বিডিও অফিসে। নিজস্ব চিত্র।
প্রয়োজনীয় কাজে ৩৫-৪০ কিলোমিটার পথ উজিয়ে ঘাটালে মহকুমাশাসকের দফতরে আর যেতে হবে না দাসপুর-২ ব্লকের বাসিন্দাদের। সাধারণ মানুষের হয়রানি কমাতে এ বার ব্লকের সদর দফতর সোনাখালি বিডিও অফিসে বসার জন্য উদ্যোগী হলেন ঘাটালের মহকুমাশাসক রাজনবীর সিংহ কাপুর। এজন্য সপ্তাহে একটি দিনও নির্দিষ্ট হয়েছে। প্রতি সোমবার দফতরের একাধিক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট-সহ বিভিন্ন স্তরের কর্মী ও আধিকারিকদের নিয়ে সোনাখালি বিডিও অফিসে বসছেন মহকুমাশাসক। মহকুমাশাসক রাজনবীর সিংহ কাপুর বলেন, “ঘাটাল মহকুমার অন্তর্গত পাঁচটি ব্লকের মধ্যে সোনাখালি বিডিও অফিসটি রাজ্য সড়ক থেকে অনেক দূরে। তাছাড়াও ঘাটাল থেকে ওই ব্লকের এক একটি গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৩৫-৪০ কিলোমিটার। কোনও কাজের জন্য ওই সব গ্রামের লোকেদের বহু দূর থেকে ঘাটালে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে আসতে হয়। সাধারণ মানুষের ঝক্কি কমাতেই আমি সপ্তাহে একদিন বিডিও অফিসে যেতে শুরু করেছি।”
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, জাতিগত শংসাপত্র আদায় বা কোনও অভিযোগ জানাতে ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তের বহু লোক মহকুমাশাসকের দফতরে আসেন। অনেকক্ষেত্রে মহকুমাশাসক দফতরে না থাকলে তাঁদের ফিরে যেতে হয়। তাছাড়াও জমি সংক্রান্ত নানা কাজেও মহকুমাশাসকের কাছে যাওয়ার দরকার হয়। ঘাটাল মহকুমার দাসপুর-২ ব্লক বাদে বাকি চারটি ব্লক অফিসই প্রধান সড়কের ধারে রয়েছে। হাওড়া, হুগলি ও পূর্ব মেদিনীপুরের সীমানা দাসপুর-২ ব্লক লাগোয়া। মহকুমার অন্য ব্লকের তুলনায় দুর্গম দাসপুর-২ ব্লকের গ্রামের অনেক রাস্তাই যান চলাচলের অযোগ্য। ব্লকের অনেক রাস্তা খারাপ হওয়ার জন্য মাঝে-মধ্যেই অটো ও ট্রেকার পরিষেবাও বন্ধ থাকে। ফলে প্রয়োজনে ঘাটালে মহকুমাশাসকের অফিসে যেতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি সোমবার সকাল ১১টা থেকে সোনাখালি বিডিও অফিসে মহকুমাশাসক স্থানীয় বাসিন্দাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনবেন। ফলে সমস্যা সমাধানে তিনি দ্রুত প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিতে পারবেন। ব্লকের বাসিন্দারা প্রয়োজনীয় শংসাপত্রও এ বার বিডিও অফিস থেকে পেয়ে যাবেন। এজন্য প্রচারও শুরু হয়েছে। মাস দু’য়েক আগে ঘাটালে মহকুমা শাসক হিসাবে যোগ দেন আইএএস রাজনবীর সিংহ কাপুর। উল্লেখ্য, ২৬ বছর বাদে ঘাটালে কোনও আইএএস অফিসার ঘাটালে মহকুমাশাসক হিসেবে যোগ দিলেন।
একইসঙ্গে ঘাটালে মহকুমাশাসকের দফতর চত্বর সংস্কার করতেও উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। সব সাবালিকা যাতে ভোটার তালিকায় নাম তোলে সেজন্য বিভিন্ন স্কুল-কলেজে ক্যাম্প করা হচ্ছে। পাশাপাশি অল্প খরচে মহকুমার যুবক-যুবতীদের আইএএস, বিসিএস, আইপিএস-সহ নানা সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতেও উদ্যোগী হয়েছেন মহকুমাশাসক।