হুদহুদের দিনেই ঘূর্ণিঝড়, ক্ষতিগ্রস্ত কাঁথি-এগরার গ্রাম

হুদহুদের জেরে রবিবার দিনভর তেমন কোনও বিপর্যয় ঘটেনি পূর্ব মেদিনীপুরে। তবে রাতের দিকে জেলার কয়েকটি এলাকা মিনিট খানেকের জন্য বয়ে যায় ঘিূর্ণঝড়। কাঁথি-৩ ব্লকের ভাজাচাউলি অঞ্চলের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এগরা, খড়্গপুর মহকুমা বেশ কিছু এলাকাও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথি-৩ ব্লকের ভাজাচাউলি অঞ্চলে রবিবার রাতে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায় শিখরপাত্র বাড়, কাদুয়া, শিবপুরবেলতলা, কৌশল্যা, ধান্যঘরা ও হাপুয়া-সহ ৬টি গ্রামের উপর দিয়ে। ৫০টির বেশী টালি ও খড়ের চালের বাড়ি ভেঙে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০০
Share:

এগরা-২ ব্লকের পাটনা গ্রামে রবিবার রাতের ঝড়ে উড়ে গিয়েছে বাড়ির টালির ছাউনি।

হুদহুদের জেরে রবিবার দিনভর তেমন কোনও বিপর্যয় ঘটেনি পূর্ব মেদিনীপুরে। তবে রাতের দিকে জেলার কয়েকটি এলাকা মিনিট খানেকের জন্য বয়ে যায় ঘিূর্ণঝড়। কাঁথি-৩ ব্লকের ভাজাচাউলি অঞ্চলের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এগরা, খড়্গপুর মহকুমা বেশ কিছু এলাকাও।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথি-৩ ব্লকের ভাজাচাউলি অঞ্চলে রবিবার রাতে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায় শিখরপাত্র বাড়, কাদুয়া, শিবপুরবেলতলা, কৌশল্যা, ধান্যঘরা ও হাপুয়া-সহ ৬টি গ্রামের উপর দিয়ে। ৫০টির বেশী টালি ও খড়ের চালের বাড়ি ভেঙে পড়ে। এছাড়াও বিদ্যুতের খঁুটি উপড়ে যাওয়ায় সারা এলাকা বিদ্যুত্‌ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। কাঁথি -৩ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ বেজ জানিয়েছেন ঝড়ের প্রভাবে বড় বড় গাছ ভেঙে পড়া ছাড়াও ধান্যঘড়া গ্রামে প্রায় তিন বিঘার একটি কলা বাগান চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেড়শোরও বেশি বাসিন্দা নিরাশ্রয় হয়ে পড়েন। রবিবার রাতে কাঁথি-৩ ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে নিরাশ্রয় মানুষদের স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে সরানো হয়। সোমবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল, উত্তর কাঁথির বিধায়ক বনশ্রী মাইতি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ বেজ ও বিডিও প্রদীপ্ত বিশ্বাস-সহ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান। কাদুয়া গ্রামের স্বপ্নাদেবীর কথায়, “রবিবার রাত আটটা নাগাদ আচমকা একটা শব্দ শুনতে পাই। কিছু বোঝার আগেই বাড়ির চাল উড়ে যায়।” সোমবার সকালে ঝড়ে বিধ্বস্ত গ্রামগুলি পরিদর্শন করে জেলা সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল বলেন, “জেলাশাসক অবিলম্বে দুর্গতদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রিপল ও চাল ত্রাণ হিসেবে বরাদ্দ করার কথা বলেছেন। সেই ব্যবস্থা করাও হয়েছে।”


কাঁথি-৩ ব্লকের ভাজাচাউলির কাদুয়া গ্রামে ঝড়ে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি।

Advertisement

রবিবার সন্ধ্যে সাড়ে ৭টা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে এগরা-২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়। নরাজপুর, শীলামপুর, গঙ্গাঘরবাড়, হাটবৈঁচা ও বাথুয়াড়ি গ্রামে ঝড়ের জেরে উড়ে যায় বাড়ির চাল, ক্ষতি হয় পানের বরজে। ভগবানপুর-১ ব্লকের শিমুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আন্দুলিয়াবাড়, নুনহন্ড, চৈতন্যচক গ্রামে ঝড়ে তছনছ হয়ে যায় বাড়ি, গাছ ভেঙে রাস্তা আটকে যায়, ভেঙে গিয়েছে ইলেকট্রিকের খঁুটিও। টিঞ্যাবেড়িয়ার ঘনশ্যাম বেরা বলেন, “ঝড় ১৫-২০ সেকেণ্ডের বেশি হয়নি। কিন্তু তারই মধ্যে ঝড়ের কী তীব্রতা! গোয়ালঘরের খড় টেনে নিয়ে গিয়ে ফেলেছে ইলেকট্রিকের তারে।” ভগবানপুর-১ ব্লকের বিডিও উমাশঙ্কর দাস বলেন, “ঘটনাস্থলে ব্লক বিপর্যয় আধিকারিককে পাঠানো হয়েছে। তাঁর দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এগরা-২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ের জেরে নানা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জানা গিয়েছে, ঝড়ে ৫টি বাড়ি সম্পূর্ণ ও ৩৫টি বাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এগরার মহকুমাশাসক অসীমকুমার বিশ্বাস বলেন, “মহকুমার কয়েকটি গ্রামে ঝড়ের খবর পেয়ে ব্লক আধিকারিকদের ত্রাণ পাঠানো নির্দেশ দিয়েছি।

অন্য দিকে, রবিবার রাতে খড়্গপুর মহকুমা বেশ কিছু এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের জেরে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে পিংলা ব্লকের ক্ষীরাই ও খড়্গপুর-১ ব্লকের অর্জুনী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত দশটা নাগাদ একটি দমকা হাওয়া পিংলার বলিশ্বরপুরে আছড়ে পড়ে। মিনিট চারেকের ঝড়ের পরে এলাকার বলিশ্বরপুর, ডাটরা ও রামপুরার আংশিক অংশের প্রায় ১২টি বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। শুধু ঘরবাড়ি নয়, এলাকায় বহু গাছ ও ফুলের চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সোমবার ওই এলাকায় গিয়েছিলেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।

কৌশিক মিশ্র ও সোহম গুহর তোলা ছবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন