২৭ ফেব্রুয়ারি সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক বাতিল

লক্ষ্মণ-কাণ্ডে জেলা নেতৃত্বের কোর্টেই বল ঠেলেছে আলিমুদ্দিন। এই পরিস্থিতিতে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক বৈঠক ডাকা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৭:২৫
Share:

লক্ষ্মণ-কাণ্ডে জেলা নেতৃত্বের কোর্টেই বল ঠেলেছে আলিমুদ্দিন। এই পরিস্থিতিতে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক বৈঠক ডাকা হয়েছিল। দলীয় সূত্রে খবর, আপাতত তা বাতিল হয়ে গিয়েছে। ঠিক ছিল, লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে তদন্তে আসা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তিন সদস্যের হেনস্থার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গড়া হবে ওই বৈঠকে।

Advertisement

দলের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক প্রশান্ত প্রধান বলেন, “দলের রাজ্য নেতৃত্বের পরামর্শ অনুযায়ী আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক বাতিল করা হয়েছে।’’ সিপিএম সূত্রে খবর, তমলুকে তদন্তে আসা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের হেনস্থার ঘটনায় লক্ষ্মণ শেঠের অনুগামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও তাঁর বিরুদ্ধে এখনই কড়া ব্যবস্থা না নেওয়ার অবস্থান নেওয়া হয় রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে। তারপরই ২৭ ফেব্রুয়ারির জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক বাতিল করা হয়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর ওই বৈঠকে জেলার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব ও দীপক সরকারের উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু ১৮ ফেব্রুয়ারি তমলুকে এসে রবীনবাবু-সহ তিন জন যে ভাবে লক্ষ্মণ-অনুগামীদের হাতে হেনস্থা হয়েছেন, তাতে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকেও অপ্রীতিকর কিছু ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। ফের বিক্ষোভ হলে লোকসভা নির্বাচনের আগে দলকে আরও বিড়াম্বনায় পড়তে হবে। তাই লক্ষ্মণ-কাণ্ডে যেমন ধীরে চলো নীতি নেওয়া হয়েছে, তেমনই বাতিল করা হয়েছে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক।

শুধু বৈঠক নয় আগামী ৩ মার্চ দলের জেলা কমিটির সদস্যদের পার্টি সদস্যপদ নবীকরণের জন্য যে বৈঠক হওয়ার কথা তাও বাতিল বলে সিপিএম সূত্রে জানানো হয়েছে। দু’টি বৈঠকেরই পরবর্তী দিন এখনও স্থির হয়নি।

Advertisement

দলের প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি দলের রাজ্য কমিটির তরফে তদন্ত কমিটি গড়া হয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত রবীন দেব ও তদন্ত কমিটির দুই সদস্য নৃপেন চৌধুরী এবং মৃদুল দে তমলুকে সিপিএম জেলা কার্যালয়ে এসে লক্ষ্মণ অনুগামীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। কার্যালয়ে ঢোকার আগেই তাঁদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ-হেনস্থা চলে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক প্রশান্ত প্রধানের সঙ্গে জেলা সম্পাদক কানু সাউয়ের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। ওই দিনের ঘটনা নিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক প্রশান্ত প্রধান রাজ্য নেতৃত্বকে রিপোর্ট জমা দেন। তার বিরোধিতা করেন লক্ষ্মণ ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কানুবাবু। এরপর রাজ্য নেতৃত্ব ১৮ তারিখের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা নেতৃত্বকে তদন্ত কমিটি গড়তে বলে। সে জন্যই ২৭ তারিখ বৈঠক ডাকা হয়েছিল। এই বৈঠক ডাকা নিয়েও প্রশান্তবাবু ও কানুবাবুর মধ্যে বিরোধ বাধে। প্রশান্তবাবু দাবি করেন, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে তিনিই বৈঠক ডাকছেন। আর কানুবাবুর দাবি ছিল, জেলা সম্পাদক হিসেবে তিনি বৈঠক ডেকেছেন।

রবিবার কলকাতার রবীন্দ্র সদনে সিপিএম নেতা রেজ্জাক মোল্লার ডাকে ‘সামাজিক অধিকার মঞ্চে’র অনুষ্ঠানে গিয়ে নাম না করে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে বিঁধেছেন সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে আজ, মঙ্গলবার লক্ষ্মণবাবু তমলুক আদালতে হাজির হওয়ার কথা। নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় আজ চার্জগঠনের দিন ধার্য রয়েছে। এই অবস্থায় লক্ষ্মণবাবু ফের দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন কিনা সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন