১৫ জুন তাজপুরের অবৈধ হোটেল ভাঙার নির্দেশ

অনেক আগেই অবৈধ ভাবে তৈরি হওয়া তাজপুরের চারটি হোটেল ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)। সেই সিদ্ধান্তে কলকাতা হাইকোর্টের সম্মতির পরে শনিবারে ডিএসডিএর বৈঠকে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার দিন ঘোষণা করা হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৪ ০১:১৯
Share:

অনেক আগেই অবৈধ ভাবে তৈরি হওয়া তাজপুরের চারটি হোটেল ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)। সেই সিদ্ধান্তে কলকাতা হাইকোর্টের সম্মতির পরে শনিবারে ডিএসডিএর বৈঠকে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার দিন ঘোষণা করা হল। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ১৫ জুন ডিএসডিএ ও রামনগর-১ ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘পাম রিসর্ট ভিলেজ’, ‘নেচারভিউ’, ‘সানরাইজ’ এবং ‘লা-বেলা’ এই চারটি হোটেল ভেঙে দেওয়া হবে।

Advertisement

দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী এ কথা জানিয়ে বলেন, “চারটি হোটেলই প্রশাসনের কোনও রকম অনুমতি না নিয়েই সমুদ্র সৈকতের ধারে অবৈধ ভাবে নির্মাণ কাজ করেছিল। পর্ষদের সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই নোটিশের মাধ্যমে হোটেলগুলিকে জানানো হয়েছে।”

তাজপুরের মনোরম সৈকত, নিরিবিলি পরিবেশ পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণের। ফি-বছরে রাজ্য, এমনকী রাজ্যের বাইরের বহু মানুষ এখানে ছুটি কাটাতে আসেন। কিন্তু, সেই স্বাচ্ছন্দ্যে বাধ সেধেছে সৈকত চত্বরের বেআইনি নির্মাণ। ‘কোস্টাল রেগুলেটিং জোনে’র আওতায় থাকা তাজপুরের তটভূমিতে কোনও ধরনের নির্মাণ বেআইনি। ২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাজপুরে এসে মৌখিক ভাবেও সৈকতে সব ধরনের নির্মাণ কাজের উপরে নিষেধাজ্ঞার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন। অভিযোগ, তারপরেও নানা কারণে দাঁড়ি পড়েনি বেআইনি নির্মাণ তৈরিতে!

Advertisement

যাবতীয় নিয়ম-নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গত বছরে শারদ উত্‌সবের সময়ে পুলিশ-প্রশাসনে নাকের ডগায় চার-চারটি হোটেল অবৈধ ভাবে তৈরি শুরু হয়। গত ২১ অক্টোবর এ নিয়ে আনন্দবাজারে সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ওই দিনই দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের তত্‌কালিন নির্বাহী আধিকারিক সৌমেন পাল ও রামনগর ১ ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক তমোজিত্‌ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। তখন শো-কজ করা হয়েছিল ওই চারটি হোটেলকেই।

এরপরে শো-কজের জবাব দেয় হোটেলের কর্তৃপক্ষেরা। কিন্তু, সেই তথ্যপ্রমাণ যথেষ্ট না হওয়ায় তা সন্তুষ্ট করতে পারেনি পর্ষদকে। এর পরেই হোটেলগুলিকে বেআইনি ঘোষণা করে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় পর্ষদ। এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে ওই দু’টি হোটেলের কর্তৃপক্ষেরা। কিন্তু বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার জানুয়ারি মাসে পর্ষদের সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন। সেই প্রেক্ষিতেই ভোট মেটার পরে বৈঠকে বসে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার দিন ঘোষণা করে ডিএসডিএ।

শনিবার ডিএসডিএ-র বৈঠকে বেআইনি হোটেল ভেঙে ফেলার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছাড়াও নানা উন্নয়ন মূলক বিষয় কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে শিশিরবাবু ছাড়াও জেলা সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল, বিধায়ক অখিল গিরি, অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রশান্ত অধিকারী ও পর্ষদের নির্বাহী আধিকারিক সুজন দত্ত উপস্থিত ছিলেন। শিশিরবাবু জানান, শুধু তাজপুরেই নয়, দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের এলাকাধীন দিঘা, মান্দারমণি ও শঙ্করপুরেও আগামী দিনে কোনও অবৈধ নির্মাণ বরদাস্ত করা হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন