যাঁকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই অর্থনীতির শিক্ষক অমিত রায় বৃহস্পতিবারও কলেজে এলেন না।
যদিও এ দিন ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ে ক্লাস স্বাভাবিক ভাবেই হয়েছে। তবে অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্রনেতা হেমন্তকুমার দাস এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ চেপে রাখছেন না কলেজ শিক্ষকদের একাংশ। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, কলেজের স্টাফরুমে ঢুকে শিক্ষককে মারধরের পরও যদি অভিযুক্ত ছাত্রের শাস্তি না হয়, তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা বাড়বে।
বৃহস্পতিবার দিনভর হেমন্তকে কলেজে দেখা যায়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিগৃহীত শিক্ষক অমিত রায় কলেজে এলে তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ওই ঘটনায় আর কারা যুক্ত তাঁদের নাম জানার চেষ্টা চলছে। প্রশ্ন উঠছে, বুধবার হেমন্ত কলেজে এসে পরিচালন সমিতির বৈঠকে ক্ষমা চাইলেও তাঁকে গ্রেফতার করা হল না কেন? প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ তদন্ত চলছে বলে জানায়। বৃহস্পতিবার কলেজের টিচার ইন চার্জ লক্ষ্মীকান্ত রায় বলেন, “অমিতবাবুর পাশে আমরা রয়েছি, ভবিষ্যতেও তাঁর পাশে থাকব।” তাঁর বক্তব্য, “এক জন সহকর্মী হিসেবে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য অমিতবাবুকে একাধিক বার ফোন করেছিলাম। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি।”
কলেজের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে টিচার-ইন-চার্জ বলেন, “কলেজে এখন দু’জন নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছে। কলেজের নিজস্ব নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতি মাসে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি শঙ্কর দোলই বলেন, “বুধবারই পরিচালন সমিতির বৈঠকে কলেজ নিয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” এ দিন ফোনে অমিতবাবুও বলেন, “শুক্রবার আমি কলেজে যাব। সকলেই আমার ছাত্র। তাই আমি চাইব, কলেজে শিক্ষার পরিবেশ বজায় থাকুক।” তবে তাঁর দাবি, ওই ঘটনার সুবিচার চাই।
প্রসঙ্গত, ফেসবুকে শাসকদলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় মঙ্গলবার কলেজের স্টাফরুমে ঢুকে অমিতবাবুকে মারধর করে একদল ছাত্র। অভিযোগের আঙুল ওঠে টিএমসিপি-র দিকে। ঘটনার খবর পেয়ে ঘাটাল থানার পুলিশ কলেজে যায়। কলেজেই অমিতবাবু পুলিশের কাছে ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু তার পর থেকে অমিতবাবু কলেজে আসেননি। তাই পুলিশ চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি বলে ঘাটাল থানা সূত্রে জানা গিয়েছে। এরপর বুধবার কলেজ শিক্ষকদের নিয়ে পরিচালন সমিতির বৈঠকে হেমন্ত শিক্ষককে মারধরের ঘটনা নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করায় নতুন বিতর্ক তৈরি হয়। লক্ষ্মীকান্তবাবু দাবি করেন, “কলেজ শিক্ষকদের সম্মতির ভিত্তিতেই হেমন্তকে ক্ষমা চাইতে বলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।” যদিও শিক্ষকদের একাংশের দাবি, তাঁদেরকে জোর করে এই সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য করা হয়েছে।