খয়েরুল্লাচকে চলছে জগদ্ধাত্রী প্রতিমা তৈরি। —নিজস্ব চিত্র।
বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন। দুর্গাপুজো, কালীপুজোর পর এ বার জগদ্ধাত্রী পুজোয় মেতে উঠতে প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। থিমের মণ্ডপ, নজরকাড়া প্রতিমা- দর্শকদের নজর কাড়তে একে অপরকে টেক্কা দিতে প্রস্তুত পুজো কমিটিগুলি। আজ, বুধবার থেকেই শুরু হয়ে যাবে পুজোগুলির উদ্বোধন।
আগের থেকে মেদিনীপুরে এখন সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজোর সংখ্যা বেড়েছে। প্রায় সব পুজোর ভাবনাতেই থাকে নানা চমক। ফলে, পুজোর আয়োজনে কোনও খামতি রাখতে চান না উদ্যোক্তারা। শহরের জেলা পরিষদ রোডের আবির্ভাব ক্লাবের পুজোর এ বার পঞ্চম বর্ষ। পুজো ঘিরে ইতিমধ্যে এলাকায় সাজো সাজো রব। মঙ্গলবার দিনভর মণ্ডপ সজ্জার কাজ চলেছে। বুধবার সন্ধ্যায় পুজোর উদ্বোধন। এই উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, বিধায়ক তথা এমকেডিএ’র চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বিনয় দাস মাল প্রমুখের। এখানে নানা কর্মসূচিরও আয়োজন থাকে। বুধবার সন্ধ্যায় যেমন এক অনুষ্ঠানে দরিদ্রদের সাহায্য করা হবে। প্রতিভাবান খেলোয়াড় এবং কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনাও দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক মঞ্চে পরিবেশিত হবে দক্ষিণ ভারতীয় নৃত্য।
মেদিনীপুর কলেজ মোড়ের অগ্নিকন্যা ক্লাবের পুজোর এ বার চতুর্থ বর্ষ। মঙ্গলবার দিনভর পুজোর শেষ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন ক্লাবের সকলে। আজ, বুধবার সন্ধ্যায় পুজোর উদ্বোধন। উদ্যোক্তারা জানান, পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সাংসদ সন্ধ্যা রায়, বিধায়ক মৃগেন মাইতি প্রমুখকে। মণ্ডপ তৈরি হয়েছে প্যারিসের একটি রাজবাড়ির আদলে। প্রতিমা সাবেক। পুজো উপলক্ষে থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী, বুদ্ধ মণ্ডল প্রমুখ বলেন, “পুজো আমাদের সকলের। এলাকার সকলেই সাধ্য মতো সহযোগিতা করেন। উৎসাহ দেন। সকলের সহযোগিতা ছাড়া এ ভাবে পুজোর আয়োজন সম্ভব হত না।”
শহরতলির খয়েরুল্লাচকের নবোদয় দীপ্তি সঙ্ঘের পুজোর এ বার দ্বাদশ বর্ষ। বুধবার সন্ধ্যায় পুজোর উদ্বোধন করবেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের মেদিনীপুর শাখার সম্পাদক স্বামী মিলনানন্দ। পুজোর ক’দিন থাকছে বাউল, ছৌ, ঝুমুর, যাত্রা প্রভৃতি। দিন বদলের সঙ্গে এই সব শিল্প এখন ফিকে হয়ে আসছে। হারিয়ে যেতে বসা শিল্প- সংস্কৃতিকেই বাঁচিয়ে রাখতে চান উদ্যোক্তারা।
সবমিলিয়ে, রঙিন আলোয় শহর ও শহরতলির সেজে ওঠা এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।