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ওই সংস্থার এক আধিকারিক সঞ্জয় রাজগুরু (এইচআর)। তিনিও কর্মী ও শ্রমিকদের সামনে শুভেন্দুবাবুর কাছে দাবি মেটানোর আশ্বাস দেন।

হলদিয়া বন্দরে নাব্যতা কমে যাওয়া প্রসঙ্গে শুভেন্দুবাবু বলেন, “বাম আমলে ভুল জল চুক্তির জন্যই বন্দরের নাব্যতা কমেছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়েছিল বাম আমলেই। যার ফলে আমি বড় শিল্প আনতে পারিনি। তবে নিজেই মামলা করে পর্ষদের নিষেধাজ্ঞা তুলিয়েছি। কলকাতা বন্দর থেকে হলদিয়াকে পৃথক করা ও কেন্দ্র সরকারের কাছে ড্রেজিংয়ের জন্য পাওনা দেড় হাজার কোটি টাকা আদায় করা হবে। তাই হলদিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি লড়াই করছি।”

সভায় এক শ্রমিক আকিবুল হাসান খান বলেন, “আগের থেকে এখন পারিশ্রমিক দ্বিগুণ হয়েছে। চাঁদা দেওয়া বা দল করার জন্য কোনও জুলুম নেই। আমরা চাই, আমাদের সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ুক।” অপর এক শ্রমিক রেজাউল আলি বলেন, “সবচেয়ে বড় কথা, এখন শ্রমিক শোষণ নেই, শান্তিতে আছি।” পনেরো বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে পার্থপ্রতিম তেওয়াড়ির। তাঁর কথায়, ‘‘শ্রম দিবস নষ্ট হতে দিইনি। দীর্ঘদিনের অপ্রাপ্তির বঞ্চনা এখন আর নেই। তাই আমরা পরিবার নিয়ে তৃণমূল প্রার্থীর পাশেই আছি।” ওই সংস্থার কর্মী শান্তনু কালসা, শান্তনু মাইতির ক্ষোভ থাকলেও তাঁরা শুভেন্দুবাবুর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এ দিন তৃণমূল সমর্থক শ্রমিকদের একাংশ নিয়ে পৃথক কর্মী সংগঠনের সম্পাদক শেখ ইলিয়াস শ্রমিকদের মূল সংগঠনে যোগ দেন। সিপিএম ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুকে কটাক্ষ করে শুভেন্দুবাবু বলেন, “বিমানবাবু-লক্ষ্মণবাবুরা যেন রাস্তায় নেমে মারপিট না করেন। কারণ তাঁদের ও তাঁদের কর্মীদের আচরণে মানুষ আতঙ্কিত। তাঁরা যাই করুন, তা যেন দলীয় কার্যালয়ের ভিতরেই হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন