কেশিয়াড়ি

সিপিএম নেতার বাড়িতে ভাঙচুর, অভিযুক্ত তৃণমূল

সিপিএমের এক লোকাল কমিটির সম্পাদকের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুঠপাটে নাম জড়াল তৃণমূলের। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কেশিয়াড়ির নছিপুর পঞ্চায়েতের জ্যোতি কৃষ্ণপুরে। নছিপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক গোলাপ ঘোষ ওই ঘটনায় ২১ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৪ ০০:২৪
Share:

সিপিএমের এক লোকাল কমিটির সম্পাদকের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুঠপাটে নাম জড়াল তৃণমূলের। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কেশিয়াড়ির নছিপুর পঞ্চায়েতের জ্যোতি কৃষ্ণপুরে। নছিপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক গোলাপ ঘোষ ওই ঘটনায় ২১ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। এ দিকে, বুধবারে বিজেপির মেদিনীপুরের মিছিলে যাওয়ার ‘অপরাধে’ দুই বিজোপি সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুরেরও নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের।

Advertisement

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে ট্রাকে করে নছিপুর পঞ্চায়েতের ভসরাঘাট থেকে বাসে বিজেপির মিছিলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল সিপিএম ও তৃণমূল ছেড়ে আসা বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের। তাঁরা ভসরাঘাটে পৌঁছলে বচসা বাধে তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে। অভিযোগ, সেই সময়েই পাঁচ বিজেপি কর্মীকে মারধর করা হয়। বিজেপির পক্ষ থেকে থানায় তৃণমূলের তিন জনের নামে লিখিত অভিযোগ জানানো হলে পৌঁছয় পৌঁছয় এলাকায়। অভিযোগ, গভীর রাতে পুলিশ ফিরে যেতেই ফের শুরু হয় তাণ্ডব। রাতেই দুই বিজেপি সমর্থকের বাড়িতে চড়াও হয়ে তৃণমূল ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ ওঠে। বিজেপির মণ্ডল সভাপতি উত্তম মাইতি বলেন, “তৃণমূল এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়ে দু’জন সমর্থকের ঘর ভেঙেছে।”

এ দিকে, এলাকায় উত্তেজনা থাকায় বুধবার রাতেই এলাকা ছেড়ে কেশিয়াড়ির জোনাল কার্যালয়ে আশ্রয় নেন সিপিএমের নছিপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক। সিপিএমের দাবি, তিনি দলের নিয়ম অনুযায়ী মাঝে মধ্যেই রাত-পাহারা দিতে জোনাল অফিসে আসেন। বৃহস্পতিবার সকালে গোলাপবাবুর স্ত্রী-বাড়িতে না থাকায় সুযোগে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয় এলাকারই কিছু তৃণমূল সমর্থক।

Advertisement

সিপিএমের অভিযোগ, তাঁরাই বাড়ির দরজা ভেঙে আসবাবপত্র ভাঙচুর, অ্যাসবেস্টসের ছাউনি ভাঙচুর, সোনা লুঠ করেছে। খবর পেয়ে গোলাপবাবুর স্ত্রী-ছুটে এলেও তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে চলে যায় বলেও অভিযোগ। গোটা ঘটনাটি থানায় লিখিত ভাবে জানান গোলাপবাবু।

এ দিনের ঘটনায় এলাকার তৃণমূল নেতা ক্ষীতিশ পড়্যা, কর্মী আমিন ভুঁইয়া, সতনু মিশ্রি, বাবলু মিশ্রি, প্রশান্ত মিশ্রির-সহ ২১ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এলাকায় পৌঁছন এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডল। বসে পুলিশ পিকেট। পরে অভিযুক্ত বাবলু মিশ্রি ও প্রশান্ত মিশ্রিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু সিপিএম নেতার বাড়িতে কেন হামলা? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই সিপিএম-তৃণমূলে গোলমাল রয়েছে। কিন্তু বুধবারের ঘটনার পরে সিপিএমের ওই নেতা এলাকায় না থাকায়, তিনিও বিজেপিকে সমর্থন করছেন বলে তৃণমূল সন্দেহ করেছে বলেই স্থানীয়দের ধারনা।

যদিও, বিজেপিকে সমর্থন করেন না বলেই জানিয়েছেন গোলাপবাবু। সিপিএমের জোনাল সম্পাদক ভবানী গিরি বলেন, “এলাকায় সিপিএম করা যাবে না, এই বার্তা দিতেই সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল।” এলাকার সিপিএম বিধায়ক বিরাম মাণ্ডির কথায়, “সন্ত্রাস কায়েম করতে তৃণমূল দলীয় নেতার বাড়ি লুঠ করেছে।”

ব্লক তৃণমূল সভাপতি জগদীশ দাস বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। কিছু লোক দলের ঝাণ্ডা ধরে দলকে বদনাম করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ওই ঘটনায় প্রকৃত তৃণমূল কর্মীরা জড়িত নয়।” পুলিশকে নিরপেক্ষ তদন্তের আর্জি জানান তিনি।

তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ বলেন, “জঙ্গলমহলে বিজেপি-র কোনও সংগঠনই নেই। ওরা মাওবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অশান্তি পাকাতে চাইছে। এখন বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপি বিড়াল তপস্বী সাজছে।” তাঁর দাবি, ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে জঙ্গলমহলে সিপিএম ও পুলিশি নিগ্রহের শিকার আদিবাসী-মূলবাসীদের পাশে দলের দাঁড়ানোর বিষয়টি নিয়ে অপব্যাখ্যা করছে বিজেপি। জঙ্গলমহলের মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করে এর জবাব দেবেন বলেও তিনি আশাবাদী।

আইনজীবীদের কর্মবিরতি। গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতের আইনজীবীদের কর্মবিরতি অব্যাহত রইল বৃহস্পতিবারও। বিভিন্ন আপিল মামলা গ্রহণ ও মহকুমা আদালতের এক্তিয়ারভুক্ত বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পর্কিত ও গাড়ি দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণের মামলা জেলা আদালতে গ্রহণের দাবি তুলে কর্মবিরতি করছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতের আইনজীবীরা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতে আসেন হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার। তিনি জেলা আদালতের বিচারক ও আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন