সাক্ষ্যগ্রহণ ফের পিছোল, হতাশ রকির পরিজনরা

ঝাড়গ্রামের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ অগ্রবাল ওরফে রকি খুনের অভিযুক্তদের সরকারি খরচে আইনজীবী দিতে চাইছে আদালত। কিন্তু অভিযুক্তেরা নিজেরাই আইনজীবী নিয়োগ করবেন বলে অনড়। আইনজীবী নিয়োগের জন্য অভিযুক্তরা বারবার আদালতের সময় নিচ্ছেন। অথচ সাক্ষ্যগ্রহণের দিনে অভিযুক্তপক্ষের কোনও আইনজীবী আদালতে হাজির হচ্ছেন না। বুধবারও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:০৪
Share:

ঝাড়গ্রামের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ অগ্রবাল ওরফে রকি খুনের অভিযুক্তদের সরকারি খরচে আইনজীবী দিতে চাইছে আদালত। কিন্তু অভিযুক্তেরা নিজেরাই আইনজীবী নিয়োগ করবেন বলে অনড়। আইনজীবী নিয়োগের জন্য অভিযুক্তরা বারবার আদালতের সময় নিচ্ছেন। অথচ সাক্ষ্যগ্রহণের দিনে অভিযুক্তপক্ষের কোনও আইনজীবী আদালতে হাজির হচ্ছেন না। বুধবারও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। এ দিনও অভিযুক্তপক্ষের কোনও আইনজীবী না থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণের কাজ শুরু করা গেল না। অভিযুক্তদের পরস্পর বিরোধী কথা শুনে ঝাড়গ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক বিভাসরঞ্জন দে কড়াসুরে জানিয়ে দিলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিনে অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী না থাকলে সরকারি খরচে অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী নিয়োগের ব্যবস্থা করবে আদালত।

Advertisement

এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর ও ১৩ জানুয়ারি অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী না থাকায় মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যায় নি। মূল অভিযুক্ত অশোক শর্মা অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আগের দু’টি দিনে আদালতে হাজির হন নি। তবে বাকি চার অভিযুক্ত অশোকের স্ত্রী পুনম শর্মা, অশোকের দুই আত্মীয় সুমিত শর্মা ও দীনেশ শর্মা এবং অশোকের পরিচারক টোটন রানা-রা আইনজীবী নিয়োগের জন্য আদালতের কাছে সময় চেয়েছিলেন।

বুধবার অশোক শর্মা-সহ জেলবন্দি পাঁচ অভিযুক্তকেই ঝাড়গ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়। অভিযুক্ত সুমিত শর্মা বিচারককে জানান, “আমার পরিবার আমার আইনজীবী নিয়োগ করেছে, তবে আজ তিনি আসেন নি।” বিচারক: “কেন আইনজীবী আসেন নি।” সুমিত: “বলতে পারব না।” বিচারক: “আপনার আইনজীবী নাম কী?” সুমিত: “জানি না।” আর এক অভিযুক্ত দীনেশ শর্মা বলেন, “আমার আইনজীবীকে ভয় দেখানো হচ্ছে। তাই তিনি আসছেন না।” বিচারক: “আইনজীবী ভয় পাবেন কেন? তিনি আমার কাছে তাহলে অভিযোগ করছেন না কেন?” সদুত্তর দিতে পারেননি দীনেশ। এরপর অশোকের স্ত্রী পুনম শর্মা হাইকোর্টের এক উকিলের চিঠি দেখিয়ে বিচারককে জানান, এই পরিস্থিতিতে মামলার বিচার অন্যত্র সরানোর জন্য তাঁরা হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। চিঠিটি পড়ে বিচারক পুনমকে বলেন, “এটা তো উকিলের চিঠি। হাইকোর্টের কোনও নির্দেশের কথা এতে লেখা নেই। সাক্ষ্যগ্রহণের কাজ শুরু করার জন্য আপনার আইনজীবীকে এই আদালতে আসতে বলুন।” সবশেষে অশোক শর্মা করজোড়ে বিচারককে বলেন, ‘‘আইনজীবী নিয়োগের জন্য কমপক্ষে দেড় মাস সময় দেওয়া হোক।” বিচারক: “অত সময় দেওয়া যাবে না। ১৮ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিনে আপনাদের আইনজীবী না থাকলে সরকারি ভাবে আইনজীবী নিয়োগের ব্যবস্থা হবে।”

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো হতাশায় ভেঙে পড়েছেন রকির পরিজনেরা। রকির বাবা পবন অগ্রবাল বলেন, “বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার জন্যই অভিযুক্তরা সরকারি খরচে আইনজীবী নিতে চাইছেন না। আবার নিজেদের উদ্যোগে আইনজীবী নিয়োগ করার বিষয়েও অভিযুক্তরা গড়িমসি করছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন